নাগরিকত্ব বাতিল করা হল তেলাঙ্গানার তিনবারের বিধায়কের
তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির বিধায়ক চেন্নামানেনি রমেশের এ দেশের নাগরিকত্ত্ব বাতিল করা হল। জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে তিনি জার্মান পাসপোর্টের অধিকারি হন। কিন্তু সেই সময় তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ত্ব পাওয়ার নির্ধারিত নিয়মাবলী পূরণ করেননি।

এই নির্দেশ জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট সচিব, যিনি এ বিষয় সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষ। ১৩ পাতার আদেশে বলা হয়েছে, '১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ত্ব আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী রমেশ চেন্নামানেনি ভারতের নাগরিক হতে পারেননি।’ নতুনভাবে গড়ে ওঠা ভেমুলাওয়াড়া বিধানসভার রাজান্না সিরিসিলা জেলার তিনবারের বিধায়ক রমেশ। তিনি আবার মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন রাজ্যপাল সিএইচ বিদ্যাসাগর রাওয়ের ভাইপো। রমেশের বাবা ছিলেন প্রয়াত সিএইচ রাজেশ্বর রাও, যিনি একজন বরিষ্ঠ কমিউনিস্ট নেতা এবং পাঁচবারের বিধায়ক ছিলেন। যিনি পরে তেলেগু দেশম পার্টির কাছে হেরে যান। ১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে তিনি কর্মসূত্রে জার্মানি পাড়ি দেন এবং ১৯৯৩ সালে তিনি জার্মান নাগরিকত্ত্ব প্রাপ্ত করেন। তিনি তাঁর ভারতীয় পাসপোর্ট সেই সময়ই জমা দিয়ে দেন। এরপর ২০০৮ সালে রমেশ ভারতে ফিরে আসেন এবং ভারতীয় নাগরিকত্ত্বের জন্য আবেদন জানান। যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মঞ্জুর করে। ২০০৯ সালে তিনি ভেমুলাওয়াড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়েন।
ভারতীয় নাগরিকত্ত্বের নিয়ম অনুযায়ী, দেশের নাগরিকত্ত্বের আবেদন করার আগে তাঁকে কমপক্ষে ১২ মাস এই দেশে থাকতে হবে। কিন্তু রমেশের বিপক্ষে দাঁড়ানো প্রার্থী ও স্থানীয় নেতা আদি শ্রীনিবাস অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানান যে, রমেশের কাছে এখনও জার্মান পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি নাগরিকত্ত্ব পাওয়ার আগেই ১২ মাসের মধ্যেই তিনি জার্মান গিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গঠন করা কমিটি এই সমাধানে আসে যে রমেশ ভারতীয় নাগরিকত্ত্বের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন এবং দেশের সরকারের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ১২ মাসের মধ্যে তাঁর দেশ ছেড়ে বিদেশে যাওয়া, মন্ত্রকের নজরে গুরুতর অপরাধ। ২০১৭ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রমেশের নাগরিকত্ত্ব বাতিল করে দেয়। কিন্তু তিনি পুর্নবিবেচনার আর্জি জানান হাইকোর্টে এবং স্বরাষ্ট্র নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ নিয়ে আসেন। এর পাশাপাশি তিনি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ফের একই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়েন এবং জয়ী হন।
চলতি বছরের জুলাইয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট বিষয়টি আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তদন্তের পর বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আবার তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করে আদেশ জারি করে। নাগরিকত্ব বাতিল করার আদেশের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রমেশ জানান যে তিনি আবারও হাইকোর্টে বিচার চাইতে যাবেন। তিনি বলেন, 'আমি ক্লিন চিট না পাওয়া পর্যন্ত আমার আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।’
দেশে বেকারত্ব মহামারীর আকার নিয়েছে বিজেপি আমলে, কেন্দ্রকে বিঁধলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী