বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াতে কোমর বেঁধে নামল কেন্দ্র
লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে প্রচারে গিয়ে বারবার তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়েই ছাড়বেন। সেই কথা মোতাবেক, ক্ষমতায় এসেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে একটি আলাদা সেল তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এদের কাজ হবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করে তাড়ানোর ব্যবস্থা করা। আর শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, অসম থেকে শুরু হবে কাজ। তার পর ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ।
ঠিক হয়েছে, অসমে বসবাসকারী বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নতুন করে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন্স তৈরি করা হবে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগে যারা এ দেশে এসেছে, তাদের চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু এর পরবর্তী সময়ে আসা অনুপ্রবেশকারীদের খেদিয়ে দেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, রাতারাতি এই কাজ অবশ্য হবে না। অসমে সব নাগরিককে একটি ফর্ম দেওয়া হবে। সেই ফর্ম পূরণ করার পর তা সরকারি দফতরে জমা দিতে হবে। ১৯৭১ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হবে। এর ভিত্তিতে গড়ে উঠবে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি। মোদী সরকার ইতিমধ্যে অসমকে ২৬০ কোটি দিয়েও দিয়েছে এর সম্ভাব্য খরচ বাবদ। মজার ব্যাপার হল, অসমের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ নিজেও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর পক্ষে। কেন্দ্রের নির্দেশ আসার পর রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি। অসমের কামরূপ ও বরপেটা জেলা থেকে শুরু হবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার কাজ।
দ্বিতীয় দফায় ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার কাজ শুরু হবে। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলি তো বটেই, হুগলী, বর্ধমান, বীরভূম ইত্যাদি জায়গাতেও অনুপ্রবেশকারীরা বসত তৈরি করে ফেলেছে। এ ব্যাপারে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেছেন, "যারা বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে এসেছে, তারা শরণার্থী। তাদের সুরক্ষা দেবে ভারত সরকার। কিন্তু শুধু রোজগারের ধান্দায় যারা এখানে এসে এখানকার ছেলেমেয়েদের অন্ন কাড়ছে, তারা অনুপ্রবেশকারী। পুলিশের কাছে সব খবর থাকে।" রাহুলবাবুর ব্যাখ্যা, এ কাজে সময় লাগে লাগুক, কিন্তু বেছে বেছে চিহ্নিত করা হোক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের।
কেন্দ্রের বক্তব্য, এই মুহূর্তে অসম, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে অন্তত ছ'কোটি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে কিছু কিছু জায়গায় জনবিন্যাসই পাল্টে গিয়েছে এদের জন্য।