ওমিক্রন ঠেকাতে বুস্টার ডোজের ভাবনা কেন্দ্রীয় সরকারের, শুরু হল গবেষণা
ওমিক্রন ঠেকাতে বুস্টার ডোজের ভাবনা কেন্দ্রীয় সরকারের, শুরু হল গবেষণা
করোনার করাল থাবার প্রকোপ কাটিয়ে সবে মাত্র ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল গোটা বিশ্ব। আর তারই মাঝে শিয়রে শমন নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাস যার পোশাকি নাম ওমিক্রন। বিশ্ব জুড়ে এই মুহূর্তে ত্রাস সৃষ্টি করছে সার্স কোভ-২ জাতির এই ভাইরাস। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা করোনার আগের প্রজাতি ডেল্টার থেকেও বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই নয়া ভেরিয়েন্ট। আর অমিকেওন ঠেকাতে এবার ঘুম উড়েছে আক্রান্ত দেশগুলির। বিশ্বে এই মুহূর্তে ৯৫টি দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। যে তালিকায় সামিল রয়েছে ভারতও। আর এবার ওমিক্রনের দাপট থামাতে অন্য পথে চিন্তা শুরু করল কেন্দ্রীয় সরকার।
ওমিক্রন ঠেকাতে বুস্টার ডোজের ভাবনা
ভারতে লাগাতার খবর সামনে আসছে অমক্রনে আক্রান্ত হওয়ার। ওমিক্রন কেস বাড়তে থাকায় বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখতে অধ্যয়ন শুরু করেছে কেন্দ্র। ভারতে কোভিড ঠেকাতে সত্যিই বুস্টার ডোজগুলির প্রয়োজনীয়তা কতটা তা দেখতে গবেষণা শুরু করা হল। মূলত এটি একটি একাডেমিক অধ্যয়ন, যেখানে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির এবং টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে দেহের কোষের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতার পরিমান দেখা হবে। সেই সঙ্গে দেখা হবে বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা দেখা হবে।
কীভাবে হবে গবেষণা
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা গোটা সমীক্ষাটি চারটি আলাদা আলাদা দলের মানুষকে পর্যবেক্ষণ করে করতে চলেছেন। যেখানে ৪০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরা, ৪০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিরা, টিকা দেওয়ার আগে কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি এবং করোনা টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের উপর সমীক্ষা চালানো হবে। মূলত করোনা টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পর দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি ওমিক্রন ঠেকাতে কতটা সক্ষম তা নিয়ে চলবে পরীক্ষা।
কারা করতে চলেছেন এই পরীক্ষা
ভারতের বায়োটেকনোলজির প্রিমিয়ার ইনস্টিটিউট ট্রান্সলেশনাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট বা টিএইচএসটিআই-এর নেতৃত্বে হতে চলেছে এই গবেষণামূলক পরীক্ষা। এই গবেষণায় মাল্টি-সেন্টার স্টাডির লক্ষ্য়ে ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে চলবে বিশেষ পর্যবেক্ষণ। যে সব ব্যক্তিরা ছয় মাস আগে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন মূলত তাঁদের দেহে করোনা প্রতিরোধের ক্ষমতা কতটা সে বিষয়ে পরীক্ষা চালাবেন গবেষকরা। এই পরীক্ষার সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে জানা যাবে যে ভারতে ওমিক্রন ঠেকাতে বুস্টার ডোজের প্রয়োজন আছে কিনা। ইতিমধ্যে দিল্লি-এনসিআর, গুরুগ্রাম এবং ফরিদাবাদ থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করছেন বিজ্ঞানীরা।
ভারতে করোনা টিকা
এই মুহূর্তে ভারতে তিনটি করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে। কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন এবং স্পুটনিক ভি। এই টিকাগুলি ওমিক্রন ঠেকাতে ঠিক কতটা কার্যকর বা আদৌ এগুলি ওমিক্রন ঠেকাতে পর্যাপ্ত কিনা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এই সমীক্ষা এবং টিকা নেওয়ার পর দেহে কতটা শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে জানা যাবে বুস্টার ডোজের প্রয়োজন আছে কিনা।
প্রসঙ্গত, ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা 'সেরাম ইন্সটিটিউট' বুস্টার ডোজ আনার অনুমতি চেয়ে আর্জি জানিয়েছিল ড্রাগ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিটিসিআই-এর কাছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত বুস্টার ডোজ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। মোদী সরকার নিযুক্ত জাতীয় টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন শীঘ্রই এই বিষয়ে একটি বৈঠক করতে চলেছে বলে খবর।