ভুয়ো বা বিভ্রান্তিকর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, কড়া বার্তা দিল কেন্দ্র সরকার
ভুয়ো বা বিভ্রান্তিকর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, কড়া বার্তা দিল কেন্দ্র সরকার
টিকটক, হেলো ও ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের (মেইটি) পক্ষ থেকে সতর্ক করে জানানো হল যে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে সরকারের প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে ও বিভ্রান্তিকর ভুয়ো বার্তা যেন না ছড়ানো হয়।
করোনা ভাইরাসের প্রচেষ্টা নিয়ে সরকার বিরুদ্ধ মেসেজ
সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিও এ ধরনের ভুয়ো তথ্য আপলোডকারীদের বিশদ সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে যা প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে ভাগ করা যায়। এক সূত্রের খবর, ‘মেইটি জানিয়েছে যে বড় অংশের ভুয়ো/ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অডিও ও ভিডিও ক্লিপস টিকটক, হেলো ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে। এ ধরনের ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর খবরের জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে ও অন্যভাবে ক্ষতি হচ্ছে।' মন্ত্রকের পৃথক এক যোগাযোগের মাধ্যম সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলিকে এই জাতীয় বিষয়বস্তু অপসারণ করতে বলেছিল কারণ এটি করোনা ভাইরাস বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সরকারী প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্টও এই বিষয়বস্তুটি নিয়ে এ বছরের ৩১ শে মার্চ শুনানি করবে বলে জানিয়েছে। সূত্রের খবর, ‘এই মন্ত্রক জানিয়েছে যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকারের প্রচেষ্টাকে দুর্বল করার জন্যই এই জাতীয় ভুয়ো খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে।'
ভারত ও বিদেশ উভয় জায়গাতেই তৈরি হয়েছে ভিডিও
সত্যতা যাচাইয়ের আইটি ফার্ম ভয়গার ইনফোসেক তদন্তের পরই মেইটি এই বিষয়ে নড়েচড়ে বসে। এই সংস্থাটি লক্ষ্য করে দেখে যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের নিরাপদ বিষয়গুলির বিপক্ষে ভারতের মুসলিমদের বোঝানোর জন্য টিকটক, ইউটিউব ও টুইটারে বহু অডিও-ভিডিও ক্লিপ তৈরি করা হয়েছে। এই ফার্ম এও লক্ষ্য করেছে যে এই ভিডিওগুলি ভারত ও বিদেশ উভয় জায়গাতেই শুট করা হয়েছে এবং চিনা মোবাইল অ্যাপ টিকটকে তা পোস্ট করা হয়েছে। এইসব ভিডিওতে স্বাস্থ্য পরামর্শদাতাদের বিরুদ্ধে করোনা ভাইরাস এবং ধর্মীয় প্ররোচনা সম্পর্কে ভুয়ো তথ্য রয়েছে। ওই ফার্মের রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, ‘এই ভিডিওগুলি হোয়াটস অ্যাপ, টুইটার ও ফেসবুকেও শেয়ার করা হয়েছ।'
পাঁচদিনে যাচাই ৩০ হাজার ভিডিও
ভয়গার ফার্মের তৈরি করা এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে ভারতের সাইবার ক্রাইম সমন্বয় কেন্দ্রকে। এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে মাত্র পাঁচদিনে ৩০ হাজারের বেশি ভিডিও যাচাই করা হয়েছে। রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে এই ভিডিওগুলি তৈরি হয়েছে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারস দিয়ে এবং এটি আপলোড করা হয়েছে আসল অ্যাকাউন্ট দিয়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ছড়ানোর পর অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ‘মেইটি সোশ্যাল মিডিয়ার সংস্থাগুলিকে জানিয়েছে যে প্রত্যেকের মেসেজগুলির ওপর কাছ থেকে নজর রাখতে। যাতে অডিও ও ভিডিও মেসেজগুলি যা সঙ্গে সঙ্গে সনাক্ত করে দ্রুত মুছে দেওয়া সম্ভব।' মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছে যে এই ভুয়ো মেসেজগুলি যাতে কোনওভাবেই ভাইরাল না হয়ে যায় এবং যারা এটা আপলোড করছে তাদের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে বলা হয়েছে।
সরকারের পাশে সোশ্যাল মিডিয়া
টিকটক এ প্রসঙ্গে বলেছে, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি এবং আমাদের প্ল্যাটফর্মে কোভিড-১৯ নিয়ে সরকারের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে যদি কোনও ভিডিও আসে তা আমরা সরিয়ে দিচ্ছি দ্রুত। সরকারের পাশে রয়েছি আমরা।' তবে ফেসবুকের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।