সোশ্যাল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের রূপরেখা তৈরি, ফেসবুক-টুইটারকে কোন বার্তা কেন্দ্রের
ভারতে এসে ব্যবসা করতে স্বাগত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে। তবে সমান ক্ষেত্র প্রয়োজন ছিল সরকারেরও। এদিন কেন্দ্রের তরফে নয়া অনলাইন আইনের নিয়ম প্রকাশ করার পর এমনই জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। মূলত চলতি বছরের প্রথম থেকে কৃষি আইনের বিরোধিতা নিয়ে যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঝড় উঠেছিল, তা নিয়ে তিতি বিরক্ত কেন্দ্র। তাছাড়া ২০২০ সালের প্রথম দিকেও সিএএ নিয়ে ফেসবুক-টুইটারে এনেক বিতর্কিত জিনিস শেয়ার হওয়ায় উত্তেজনা বেড়েছিল দিল্লিতে।
অভিযোগ নিরসনের ব্যবস্থা
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মের জন্য অভিযোগ নিরসনের ব্যবস্থা রাখা আবশ্যক, একদিনের মধ্যেই প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মকে অভিযোগ আধিকারিক নিয়োগ করতে হবে। অভিযোগ জমা পড়লে, ১৫ দিনের মধ্যে তা মেটাতে হবে। তবে সেই অভিযোগ জমা পড়লে ২৪-ঘণ্টার মধ্যে ওই বিতর্কিত পোস্ট সরিয়ে ফেলতে হবে।
কী ধরনের বিষয়বস্তু তুলে ধরা হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়?
কীভাবে ডিজিটাল প্ল্য়াটফর্মে খবর পোস্ট করার ব্য়বস্থাপনা করতে হবে, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্য়াটফর্মে কী ধরনের বিষয়বস্তু তুলে ধরা হবে এবং সেক্ষেত্রে সরকার কীভাবে গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করবে, তাই-ই বাতলে দেওয়া হয়েছে তথ্যপ্রযুক্ত বিধি ২০২১-এ৷
ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং একতা রক্ষার্থে
নয়া নির্দেশিকা মোতাবেক, এবার থেকে সোশ্যাল এবং ডিজিটাল প্ল্য়াটফর্মেও কঠোর নজরদারি চালানো হবে৷ এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রক৷ এমনকি, কোনও খবর, পোস্ট বা অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু যদি 'ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং একতা' বা জাতীয় সুরক্ষার পরিপন্থী হয়, তবে তা অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে৷
ভারতে বসবাসকারীদের আধিকারিক পদে নিয়োগ করতে হবে
নয়া বিধি মানতে হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে ভারতে বসবাসকারীদের আধিকারিক পদে নিয়োগ করতে হবে৷ ইন্টারনেট ব্য়বহারকারী কোনও ব্য়ক্তির লেখা বা পোস্ট যদি তারা মুছে ফেলতে চায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্য়ক্তিকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে এবং তাঁর কথাও শুনতে হবে৷
কী বললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর
রবিশংকর জানান, এবার থেকে কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলে, কে বা কারা তা ঘটিয়েছেন, তা খুঁজে বের করাও সহজ হবে৷ কারণ, যে ডিভাইস বা প্রোফাইল থেকে প্রথম বিষয়টি পোস্ট করা হয়েছে, সেটিকে ট্র্য়াক করার ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ সেক্ষেত্রে ব্য়ক্তির গোপনীয়তা রক্ষার যে নিশ্চয়তা হোয়াটস অ্য়াপের মতো সংস্থা দেয়, তা আর রক্ষিত হবে না৷ সোশ্যাল ও ডিজিটাল প্ল্য়াটফর্মে এই নজরদারি চালাতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রক, বিদেশমন্ত্রক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, তথ্য এবং সম্প্রচারমন্ত্রক, আইনমন্ত্রক এবং নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রকের প্রতিনিধিরা থাকছেন৷
শক্তিশালী কমিটি গঠন
এই কমিটিকে ষথেষ্ট শক্তিশালী হিসাবেই গঠন করা হচ্ছে৷ কমিটির কাছে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা ও অভিযোগ দায়েরের ক্ষমতা থাকছে৷ কমিটি চাইলে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তকে সতর্ক করতে, উপদেশ দিতে, তিরস্কার করতে এবং ক্ষমা চাইতে বাধ্য করতে পারে৷ এমনকি, প্রয়োজনে বিধিভঙ্গের প্রমাণ পেলে পোস্ট বা সম্প্রচারিত হওয়া বিষয়বস্তুর উপর কাঁচি চালানোর ক্ষমতাও তাদের দেওয়া হয়েছে৷ কোনও কনটেন্ট বা বিষয় ব্লক বা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে গোটা প্রক্রিয়াটির মাথায় যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন 'স্বীকৃত আধিকারিক'কেও রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রবিশংকর৷