বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণ বলে কিছু নেই, মোদী সরকারের এই দাবিতে অবাক হবেন
বিয়ের পর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ নয়, দিল্লি হাইকোর্টে হলফনামায় জানাল কেন্দ্র। যদি স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হয়, তাহলে বিয়ে ভিত নড়বড়ে হয়ে যাবে
দম্পতির মধ্যে যৌন সম্পর্ক নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে হলফনামা দিল কেন্দ্র। ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ নয় বলেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে। যদি স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে গণ্য করা হয়, তাহলে বিয়ে নামক সামাজিক অনুষ্ঠানের ভিত নড়বড়ে হয়ে যাবে বলেই মনে করছে কেন্দ্র। একইসঙ্গে এই ঘটনা স্বামীদের হেনস্থা করার পথকে সুগম করবে বলেই হলফনামায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
দাম্পত্যে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিল। এক্ষেত্রে ফৌজদারি অপরাধের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে যেসব পিটিশন পেশ হয়েছে, সে ব্যাপারে কেন্দ্র হলফনামা দিয়ে এও বলেছে, সুপ্রিম কোর্ট ও বিভিন্ন হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারার (স্ত্রীর ওপর স্বামী, শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন) ক্রমবর্ধমান অপব্যবহারের বিষয়টি উল্লেখ করেছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তাল এবং বিচারপতি হরি শঙ্করের বেঞ্চের কাছে এই হলফনামা দেয় কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় সরকারে স্ট্যান্ডিং কাউন্সেলের মনিকা অরোরার ফাইল করা ওই হলফনামায় কেন্দ্র বলেছে, বৈবাহিক ধর্ষণ যাতে স্বামীদের হেনন্থা করার এবং বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানের ভিত নড়বড়ে করার হাতিয়ার হয়ে না দাঁড়ায়, সেই ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে হবে।
আবেদনকারীদের একজনের হয়ে আইনজীবী কলিন গনসালভেস যুক্তি দেন, বিয়ে স্বামীকে এমন অধিকার দেয়নি যে, তিনি চাহিদামতো স্ত্রীকে যৌন সংসর্গ করতে বাধ্য করতে পারেন। বিয়ে কোনও লাইসেন্স নয়, যার জোরে তিনি ইচ্ছা হলেই স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করতে পারেন, একটি অবিবাহিত মেয়ের নিজের শরীরের ওপর যে অধিকার আছে, একজন বিবাহিত মহিলারও তা আছে। এ প্রসঙ্গে বিদেশের বিভিন্ন আদালতের রায়েরও উল্লেখ করেন তিনি।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় (ধর্ষণ) স্বামীর হাতে মহিলাদের নিগৃহীত হওয়ার ঘটনাকে ব্যতিক্রমী হিসেবে দেখা হয়। সেই যুক্তিতে এই ধারাকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করার একাধিক আবেদনের শুনানি চলছে হাইকোর্টে।
কেন্দ্রের মতে, বিদেশের সঙ্গে ভারতের তুলনা টানা ঠিক হবে না। চরিত্রগত ভাবে এ দেশ আলাদা। কেন্দ্রের মতে এক্ষেত্রে পাশ্চাত্যকে অন্ধ অনুসরণ করা ঠিক হবে না।