বোফর্সকাণ্ডে রাজীবের সঙ্গে জুড়ল পাক যোগ, মার্কিন গোয়েন্দার চাঞ্চল্যকর দাবিতে তোলপাড় রাজনীতি
বোফর্স মামলায় প্রাইভেট ডিটেক্টিভ মাইকেল হার্শম্যানের দেওয়া তথ্য ও পরিস্থিতি নিয়ে তদন্ত করবে সিবিআই। রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার তাঁর তদন্তে বাধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ
বোফর্স মামলায় প্রাইভেট ডিটেক্টিভ মাইকেল হার্শম্যানের দেওয়া তথ্য ও পরিস্থিতি নিয়ে তদন্ত করবে সিবিআই। রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার তাঁর তদন্তে বাধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন হার্শম্যান। মার্কিন বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ফেয়ারফ্যাক্সকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজীব গান্ধীরই মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী ভিপি সিং।
ফেয়ারফ্যাক্সের চেয়ারম্যান হার্শম্যান সম্প্রতি একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, বোফর্স তদন্তে নেমে তিনি একটি সুইস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পান। এই অ্যাকাউন্ট মঁ ব্লাঁ নামে ছিল। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী তা জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন বলে জানিয়েছেন হার্শম্যান। বোফর্স-এর ঘুষের টাকাই সেই অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি হার্শম্যানের।
তাঁর দাবি, ফেয়ারফ্যাক্সের তদন্তে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজীব গান্ধী একটি বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের গঠন করেন। কোন পরিস্থিতিতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ফেয়ারফ্য়াক্সকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয় এই কমিশনকে। তবে তাঁকে বোফর্স মামলায় বেনিয়মের তদন্ত করতে বলা হয়নি বলে দাবি করেছেন হার্শম্যান। এমনকী তিনি সেসময়ে বোফর্সের নামও শোনেননি। হার্শম্যানের দাবি, দেশের টাকা কোথায় যাচ্ছে, তার তদন্ত করতে বলা হয়েছিল তাঁকে।
সাক্ষাৎকারে হার্শম্যানের আরও দাবি করেছেন, লতিফ খান নামে একজন তাঁকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ দিতে চেয়েছিল, এবং সেই টাকা না নিলে প্রাণনাশেরও হুমকি দিয়েছিল। একটি আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কের কর্তা যিনি আবার পাকিস্তানি নাগরিক, একটি বড় ব্রিফকেস নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন বলে ফাঁস করেছেন হার্শম্যান। কিন্তু বোফর্স মামলা এতদিন ধরে টানার অর্থ কী? জবাবে হার্শম্য়ান জানান, এখনও বোফোর্স কেলেঙ্কারিতে জড়িতে কয়েকজন তাবড় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছে, যারা ভয় পাচ্ছেন, তাদের নাম সামনে না চলে আসে।
এদিকে হার্শম্যানের সাক্ষাৎকার নিয়ে কংগ্রেসকে কোনঠাসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানির দাবি, কংগ্রেস অনেকদিন চুপ করে বসেছিল, কিন্তু এবার তাদের জবাব দিতে হবে। বোফর্স মামলায় তখন এবং এখন কংগ্রেসের কোন নেতারা জড়িয়ে তা জানতে চেয়েছেন স্মৃতি ইরানি।
For too long Cong conveniently kept quiet,it's time they answer what's the involvement of Cong leaders then&now in Bofors saga: Smriti Irani pic.twitter.com/TPL7sVPAn3
— ANI (@ANI) October 18, 2017
বুধবার সিবিআই-এর মুখপাত্র অভিষেক দয়াল জানিয়েছেন, হার্শম্যানের সেই সাক্ষাৎকার থেকেই সিবিআই বোফর্স মামলার এই তথ্যগুলি জানতে পেরেছে সিবিআই। সাক্ষাৎকারে যে তথ্য ও পরিস্থিতির কথা হার্শম্যান উল্লেখ করেছেন, সিবিআই সেই বিষয়গুলিকেও তদন্তের আওতায় নিয়ে আসবে। এদিকে বোফর্স মামলায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা করে সাক্ষ্য দেওয়ারও ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন হার্শম্যান।