সিবিআই এখন 'কুকীর্তির আখড়া', বললেন গোপালকৃষ্ণ গান্ধী
মঙ্গলবার এখানে ১৫তম ডি পি কোহলি স্মৃতি বক্তৃতায় ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি। উদ্যোক্তা ছিল সিবিআই নিজেই। সিবিআই ডিরেক্টর রঞ্জিত সিনহা থেকে শুরু করে অন্যান্য বড় কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। অতিথি বক্তা গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এই মঞ্চ থেকেই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে বাক্যবাণ শানান। তিনি বলেন, "সিবিআই কেন্দ্রীয় সরকারের কুড়ুল হয়ে উঠেছে। যখন খুশি যাকে খুশি কোপানো যায়। এদের আর সততার মিতে বলা যায় না। সিবিআইকে এখন বলা হচ্ছে ডিডিটি। ডাইক্লোরো ডাইফিনাইল ট্রাইক্লোরোইথেন নয় কিন্তু। ওটা তো এক ধরনের কীটনাশক। এই ডিডিটি হল ডিপার্টমেন্ট অফ ডার্টি ট্রিক্স বা কুকীর্তির আখড়া। "
উষ্ণ অভ্যর্থনা সত্ত্বেও তিনি সমালোচনা চালিয়ে যেতে ছাড়েননি। আরও বলেন, "সিবিআইয়ের বাড়াবাড়ি নিয়ে আজকাল যুক্তিসঙ্গত সমালোচনা হচ্ছে। বরিষ্ঠ আমলাদের মানসম্মানের কথা না ভেবে অসংবেদনশীলভাবে সিবিআই তাদের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় মামলা সাজাচ্ছে। এমনকী যখন তদন্ত চলছে, তখন মিডিয়াতে অনৈতিকভাবে সব কিছু ফাঁস করে দিয়ে সেই আমলাদের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এটা নিন্দনীয়।"
"সিবিআইকে সততার মিতে বলা যায় না। এরা এখন ডিডিটি বা কুকীর্তির আখড়া"
প্রসঙ্গত, সেবি-র প্রাক্তন প্রধান সি বি ভাবে এবং প্রাক্তন কয়লা সচিব পি সি পারখের বিরুদ্ধে এখন রে-রে করে নেমে পড়েছে সিবিআই। দায়ের করেছে এফআইআরও। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এঁরা নানা বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি বলেই সিবিআইকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই দুই আমলা তাই বলেছেন, তদন্তে দোষী প্রমাণিত না হলে তাঁরা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন। এই বিষয়টিই ইঙ্গিত করেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল।
প্রাক্তন আইএফএস গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর উপদেশ, "সিবিআইকে ক্ষমতাসীন দল হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। কোনও রাজনীতিক দলই এ ক্ষেত্রে সাধু নয়। কিন্তু এমন খামখেয়ালিপনার শিকার হওয়া আপনাদের উচিত নয়। অনৈতিক ব্যাপারস্যাপারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত। জানি, চাকরি চলাকালীন আপনাদের টোপ দেওয়া হয় নানাভাবে। অবসরের পর নানা সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। কিন্তু আপনারা যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন বলে জানছে সারা দেশ, তখন নিজেরা কেন টোপ গিলবেন? আপনারা আইনের অভিভাবক হোন, নিজেরা আইন হয়ে উঠবেন না।"
তথ্যের অধিকার আইনের আওতা থেকে সিবিআইকে বাদ রাখা নিয়ে তিনি বলেন, "আপনাদের জন্য করুণা হচ্ছে। সিবিআই তো দুর্নীতি এবং কিছু সংশ্লিষ্ট অপরাধের তদন্ত করে। এটা কোনও নিরাপত্তা সংস্থা নয়। তা হলে কেন বিশেষ সুবিধা ভোগ করবে সিবিআই?"
কী ভাবছেন এই সমালোচনা নিয়ে? সিবিআই ডিরেক্টর রঞ্জিত সিনহা বলেছেন, "খুবই চমকদার ভাষণ। ইতিবাচক সমালোচনা আমি সব সময় পছন্দ করি। গোপালকৃষ্ণ গান্ধী যা বলেছেন, সেটা ওঁর ব্যক্তিগত মতামত। আমরা এটা ভালো মনেই নিয়েছি।"