ডেঙ্গিতে মৃত্যু শিশু কন্যার, বাবা-র হার না মানা লড়াইয়ের কাহিনি
বাবা-র চলানো লম্বা লড়াই, অবশেষে সুবিচার পাবেন মেয়ের মৃত্যুর
ভারতেই বোধহয় এরকম সম্ভব। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর পর ছ'বছর কেটে গেল।তারপর গ্রেফতার হলেন অভিযুক্তরা। আসলে মনে র জোর থাকলেও তবেই বোধহয় এই লড়াইটা করা সম্ভব ,যা করলেন নয়া দিল্লির বাসিন্দা প্রমোদ কুমার। কন্যার মৃত্যুর পর মন ভেঙে ঘরের কোণে বসে না থেকে চালালেন এক দুদ্ধর্ষ লড়াই।
ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন নয়া দিল্লির বাসিন্দা প্রমোদ কুমার চৌধুরি। ডেঙ্গি হয়েছে তাঁর দশ বছরের শিশু কন্যার। এই বলে চিকিৎসা শুরু করেছিলে নয়া দিল্লি-র এক বেসরকারি হাসপাতাল। সেই সময় শিশুটির প্লেটিলেট কাউন্ট ছিল ২.১ লক্ষ। সেই সময় প্রমোদবাবুকে চিকিৎসক সারিন বলেন তাঁদের সন্তানের ডেঙ্গি হয়েছে। এরপর শিশুটির অবস্থা স্বাভাবিকভাবেই আরও খারপ হয়। তখন তাঁকে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে স্থানান্তিরত করা হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে।
এরপর থেকেই ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ২০১৩ সালে পুলিশ দিল্লি মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে কেসটি রেফার করে। কিন্তু দিল্লি মেডিক্যাল কাউন্সিল জানিয়ে দেয় তারা চিকিৎসকের দিকে কোনও গাফিলতি খুঁজে পাননি।
এরপর প্রমোদ বাবু ২০১৪ সালে ফের একবার মেডিক্য়াল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার দ্বারস্থ হন, কিন্তু সেখানেও একই রিপোর্ট আসে।নিউদিল্লি মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলে কর্মরত প্রমোদ কুমার এরপর হাসপাতালের বিরুদ্ধে বেশি বিল করার অভিযোগ দায়ের করেন।
রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন মৃত শিশুকন্যাকে প্রথমেই ভুল ওযুধ দেওয়া হয়েছে। ভুল চিকিৎসার কারণ দেখিয়ে দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ওই হাসপাতালের বিল আটকে দেয়। এরপর সিটি-র তিশ হাজারি কোর্টে ক্রিমিনাল কেস দাখিল করেন বাবা। সঙ্গে ছিল এএইমস এবং সফরদরজঙ্গ হাসপাতালের চিকিৎসকদের থেকে নেওয়া ডেঙ্গি ও ভাইরাল জ্বরের চিকিৎসা পদ্ধতির বিবরণ।
মৃতার বাবা জানিয়েছেন বিশ্ব সংস্থাকে পাঠানো হয় ওই চিকিৎসার কাগজ , সেখানে দেখা গেছে শিশুটিকে যে ওষুধগুলি দেওয়া হয়েছিল তা নিষিদ্ধ। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি, মূত্রনালী এবং শরীরের আরও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর পথ ধরেই ১৭ তারিখ গ্রেফতার হন শিশু মৃত্যুতে অভিযুক্ত দুই চিকিৎসক।