সিএএ–এনআরসিকে সমর্থন, ভাইরাল হল বাঙালি বিয়ের কার্ড
সিএএ–এনআরসিকে সমর্থন, ভাইরাল বাঙালি বিয়ের কার্ড
সিএএ–এর বিরোধিতায় জ্বলছে রাজধানী দিল্লি। চারিদিকে রব উঠেছে কাগজ না দেখানোর। যদিও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সিএএ–কে সমর্থন করে অনেকেই উল্লেখযোগ্য কিছু কাজ করছেন। মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাটে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে বর নিজের হাতে সিএএ লিখে মেহেন্দি করিয়েছেন আবার বিয়ের আসরে এই আইনকে সমর্থন করে প্ল্যাকার্ড ধরেছেন খোদ নববধূ ও বর। বিয়ের কার্ডেও সিএএ–এনআরসিকে সমর্থন করার নজিরও দেখা গিয়েছে। তবে বাংলায় এই প্রথমবার সিএএ ও এনআরসিকে সমর্থন করে বিয়ের কার্ড তৈরি করা হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
পাত্র–পাত্রী পরিচয়
পাত্র শেখর দুবে ও পাত্রী প্রীতি দাস। দু'জনেই ঝাড়গ্রাম নিবাসী। পেশায় শেখর এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এবং তাঁর হবু স্ত্রী সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। প্রেম করেই এই বিয়ে। এ বছরের ১৩ মার্চ এক হতে চলেছে চারহাত। তারই আয়োজন এখন তুঙ্গে। বিয়ের অনুষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল কার্ড, যেটা দিয়ে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ছেলের বাড়ির দিক দিয়ে সেই কার্ডে পাত্র-পাত্রীর নাম পরিচয় ও বিবাহ বাসরের সঙ্গে আরও এক অভিনব বিষয় লক্ষ্য করা গেল।
বিয়ের কার্ডে এনআরসি–সিএএ–কে সমর্থন
গোটা কার্ডটি সোনালি রঙের ও তার ওপর মেরুন রং দিয়ে বিয়ের সমস্ত দিনক্ষণ, তারিখ সব লেখা রয়েছে। এরই মধ্যে যেটা নজর কাড়ল তা হল, বিয়ের কার্ডের একদম নীচে লেখা রয়েছে, ‘বিয়েতে অনুপ্রবেশকারী নেই, কিন্তু দেশে আছে। তাই দরকার এনআরসি, সিএএ, এনপিআর'। এর অর্থ হল হবু বর শেখর কেন্দ্রের এই তিন বিষয়কে একেবারেই সমর্থন করছেন। এরপর কার্ডের ভেতরেও লেখা রয়েছে, ‘বিয়ে হোক কিংবা বসবাস, সঠিক নথি দেখিয়ে। রেজিস্ট্রেশন কিন্তু মাস্ট, চলুন দেশের পাশে দাঁড়াই, চলুন আমরা কাগজ দেখাই। হ্যাঁ বলুন এনআরপি, সিএএ, এনআরসিকে।' বিয়ের কার্ডের মধ্য দিয়ে সিএএ-এনআরসি ও এনআরপিকে সমর্থনের আর্জি জানিয়েছেন শেখর। তবে হবু বউ প্রীতির বাড়ির পক্ষ থেকে বিয়ের কার্ড সাধারণই।
দেশের পাশে দাঁড়াতেই এ ধরনের বিয়ের কার্ড
এ প্রসঙ্গে পাত্র শেখরের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘যে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান, তা বিয়েই হোক বা পুজো, সেখানে মানুষ মিলিত হয় এবং নিজেদের মত বিনিময় করে। এই মত বিনিময়টা সমাজ গড়তে সাহায্য করে। সমাজের ওপর বিভিন্ন বিষয়ের প্রভাব পড়ে। এটা প্রাচীন সমাজেরই অঙ্গ। তাই কোনও কিছু নিয়ে প্রতিবাদ বা বিরোধিতা করতে হলে সামাজিক মঞ্চকে ব্যবহার করার চেয়ে ভালো উপায় আর কিছু নেই।' শেখর আরও বলেন যে ‘আমার স্কুল থেকে আরম্ভ করে প্রত্যেকটি জায়গাতেই আমাকে আমার পরিচয় দেখাতে হয়েছে। এটাই সভ্য দেশের নিয়ম। ভারত বলে নয়, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে এই নিয়মই আছে যে তোমাকে তোমার পরিচয় বহন করতে হবে। এর মধ্যে অনুপ্রবেশকারী বা ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ এসব কিছু নেই। এর প্রভাব অর্থনীতির ওপর গিয়ে পড়বে। যদি এই ব্যাপারটা তুলে দেওয়া হয় তবে জনসংখ্যার চাপ অর্থনীতির ওপর গিয়ে পড়বে। শরণার্থী আইন না মেনে হঠাৎ হঠাৎ করে দেশে প্রবেশ করা এটার প্রতিরোধ হওয়া দরকার, তাই দেশের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই আমার এই সিদ্ধান্ত।' হবু বউ প্রীতির বিয়ের কার্ডে এ ধরনের কোনও বিষয় নেই। তিনি জানিয়েছেন, দেশের জন্য যেটা ঠিক সেটার পাশেই আছেন তিনি।
ছবি সৌজন্যে ফেসবুক