বুরারি মৃত্যুর ঘটনা সমবেত মানসিক অসংলগ্নতার ফল, মনে করছে পুলিশ ও মনোবিশ্লেষকরা
বুরারির মৃত্যুরহস্যের জট খুলছে ডায়েরির পাতা থেকেই। বুধবার পুলিশ জানালো ডায়েরি থেকে জানা যাচ্ছে পরিবারের কেউ ভাবেননি, তাঁদের মৃত্যু হবে। তারা মনে করেছিল ঈশ্বর তাদের রক্ষা করবেন। পুলিশ ও মনোবিশ্লেষকরা মনে করছেন এটি সম্ভবত একটি 'শেয়ার্ড সাইকোটিক এপিসোড' অর্থাৎ সমবেত মানসিক অসংলগ্নতার ফল।

ডায়েরির নোটই শুধু নয়, ঘটনাস্থলের অবস্থা থেকেও পুলিশ এই ধারণাই পাচ্ছে। তারা জানিয়েছে, কারোর দেহেই কোনও জোর খাটানোর চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ সবাই স্বেচ্ছায় ওই আচারে অংশ নিয়েছিলেন। ডায়েরির নোটেও বলা আছে একে অপরকে সাহায্য করার কথা।
দেহগুলি খুব কাছাকাছি ঝুলছিল, এবং ঘটনাস্থলে মোট পাঁচটি টুল ছিল। এর থেকে পুলিশের অনুমান শুধু হাত পা বাঁধা নয়, গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়তেও তারা একে অপরকে সাহায্য করেছিলেন। পাঁচটি টুলে দশজন উঠে গলায় ফাঁস দিয়ে সম্ভবত টুলগুলি সরিয়ে দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছিল ডায়েরি থেকে তারা মনে করছে এই ক্রিয়া বা আচারের জন্য আগে অনুশীলন করেছিল ভাটিয়ারা। কারণ ডায়েরিতে লেখা ছিল ক্রিয়া শেষ হলে প্রত্যেকে প্রত্যেকের হাত পা বাধন মুক্ত করবে। কিন্তু বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভবত তাঁরা বিশ্বাস করতেন গলায় ফাঁস দিয়ে 'সাধনা' করার পরও তারা প্রাণে বেঁচে যাবেন। অতিপ্রাকৃত শক্তি তাদের রক্ষা করবে। তাই বাধন খোলার কথা বলা হয়েছিল।
নারায়ণ দেবীর মৃত্যুর পর সম্ভবত কেউ তাঁকে ফাঁসমুক্ত করে মাটিতে নামিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করছে পুলিশ। একমাত্র তাঁর দেহই মাটিতে শায়িত ছিল। তবে ক্রিয়ায় তাঁর বেশ বড় ভূমিকা ছিল। ভাটিয়া পরিবার রবিবার রাতে রুটি অর্ডার করেছিলেন। যদি এই ক্রিয়া করারই পরিকল্পনা থাকে তাহলে খাওয়ার আনানো হবে কেন ভেবে ধাঁধায় ছিল পুলিশ। কিন্তু ডায়েরিতেই জানা গিয়েছে এই আচারেরই অংশ ছিল ওই খাওয়ার। ডায়েরিতে বলা আছে নারায়ণ দেবীকে ওই রুটি সকলকে খাইয়ে দিতে হবে।
ডায়েরির এইসহ তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ এই ঘটনায় আর কোনও বাবাজী বা তান্ত্রিকের হাত নেই বলে স্পষ্ট জানিয়েছে। তারা মনোবিশ্লেষকদের পরামর্শ নিয়েছে। মনে করা হচ্ছে পরিবারের সবাই সমবেত মানসিক অসংলগ্নতায় ভুগছিলেন। কিন্তু কিভাবে এর শিকার হয়ে গোটা পরিবারটি শেষ হয়ে গেল তা এখনও রহস্য।