বিজেপির স্লোগান বিএসপির মুখে! ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের আগেই তার প্রধানের পদ নিয়ে টানাটানি
পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে দলের নেত্রী মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সামনে রেখে নির্বাচনে লড়তে চায় বহুজন সমাজ পার্টি। দলের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে।
পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে দলের নেত্রী মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সামনে রেখে নির্বাচনে লড়তে চায় বহুজন সমাজ পার্টি। দলের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। দলের বলা হয়েছে, মা বিদেশিনী হওয়ায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই পদের দাবিদার হতে পারবেন না।
মাঝে মাত্র কয়েকমাস। অলিখিতভাবে সরকারি দল বিজেপি ভোটে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদে তাদের প্রার্থী একজনই। সেই নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখেই নানারকমের ঘুঁটি সাজানো শুরু হয়েছে। অন্য দিকে বিরোধীদলগুলির মধ্যে মাঝেমধ্যে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের জিগির উঠলের বিষয়টি এখনও ফলপ্রসু হয়নি।
একদিকে পশ্চিমবঙ্গে দলের বিভিন্ন প্রচার সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা তাঁর দলের নেতারা নেত্রীকে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন ( ২১ জুলাইয়ের জন্য হওয়া বিভিন্ন সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরছে তৃণমূল) , ঠিক তখনই বিএসপির তরফে মায়াবতীকেও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার কথা জানিয়ে দেওয়া হল। একইসঙ্গে বিএসপি-র দাবি রাহুল গান্ধীর মা বিদেশিনী। সেইজন্য রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী পদে বসার যোগ্য নন।
লোকসভা নির্বাচনের জন্য দলের কর্মপন্থা ঠিক করতে হওয়া বৈঠকে হাজির ছিলেন বিএসপির ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর বীর সিং এবং জয় প্রকাশ সিং। তাঁরা বলেন, মায়াবতীকে দেশের প্রধানমন্ত্রী বানানোর এটাই উপযুক্ত সময়। তিনিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টক্কর দিতে পারেন।
জয়প্রকাশ সিং বলেন, কর্ণাটকে এইচডি কুমারস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন মায়াবতী। তাঁর মতো ভয়হীন নেত্রীই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের রথ আটকাতে পারবেন। বিএসপির এই নেতা আরও বলেন, মায়াবতী শুধুমাত্র দলিত নেত্রীই নন, তিনি সব সম্প্রদায়ের কাছেই গ্রহণযোগ্য।
কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী রাহুল গান্ধী সম্পর্কে বিএসপি নেতা বলেন, রাহুলকে বাবার থেকে মায়ের মতো দেখতে। তাঁর মা বিদেশিনী। সেইজন্য তিনি কখনই প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। একইসঙ্গে এই নেতার দাবি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাহুল গান্ধীর থেকে তাদের দলের নেত্রীর গ্রহণযোগ্যতাও অনেক বেশি। কেননা মায়াবতী একেবারে নিচের থেকে উঠে এসেছেন। এছাড়াও চারবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছেন তিনি।
বিএসপির অপর নেতা আরএস কুশওহা বলেন, এইচডি কুমারস্বামীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেই বিরোধী সবদলই মায়াবতীর পিছনে দাঁড়িয়েছিল। যা তখনই বলে দিয়েছে, মোদী বিরোধী জোটগঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে চলেছেন মায়াবতী।
কংগ্রেসের তরফ থেকে এ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করা হয়েছে।
তবে বিএসপির বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্যসভার সদস্য তথা দলের মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অনিল বালুনি বলেন, যেকেউ প্রধানমন্ত্রীর পদের স্বপ্ন দেখতে পারেন। এমনকী যে দলের একজনও সাংসদ নেই সেই দলও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা বলেন, এক পদ। কিন্তু বিরোধীদের মধ্যে তার দাবিদার অনেক। আর তাদের দলে দাবিদার একজনই। নরেন্দ্র মোদী।
তবে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল ছড়িয়ে পড়তেই বিএসপি নেতা জয়প্রকাশ সিংকে দলের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটরের পর থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তবে রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, মায়াবতীর মতই বলেছিলেন জয়প্রকাশ সিং। তাকে সরিয়ে আপাতত বিতর্ক ধামাচাপা দিলেন মায়াবতী।