দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন ২০২০: 'জঙ্গি' থেকে 'দিল্লির পুত্র কেজরিওয়াল', তৃতীয়বার ক্ষমতাসীন আপ
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন ২০২০: 'জঙ্গি' থেকে 'দিল্লির পুত্র কেজরিওয়াল', তৃতীয়বার ক্ষমতাসীন আপ
গত কয়েক সপ্তাহে ভোট যুদ্ধের ময়দানে বহু তকমাই পেয়েছেন আম আদমি সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু শত জঙ্গি তকমাতেও কাজ হল না। দিল্লিবাসী প্রমাণ করে দিল কেজরিওয়ালই দিল্লির সন্তান। ভোটবাক্সেই জবাব দিল সব সমালোচনার।
কেজরিওয়ালকে জঙ্গি তকমা
ভোট প্রচারে ধর্মের ভেদাভেদের রাজনীতিকেই প্রাধান্য দিয়েছিল বিজেপি। তাই প্রথম থেকেই শাহিনবাগের সিএএ বিরোধী আন্দোলনকে টার্গেট করেছিল বিজেপি নেতারা। অনুরাগ ঠাকুরের বিশ্বাস ঘাতকদের গুলি করে মারার- বার্তা থেকে কপিল মিশ্রর ১১ তারিখ ভারত পাকিস্তানের লড়াই হবে। এমন একাধিক মন্তব্যে বারবার টার্গেট করা হয়েছে বিজেপিকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর পর্যন্ত কেজরিওয়ালকে জঙ্গি বলে আক্রমণ শানিয়েছেন। শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের কেজরিওয়াল বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছেন বলে একের পর এক বিজেপি নেতা অভিযোগ করেছেন।
অমিত শাহের আক্রমণ
দিল্লিতে প্রচারে এসে অমিত শাহ বলেছিলেন ৮ ফেব্রুয়ারি ইভিএমের বোতাম এতোটাই জোরে টিপবেন যে তার কারেন্ট শাহিনবাগ পর্যন্ত পৌঁছয়। সেই কারেন্টে শাহিনবাগের আন্দোলনকারীরা উঠে চলে যাবেন। ধর্মের জিগির তুলতে কোনও কসুর করেননি অমিত শাহরা। ৮১.৮৬ শতাংশ হিন্দুর বসবাস দিল্লিতে। তাই বিজেপি ভেবেছিল হিন্দুত্বের জিগিরের কাছে মাটিতে মিশে যাবে কেজরিওয়ালের মহল্লা ক্লিনিক, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং জল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি। তাই মনোজ তিওয়ারি ঘোষণা করেছিেলন বিেজপি ক্ষমতায় এলে আপ সরকারের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি সুবিধা দেবেন।
হিন্দুত্বকে ছাপিয়ে গেল ব্র্যান্ড কেজরিওয়াল
আম আদমি পার্টি যে আম আদমিদের জন্যই সেটা দিল্লিবাসীর মননে গেঁথে দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাই আপের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকলেও কেজরিওয়ালকে দেখেই আপকে বেছে নিয়েছেন দিল্লিবাসী। বিজেপির হিন্দুত্ববাজের পরাজয় হয়েছে এখানেই। আম আদমির জন্য চিন্তা যে একমাত্র আম আদমি পার্টিই করতে পারে সেটা বুঝতে পেরেছিলেন দিল্লিত ৮১.৬৯ শতাংশ হিন্দুও। এখানেই ব্র্যান্ড কেজরিওয়ালের জয়। সেই ভরসাতেই ভোটের ঠিক দু'দিন আগে কেজরিওয়াল অমিত শাহকে প্রকাশ্যে বিতর্কে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। দিল্লি বাসী কেন বিেজপিকে ভোট দেবে তার কারণ নিয়ে বিতর্কে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন কেজরিওয়াল।
সিএএ, এনপিআর ইস্যু করা চরম ভুল বিজেপি
লোকসভায় সিএএ বিরোধিতায় ভোট দিয়েছিল আপ। আর সেটাকেই হাতিয়ার করেছিল বিজেপি। সিএএ আর এনপিআরকে হাতিয়ার করেই ভোট বৈতরণী পাড় করতে চেয়েছিলেন অমিত শাহরা। সেকারণেই ভোট প্রচারে গিয়েছে মোদী, অমিত শাহ থেকে যোগী আদিত্যনাথ, অনুরাগ ঠাকুর সকলের বক্তব্যেই বারবার জায়গা করে নিয়েছিল শাহিন বাগের সিএএ বিরোধী আন্দোলন। আর এটাই আম আদমি মেনে নিয়ে পারেনি। বিজেপি বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিলেন তাঁরা। জেএনইউ েথকে জামিয়ার ছাত্রদের উপর আন্দোলন দমনের নামে অত্যাচার তলে তলে বিজেপির অনেকটাই ভোট কেটেছে।