জেএনইউ-তে হিংসা ছড়িয়েছে এবিভিপি ও বামপন্থী উভয়ই, দিল্লি পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্ট
জেএনইউ কাণ্ডে দিল্লি পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জেএনইউ কাণ্ডে দিল্লি পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানাচ্ছে তারা প্রাথমিক তদন্ত করে জানতে পেরেছে যে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অশান্তি ও হিংশার ঘটনায় জড়িয়ে রয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ও এবিভিপি উভয়ই। সোমবারই দিল্লি পুলিশের তরফে জেএনইউ ঘটনা স্থানান্তরিত করা হয় ক্রাইম ব্রাঞ্চে। সেই বিভাগের তদন্তকারী অফিসারদের প্রাথমিক রিপোর্টেই এই কথা জানা গিয়েছে। ডান ও বামের এই দ্বন্দ্বে ক্যাম্পাস ছাড়ছেন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা।
সোমবার এফআইআর দায়ের করে পুলিশ
জেএনইউ ক্যাম্পেসে ঘটা তাণ্ডবের ঘটনায় সোমবার এফআইআর নেয় দিল্লি পুলিশ। পাশাপাশি তারা জানিয়েছে যে অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের বিভিন্ন ভিডিও দেখে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তারা। এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ডিসিপি দেবেন্দ্র আচার্য এই বিষয়ে বলেন, 'আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও খতিয়ে দেখে দোষীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াশুরু করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে আমরা এফআইআর করেছি।'
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ ঘিরে ঝামেলা
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিল জেএনইউ। সেই রেশেই রবিবার সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন জেএনইউএর টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেখানেই শুরু হয় অতর্কিত হামলা। ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশকে ডাকা হলে ক্যাম্পাসে আসে প্রায় ৭০০ পুলিশকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সাড়ে সাতটা নাগাদ। যদিও তাণ্ডব তখনও চলছে। অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সামনে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙা হলেও পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। শুধু মাঝে মাঝে একজন দুজনকে পুলিশ আটকাচ্ছিল। তবে তারা কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি। এদিকে ঘটনায় জখম হয়ে এইমস-এ ভর্তি হয় ৩৪ জন ছাত্র ও শিক্ষক। তাদের মধ্য ঐশী ঘোষের মাথায় ১৫টি সেলাই পড়েছে। তবে অশান্তি ছড়ানোর দায়ে তাঁরই বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ দায়ের করল দিল্লি পুলিশ।
অভিযোগর তির অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দিকে
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র ও আক্রান্ত শিক্ষকদের অভিযোগর তির আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দিকে। এদিকে এই ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। তবে ঘটনার পর গতরাতেই দিল্লি পুলিশের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক এমএস রানধাওয়া ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। পাশাপাশি কাল সারা রাত ক্যাম্পাসে পুলিশ ফ্ল্যাগ মার্চ করে শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে।
জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদের বিবৃতি
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদ বিবৃতি দিয়ে বলে, 'এই হামলা চালিয়ে এবিভিপি-র গুন্ডারা। তাদের নিশানায় সাধারণ ছাত্র ছাড়া শিক্ষকরাও ছিলেন। পুলিশের উপস্থিতিতেই লাঠি, রড, হাতুড়ি নিয়ে ঘুরে তাণ্ডব চালিয়েছে এবিভিপি-র মুখোশধারীরা। এই তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িয়ে রয়েছে পুলিশও। তারা সংঘ সমর্থক প্রফেসরদের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছে এবং তাণ্ডব করতে গুন্ডাদের সাহায্য করেছে।' তবে পাল্টা বামপন্থী ছাত্র সংগঠনদের ঘাড়ে দোষ চাপায় এবিভিপি।
আগে থেকেই ঝামেলা চলছিল বামপন্থী সংগঠন ও এবিভিপির মধ্যে
এদিকে জানা গিয়েছে এর আগে ৩ ও ৪ জানুয়ারি বামপন্থী সংগঠন ও এবিভিপির মাঝে ঝআমেলা বাধে ও সেটি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। এর মূলে রয়েছে বামপন্থীদের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন থেকে বিরত থাকতে বলা। বেশ কয়েক দিন ধরেই হস্টেল ফি বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিল বামপন্থীদের দ্বারা চালিত জেএনইউ ছাত্র সংসদ। এই সময় বামপন্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভারেও গোলমাল করার অভিযোগ ওঠে যাতে সধারাণ ছাত্র-ছাত্রীরা রেজিস্ট্রেশন না করতে পারে।
JNU হিংসায় অপরাধীর খোঁজে দিল্লি পুলিশের অস্ত্র কোন প্রযুক্তি! তদন্তে কোনপথে