৩৭০ ধারা বাতিলের বর্ষপূর্তির দিনে বিস্ফোরণ কাশ্মীরে, নেপথ্যে কোন জঙ্গি সংগঠন তদন্তে পুলিশ
৩৭০ ধারা বাতিলের বর্ষপূর্তির দিনে বিস্ফোরণ কাশ্মীরে, নেপথ্যে কোন জঙ্গি সংগঠন তদন্তে পুলিশ
৫ অগস্ট। আজকের দিনেই ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা কাশ্মীর থেকে বাতিল করেছিল মোদী সরকার। সেই দিনেই কাশ্মীরে বিস্ফোরণ ঘটাল জঙ্গিরা। কাশ্মীরের জামিয়া মসজিদের কাছে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গিয়েছে। তবে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। জঙ্গিরা আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী। আগে থেকেই গোয়েন্দারা এই নিয়ে সতর্ক করেছিল। বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকা নিরাপত্তার মোড়কে মুড়ে ফেলা হয়েছে। মসজিদ চত্ত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করছে। ১৫ অগাস্টের কথা মাথায় রেখে আরও বেশি করে সতর্ক পুলিশ প্রশাসন। সীমান্তে কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে।
কাশ্মীরে বিস্ফোরণ
কাশ্মীরের নৌহাট্টার জামিয়া মসজিদের কাছে হঠাৎই বিস্ফোরণের শব্দ মেলে। জানা গিয়েছে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে জামিয়া মসজিদের কাছে। আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সেখানে গুলির শব্দও শোনা গিয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আগেই জঙ্গিরা টার্গেট করেছিল এই দিনে বিস্ফোরণ ঘটানো। কারন কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করা নিয়ে প্রবল বিরোধিতা করেছিল পাকিস্তান। জঙ্গিরা যে ৩৭০ ধারা বাতিল করার দিনে বিস্ফোরণের হুঙ্কার দিয়েছিল বলে ছক কষেছিল।
৩৭০ ধারা বাতিলের বর্ষপূর্তি
২০১৯ সালে আজকের দিনেই সংসদে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীর এবং লাদাখকে পৃথক দুটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল বলে ঘোষণা করে। তারপরেই কাশ্মীরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। কাশ্মীরের সব রাজনৈিতক নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। প্রায় ১ বছর একাধিক নেতােক গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। মেহেবুবা মুফতিকে প্রায় ১ বছর পর ছাড়া হয়। দীর্ঘ জরুরি অবস্থার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করা হয় পরিস্থিতি। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রতিবাদে গোটা দেশে তুমুল আন্দোলন শুরু হয়েছিল। বিরোধীরা এই নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছিল। কাশ্মীরকে রাজ্যের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা।
টার্গেট কাশ্মীর
গত কয়েকদিন ধরেই গোয়েন্দারা খবর পেয়েছে সীমান্তের ওপারে ডেরা বেঁধেছে জঙ্গিরা তাঁদের টার্গেট কাশ্মীর। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই তাদের মদত দিচ্ছে। তৈরি করা হয়েছে লঞ্চপ্যাডও। সেই লঞ্চ প্যাডে প্রায় ১৪৬ জন জঙ্গিকে মোতায়েন করেছে। কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের জন্য ৮টি রুট তৈরি করেছে জঙ্গিরা। সেই আটটি রুটের মাধ্যমে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে কাশ্মীরে নাশকতা ছড়ানোর ছক কষছে আইএসআই। তাঁদের প্রথম টার্গেট ছিল ৫ অগাস্ট। সেদিন কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই ছকেই হাঁটল জঙ্গিরা। তবে নিরাপত্তার কড়াকড়িতে বড় কিছু ঘটাতে পারেনি তারা। আগে থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ। কাশ্মীরে বাড়তি নজরদাির চালানো হচ্ছে আজকের দিনটিতে। দিল্লিতেও ড্রোন বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক কষছে জঙ্গিরা। সেখবরও পেয়েছে গোয়েন্দারা। এবারে তাদের টার্গেট দিল্লি। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের দিনেই ড্রোন হামলা তারা চালাতে পাের বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। তার জন্য আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছে দিল্লি পুলিশকে। ড্রোমমোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
কাশ্মীের অধিকার ফেরত চায় বিরোধীরা
কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা হরণ করেছে মোদী সরকার। সেটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কাশ্মীরের রাজনৈতিক দল গুলি। এই নিয়ে গুপকর গ্যাং নামে একজোট হয়ে আন্দোলনে নামছেন তারা। এই জোটে সামিল হয়েছে মেহবুবা মুফতির পিডিপি থেকে শুরু করেছে ফারুক আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্সও। দফায় দফায় তারা একজোট হয়ে বৈঠক করেছেন। সম্প্রতি দিল্লিতে কাশ্মীরের সব রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেই বৈঠকে কাশ্মীরে ডিলিমিটেশনের সাহায্য করার কথা বলেছিলেন তিনি। কিন্তু মেহেবুবা মুফতি সেই সাহায্য করতে নারাজ। তিনি দাবি করেছেন মোদী সরকার যতদিন না কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিচ্ছে ততদিন তিনি কোনও ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করবেন না আবার ডিলিমিটেশনে কোনও সহযোগিতাও করবে না বলে জানিয়েছে তিনি।
৩৭০ ধারা বিলোপের দু'বছর পূর্তি, জম্মু ও কাশ্মীরে ৫ বড় পরিবর্তন
প্রতীকী ছবি