বিজেপির প্রার্থী প্রত্যাহার উদ্ধবপন্থী শিবসেনার কাছে ধাক্কা! কেন, রইল পাঁচ কারণ
আন্ধেরি পূর্ব কেন্দ্রের উপনির্বাচন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিজেপি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই কেন্দ্রে জয়ী হচ্ছেন শিবসেনার উদ্ধব শিবিরের প্রার্থী।
আন্ধেরি পূর্ব কেন্দ্রের উপনির্বাচন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিজেপি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই কেন্দ্রে জয়ী হচ্ছেন শিবসেনার উদ্ধব শিবিরের প্রার্থী। কিন্তু বিজেপির এই প্রার্থী প্রত্যাহারের পদক্ষেপ আদতে উদ্ধবপন্থী শিবসেনার কাছে মস্ত ধাক্কা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন, পাঁচটি কারণ দর্শিয়েছেন তাঁরা।
মহারাষ্ট্রে একপ্রস্থ নাটকের পর উদ্ধব ঠাকরে নেতৃত্বাধীন মহা আগাদি সরকারের পতন হয়েছে। শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠী বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকরা গড়েছে মহারাষ্ট্রে। শিবসেনার এই আড়াআড়ি বিভাজনের পর প্রথম ভোট হচ্ছে মুম্বইয়ের আন্ধেরি পূর্ব কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে নির্বাচনের মাধ্যমে উভয় শিবির নিজেদের মেপে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই নির্বাচন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন রাজনৈতিক সংকটে ফেলে দিল উদ্ধব বালাসাহেব শিবসেনাকে। কিন্তু কী সেই সংকট, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা পাঁচটি কারণ ফিক্সড করেছেন।
প্রথম কারণ
আন্ধেরির এই উপনির্বাচন ছিল উদ্ধভ ঠাকরে এবং তার শিবিরের জন্য মুম্বইয়ে ক্ষমতা পরীক্ষার সুযোগ। ঋতুজা লাটকে যদি নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হতেন, তবে উদ্ধব ঠাকরে প্রমাণ করতে পারতেন বিধায়ক-সাংসদরা একনাথ শিন্ডে শিবিরে চলে গেলেও মহারাষ্ট্রের জনসমর্থন তাঁর দিকেই রয়েছেন। প্রার্থী প্রত্যাহার করে সেই সুযোগ কেড়ে নিল বিজেপি।
দ্বিতীয় কারণ
নির্বাচনে লড়াই করার জন্য মাইন্ড সেট করে নিয়েছিলেন উদ্ধব ঠাকরেরা। তাঁরা এই লড়াই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জিততে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়ায় উদ্ধব শিবিরের সমস্ত উদ্যোগ জলে গেল। বিজেপি এবং একনাথ শিন্ডে রাজনৈতিক লাভ দেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা এবারের নির্বাচনে উদ্ধবপন্থী শিবসেনা তাঁদের নতুন প্রতীক চেনাতে পারতেন।
তৃতীয় কারণ
রাজ ঠাকরের এমএনএস বিগত নির্বাচনে আন্ধেরি পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে ভালো ভোট পেয়েছিল। মারাঠি ভোট এমএনএসের দিকে গিয়েছিল। এবার বিজেপি অ-মারাঠি প্রার্থী দেওয়ায় সেই ভোটে উদ্ধবপন্থী শিবসেনার পক্ষেই যেত। তারা চাইত বিজেপির থেকে দূরে থাকতে। সেক্ষেত্রে বিকল্প ছিল উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা। ফলে বিজেপির ভরাডুবি আসন্ন ছিল। নিশ্চিত হারের কেন্দ্রে প্রার্থী প্রত্যাহার করে উদ্ধব শিবিরের লড়াকু মানসিকতায় প্রত্যাঘাত করল বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
চতুর্থ কারণ
একনাথ শিন্ডের বালাসাহেবজির শিবসেনা-বিজেপি জোটের সঙ্গে যদি উদ্ধব বালাসাহেব শিবসেনার সরাসরি লড়াই হত এবং এই লড়াইয়ে উদ্ধব শিবিরের জয় মুম্বইয়ে বড় প্রভাব ফেলত। বিএমসির অনেক কর্পোরেট এখনও ভাবছেন কোনও শিবিরে যাবেন। এই জয় তাঁদের কাছে নির্ধারক হয়ে যেত। সেক্ষেত্রে একনাথ শিন্ডে শিবিরের কাছে মস্ত বড় ধাক্কা হত উদ্ধব শিবিরের জয়। এখন প্রার্থী প্রত্যাহার করে উদ্ধব শিবিরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় উপহার দিয়ে আসন্ন সেই ধাক্কা সামলে নিল।
পঞ্চম কারণ
এবারের লড়াই ছিল একজন গুজরাতি ও একজন মারাঠি প্রার্থীর মধ্যে সরাসরি লড়াই। সেই লড়াইয়ের মাধ্যমে উদ্ধবপন্থী শিবসেনা প্রমাণ করতে পারত, তারা মারাঠিদের দল। সেই ট্যাগ তারা লাগাতে ব্যর্থ হল বিজেপি প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করে নেওয়ায়। উদ্ধব শিবির ভোটের মাধ্যে জিতলে মারাঠি ভোটব্যাঙ্ককে একত্রিত করার সুযোগ পেত, সেই সুবিধাও নিতে পারল না বিজেপির চালে।
শ্রীলঙ্কায় বাড়ছে চিনা ফৌজ, উদ্বেগে তামিলনাড়ু, সতর্কতা জারি জলসীমান্তে