উচ্চবর্ণ-ফর্মুলাতেই বিহারে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি, তেজস্বীর রণে ভঙ্গ দিতে পরিকল্পনায় যাবদরাও
বিহারে জনসংখ্যার মধ্যের মাত্র ১৬ শতাংশ ভোটার উচ্চবর্ণের। তবে সেই পরিসংখ্যান সত্ত্বেও নিজেদের সিগনেচার স্টাইলে উচ্চবর্ণের প্রার্থীদেরই অগ্রাধিকার দিতে মরিয়া বিজেপি। মূলত এই ১৬ শতাংশ ভোটকে কেন্দ্রীভূত করাই বিজেপির লক্ষ্য। এবং এই কারণেই বিজেপির ১১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫১ জনই উচ্চবর্ণের।
বিজেপি চিরকালই উচ্চবর্ণের দল হিসাবে পরিচিত
বিজেপি চিরকালই উচ্চবর্ণের দল হিসাবে পরিচিত। বিশেষ করে হিন্দিভাষী গোবলয়ে বিজেপির সিংহভাগ ভোটার উচ্চবর্ণের। এবং এর ফলেই রাজ্যের জাত-পাতের সমীকরণ এবং পরিসংখ্যানকে উপেক্ষা করে অনুগত ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতেই ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি। বিজেপির ৫১ জন উচ্চবর্ণের প্রার্থীদের মধ্যে ২২ জন রাজপুত, ১৫ জন ভূমিহার এবং ১১ জন ব্রাহ্মণ।
তেজস্বী যাদবের ভোটে থাবা বসাতে বিজেপির পরিকল্পনা
এদিকে রাজ্যের ৭৪ শতাংশ জনগণ হল অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণী, তফসিলি জাতি এবং উপজাতি। বিজেপি নিজেদের প্রার্থী তালিকার সিংহভাগে এদের রেখেছে ঠিকই। তবে অনুপাতের নিরিখে বিজেপির সংখ্যা অন্যান্য দলের থেকে পুরোপুরি আলাদা। এদিকে তেজস্বী যাদবের ভোটে টান দিতে বিজেপি ওবিসি ভুক্ত যাদবদের থেকে ১৫ জনকে টিকিট দিয়েছে এবারে।
২০১৫ সালেও এই একই ফর্মুলাতে ময়দানে নেমেছিল বিজেপি
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালেও এই একই ফর্মুলাতে বিহারের ভোট ময়দানে নেমেছিল বিজেপি। সেবারে যদিও জেডিইউ ছিল না তাদের সঙ্গে। তবে এই ফর্মুলাতে লড়েই বেশ ভালো ফল করেছিল পদ্ম শিবির। ২৪৩টি আসনের মধ্যে সেবারে বিজেপি লড়েছিল ১৫৩টিতে। এবং এর মধ্যেই সব ভোট কাটাকিটির হিসাব সত্ত্বেও ৫৩টিতে জিতেছিল তারা।
এই বিষয়ে বিজেপির দাবি
এই বিষয়ে বিজেপির দাবি, আমাদের প্রার্থী তালিকায় সব শ্রেণী এবং জাতির লোকেদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। অবশ্য গত ৩০ বছর ধরে লালুপ্রসাদের জঙ্গলরাজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এরাজ্যের উচ্চবর্ণের মানুষ। তাই তাদেরকে বিজেপি বেশি অগ্রাধইকার দিয়েছে। তবে ওবিসি এবং শিডিইউল কাস্টকেও আমরা উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দিয়েছি।
জাত-পাতের নিরিখে রাজনীতি
ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি বা জাত-পাতের নিরিখে রাজনীতির উপর অনেকটাই নির্ভরশীল বিজেপি। হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলির মধ্যে বিহারেও এই একই ফর্মুলা কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা দখলের লড়াইতে নেমেছে বিজেপি। দলিত রাজনীতি বিহারে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি থেকেও বড় ফ্যাক্টর।
ধর্মীয় মেরুকরণের মাধ্যমে ভোটের ময়দানে বিজেপি
এই কারণে উত্তরপ্রদেশের মতো বিহারে ধর্মীয় মেরুকরণের মাধ্যমে নিজেদের ভোট কেন্দ্রীভূত করাটা অত সহজ হবে না বিজেপির জন্য। মূলত বিজেপিকে উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দল হিসাবে দেখা হয়। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই জিতেন রাম মাঝিকে এনডিএতে নিয়েছে নীতীশ কুমার। তবে বিজেপি যেভাবে হিন্দু ভোট এক করতে গিয়ে রামমন্দির ইস্যুকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল, তা হয়নি। আর এই কারণেই সেই উচ্চবর্ণের ফর্মুলাতে ফিরে গিয়েছে বিজেপি।
কমল নাথের অধিনায়কত্বে ম্রিয়মান দিগ্বিজয়, মধ্যপ্রদেশে আরও বড় ভাঙনের মুখে কংগ্রেস?