তিন এক্কে তিন! লোকসভা উপনির্বাচনের সবকটি আসনেই হারল বিজেপি, জোট রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর, ফুলপুরের সঙ্গে বিহারের আরারিয়া। তিনটি লোকসভা উপনির্বাচনেই বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। আঞ্চলিক দল জোট বেঁধে অথবা একা লড়ে বিজেপিকে শুইয়ে দিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর, ফুলপুরের সঙ্গে বিহারের আরারিয়া। তিনটি লোকসভা উপনির্বাচনেই বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। আঞ্চলিক দল জোট বেঁধে অথবা একা লড়ে বিজেপিকে শুইয়ে দিয়েছে। গোরক্ষপুরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ছেড়ে আসা আসনে বিজেপি হেরে গিয়েছে। এদিকে উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্যের জেতা ফুলপুর আসনেও বিজেপি পরাজিত হয়েছে।
নিজেদের গড়ে দুই হেভিওয়েট নেতার আসনে বিজেপির পরাজয় নতুন করে জোট রাজনীতির সমীকরণ তৈরি করল বলে মনে করা হচ্ছে। বিহারের আরারিয়া লোকসভা আসনও তার বাইরে নয়। সেখানেও বিজেপি গো-হারা হেরেছে। উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা জোটের পর বিহারে আরজেডির বিরুদ্ধে নেমে এই জয় আঞ্চলিক দলগুলিকে যেমন শক্তি জোগাবে তেমনই বিজেপিকে ক্ষীণবল করবে।
আগের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি দল বেঁধে উত্তরপ্রদেশে লড়াই করে গো-হারা হেরেছিল বিজেপির কাছে। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজবাদী পার্টি একদা বিরোধী বহুজন সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে ভোট সমঝোতা করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ে দারুণ ফল করেছে। অখিলেশ যাদব কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর হাত না ধরে বেহেনজি মায়াবতীর হাত ধরে ভোটে লড়তে নামেন। যা বিজেপি জোর ধাক্কা দিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে দুই কেন্দ্রেই বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও কয়েক রাউন্ডের পর থেকেই অবস্থা পরিষ্কার হতে শুরু করে। বিহারের আরারিয়ায় বিজেপি ও আরজেডি-র মধ্যে তীব্র লড়াই চললেও পরের দিকে আরজেডি গেরুয়া শিবিরকে মাত দিয়ে বেরিয়ে যায়।
ভারতীয় রাজনীতিতে একটা কথা চালু রয়েছে। যাদের দখলে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, তাদের দখলে থাকবে কেন্দ্রের ক্ষমতা। বিজেপি ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশে ভালো ফল করে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে। ৮০টির মধ্যে ৭১টি আসনে বিজেপি জয়লাভ করে। তবে যেভাবে সারা দেশে আঞ্চলিক শক্তিগুলি একজোট হয়ে বিজেপি বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছে তাতে উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের ফল অথবা রাজস্থানের ফলাফল কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভাবলে ভুল হবে।
এদিন দুটি কেন্দ্রেই ২৫ হাজারের বেশি ব্যবধানে সমাজবাদী পার্টি ও বহজুন সমাজবাদী পার্টি জোট জিতেছে। আরারিয়াতেও একই চিত্র সামনে এসেছে।
আর এক বছর পরে লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে নতুন অনেক সম্ভাবনার রাস্তা খুলে দিল এই তিন লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। কেন্দ্রে বিজেপি জোটের সঙ্গী জিতনরাম মাঝির হিন্দুস্তান আবাম মোর্চা বেরিয়ে এসেছে। শিবসেনা সঙ্গ ছেড়েছে। জোট ছাড়ার মুখে টিডিপি-ও। ডিএমকে-ও ভোটের আগে সিদ্ধান্ত নেবে। এই অবস্থায় স্বঘোষিত বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস, সপা, বসপার মতো দলগুলি আগামী ভোটে অবশ্যই নতুন সমীকরণ তৈরি করতে চলেছে সন্দেহ নেই।