দিল্লিতে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে ঠিকই কিন্তু মোদী দৌড়ের ইতি হয়নি!
নয়াদিল্লি, ১০ ফেব্রুয়ারি : দিল্লি নির্বাচনের রায়ে নামেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। কিন্তু আপের ৬৭ আসনের সামনে মাত্র ৩ টি আসনে এগিয়ে থেকে সেকথা বললেও কেমন যেন হাস্যস্পদ লাগে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে যেভাবে একের এক রাজ্য মোদী ঝড়ে গেরুয়া হয়েছে, তার পর দিল্লিতে বিজেপির এই ভরাডুবিতে স্বভাবতই নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের সমালোকরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন তবে কী মোদী ঝড় থেমে গেল? জনমত তাই বলছে।
কিন্তু মোদীর ক্ষেত্রে সত্য়িই কী তাই হল?
আরও পড়ুন : দিল্লি রায়: ইতিহাস গড়ল আপ, দিল্লি কংগ্রেসমুক্ত, দুই অঙ্কেও পৌঁছল না বিজেপি
আরও পড়ুন : দিল্লির ভোট আপের পক্ষে, তবে বিজেপির বিরোধিতায় নয়
দিল্লি নির্বাচনে বিজেপির জগাখিচুরি
এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে দিল্লি নির্বাচন ঘেঁটে ঘ করে দিয়েছে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনে যেখানে উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মতো রাজ্যে এবং বিধানসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডে যেখানে বিজেপি আধিপত্য ফলাতে পেরেছে সেখানে এটা বিশ্বাস করাও কঠিন যে মোদী-শাহের জুটি দিল্লির মতো হাল্কা বিধানসভা কেন্দ্রে একই ম্যাজিক ছড়াতে অসফল হয়েছেন। শুধু অসফল নয়, মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি।
শুধু এই রাজ্যগুলি কেন লোকসভা নির্বাচনে মোট ৭ আসনের সবকটিতেই জিতেছিল বিজেপি। আপের চিহ্নটুকু ছিল না।
তবে, এখানেই মোদীর ইতি নয়, আগামী লোকসভা ভোট পর্যন্ত সব নির্বাচনে জিততে পারে না বিজেপি
কিন্তু সে যাই হোক, দিল্লির রায়ের পরে এটা আবশ্যিক ভাবে বলা যায় না যে মোদী বিস্ময়ের এখানেই ইতি হয়ে গিয়েছে। আমরা সত্যিই বিজেপির থেকে আশা করতে পারি না যে আগামী লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত সব নির্বাচনেই বিজেপি বিস্ময়জনকভাবে জিতবে। সবসময় রাজনীতিতে মানুষের নাড়ি টিপে বোঝা যায় না। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে মোদী বা অমিত শাহ বা বিজেপি দল মানুষের সেই মানসিকতা বুঝতে অসফল হয়েছেন। য়ার ফল দিল্লি নির্বাচনে বিজেপির ধরাশায়ী হওয়া।
দিল্লি নির্বাচন মোদী-শাহকে শেখাল ভারতে নির্বাচন অঞ্চল থেকে অঞ্চলে তফাৎ গড়ে
দিল্লির সঙ্গে দিল্লির সমস্যার সঙ্গে সেভাবে ওয়াকিবহাল নন মোদী বা অমিত শাহ কেউই। আর তার ফলে দিল্লির নির্বাচন প্রথম থেকেই মোদী ও শাহের কাছে বেশ কঠিন পরিস্থিতি ছিল। আর রাজধানীতে তাঁরা যে বহিরাগত তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল দিল্লি।
উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের জনপ্রিয় সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংখ্যালঘুর রাজনীতি দিল্লিতে খাটে না। ২০১৫ সালে বিজেপির এই প্রথম ভরাডুবি থেকে অন্তত সে শিক্ষা নেওয়া উচিত বিজেপি নেতৃত্বে।
১৯৬৭ সালে কংগ্রেসের ভরাডুবি, তবুও জাতীয় রাজনীতিতে ইন্দিরা গান্ধীর আধিপত্য
১৯৬৭ সালে নির্বাচনেইন্দিরা গান্ধীর নয়া নেতৃত্বে কংগ্রেস তৎকালীন সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যায়। কিন্তু তার জন্য ইন্দিরা গান্ধীকে আটকানো যায়নি। জাতীয় রাজনীতিতে এখনও আধিপত্য রয়েছে ইন্দিরা গান্ধীর।
২০১৫ সাল সেভাবে নির্বাচনের সময় নয়, হোমওয়ার্ক করার জন্য হাতে অনেক সময় পাবে বিজেপি
২০১৫ সাল সেভাবে নির্বাচনের সময় নয়। দিল্লি ছাড়া শুধু বিহারের ভোট এবছর হতে পারে। কী কী ভুল হয়েছে, আত্মসমালোচনা, অন্তর্দর্শনের অনেকটা সময় হাতে পাবে বিজেপি নেতৃত্ব। আবার একটি জয় পেলেই আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে মোদী-শাহ জুটি।