খাদ্যাভ্যাস, পরিধানের পরে মানুষের ব্যয় নিয়্ন্ত্রণের চেষ্টা, এলটিসি নিয়ে চিদাম্বরমের নিশানায় কেন্দ্র
খাদ্যাভ্যাস, পরিধানের পরে মানুষের ব্যয় নিয়্ন্ত্রণের চেষ্টা, এলটিসি নিয়ে চিদাম্বরমের নিশানায় কেন্দ্র
করোনা ধাক্কায় কুপোকাত দেশীয় অর্থনীতি। কমেছে বাজারের চাহিদা। এমতাবস্থায় ক্রমক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের মুখে হাসি ফোটাতে ক্রেতাদের হাতে বাড়তি অর্থের জোগান দিতে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে কেন্দ্রকে। ছুটির সময় ভ্রমণে ছাড়’ বা এলটিসি-র পরিবর্তে এবার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ক্যাশ ভাউচার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এবার এই প্রসঙ্গেই বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকারের তুলোধনা করলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে।
কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে এই নয়া ক্যাশ ভাউচার ?
এদিকে এই নয়া ক্যাশ ভাউচারের ক্ষেত্রে পছন্দের জিনিস কেনার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। যে দ্রব্যগুলির জিএসটি ১২ শতাংশ বা তার বেশি, শুধুমাত্র সেগুলি কেনার ক্ষেত্রেই এই টাকা খরচ করা যাবে বলেও বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আর এখানেই কেন্দ্র সরকারকে একহাত নিতে দেখা যায় কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদকে।
খাদ্যাভ্যাস, জামাকাপড়ের পরে মানুষের ব্যায়কেও নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কেন্দ্র
চিদাম্বরমের সাফ বক্তব্য, " সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে মা-বাবার মতো আচরণ করতে চাইছে কেন্দ্র। তাঁরা কী কিনবে, কী পরবে এখন সেটাও ঠিক করে দিতে চাইছে সরকার। " এখানেই না থেমে চিদাম্বরম বলেন, " ঠিক বিজেপি যেমন বলে দেয় মানুষ কী থাবে, কী পরাবে, কোন ভাষা বলতে হবে, কাকে ভালবাসবে, কাকে বিয়ে করবে ইত্যাদি, এখন ঘুরপথে সাধারণ মানুষের ব্যয়েকেও নিয়্ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্র। "
ক্যাশ ভাউচারের সিদ্ধান্ত মোট কত খরচ হচ্ছে কেন্দ্রের ?
মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে এই হস্তক্ষেপের জবাব সাধারণ মানুষই ঠিক একসময়ে দেবেন বলেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন চিদাম্বরম। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ক্যাশ ভাউচার দেওয়ার সিদ্ধান্তে সরকারের ৫,৬৭৫ কোটি টাকা মতো খরচ হবে বলে জানিয়েছেন নির্মলা সীতারমণ। একইসাথে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীরাও এই সুযোগ পাবেন বলে জানা যাচ্ছে। সেই জন্য প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে বলে গতকালই জানিয়েছেন তিনি।
২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ আসলে ‘পর্বতের মুষিক প্রসব’
অন্যদিকে এলটিসি ভাউচার প্রসঙ্গে বলতে গিয়েও করোনাকালে কেন্দ্রের কুড়ি লক্ষ কোটির আত্মনির্ভর প্যাকেজেরও কড়া সমালোচনা করেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। তার সাফ কথা এই প্যাকেজ আসলে ৭৩ হাজার থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি নয়। চিদাম্বরমের সাফ বক্তব্য শুধুমাত্র সংখ্যার কারিকুরিতেই সাধারণ মানুষের মন জিততে চেয়েছে কেন্দ্র। এই আর্থিক বরাদ্দের প্রভাব ভারতের মোট জিডিপির ০.১ শতাংশ নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই সমস্ত তথ্য তুলে ধরেই কুড়ি লক্ষ কোটির আত্মনির্ভর প্যাকেজ আসলে পর্বতের মুষিক প্রসব ছাড়া কিছুই নয় বলেও এদিন সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি।
মহামারীর কোপে বিশ্ব অর্থনীতিতে গাঢ় হচ্ছে মন্দার ছায়া, মাইনাসে চলছে আর্থিক বৃদ্ধি