একক বৃহত্তম দল হচ্ছে বিজেপি-ই, বুথফেরত সমীক্ষায় স্পষ্ট ইঙ্গিত

বিজেপি যে ভোটের পর একক বৃহত্তম দল হচ্ছে, তা অনেক আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সামগ্রিকভাবে ধরলে এনডিএ-র পারফরম্যান্সও খুব ভালো। কিন্তু ম্যাজিক ফিগারের কাছাকাছি গিয়ে যদি তাদের থেমে যেতে হয়, তা হলে সেটা একটু চিন্তার বৈকি! সেক্ষেত্রে আরও ২৩ জন সাংসদের সমর্থন দরকার হবে। তৃণমূল কংগ্রেস, এআইএডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজপার্টিরা আসবে না বিজেপি-র পাশে। ফলে নির্দলদের সমর্থন নিতে হবে কিংবা ইউপিএ থেকে কোনও শরিক ভাঙিয়ে আনতে হতে পারে বিজেপি-কে। হিন্দি বলয় এবং পশ্চিম ভারতে বিজেপি ভালো ফল করলেও উত্তর-পূর্ব ভারতে দলের ফল আশানুরূপ হবে না বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের মুখ বাঁচাবে উত্তর-পূর্ব ভারত। আর কিছুটা তেলেঙ্গানা এবং কেরল। কর্নাটকে তারা ভালো ফল করবে বলে দাবি করলেও সেখানে সুবিধা করতে পারবে না বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়।
অন্যান্যরা অর্থাৎ ছোটো আঞ্চলিক দলগুলি এই ভোটে ভালো ফল করবে। যেমন, তৃণমূল কংগ্রেস, এআইএডিএমকে, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি, বিজু জনতা দল ইত্যাদি। এদের সম্মিলিত আসন দাঁড়াতে পারে ১৪৬টি।
পশ্চিমবঙ্গের সম্ভাব্য ফলাফল নিয়েও আলোকপাত করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বামেদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। তারা পেতে পারে ১৫টি আসন। অর্থাৎ ২০০৯ সালে যা পেয়েছিল, তাই-ই। তৃণমূল কংগ্রেসের আসন গতবারের থেকে একটি বেড়ে হতে পারে ২০টি। কংগ্রেস ৫টি আসন পেতে পারে। আর উল্লেখযোগ্য দিক হল, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে দু'টি আসন জিততে চলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছাড়াই এই সাফল্য নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয়। বোঝা যাচ্ছে, এবারের ভোটে বাংলায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে চলেছে বিজেপি।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র ফল হবে চোখধাঁধানো, সৌজন্যে মোদী-হাওয়া
যে রাজ্য দু'টিতে চোখধাঁধানো ফল করতে চলেছে বিজেপি তথা এনডিএ, সেটা হল উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার। উত্তরপ্রদেশে আসন রয়েছে ৮০টি। এনডিএ পেতে চলেছে ৫২টি। কংগ্রেস তথা ইউপিএ ১০টি। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি পেতে পারে ৬টি আসন। রাজ্যের শাসক দল সমাজবাদী পার্টির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হতে চলেছে। তারা মাত্র ১২টি আসন পাবে বলে দাবি। বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে বিজেপি একাই পেতে চলেছে ২৮টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ২টি। আর নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল পেতে পারে ১০টি আসন। এ ছাড়া, মধ্যপ্রদেশের ২৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেতে পারে ১৬টি আসন, কংগ্রেস ১১টি আসন এবং বিএসপি ২টি আসন। কর্নাটকে আশ্চর্যজনকভাবে উত্থান হতে চলেছে বিজেপি-র। রাজ্যের ২৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেতে পারে ৯টি, বিজেপি ১৮টি, সংযুক্ত জনতা দল ১টি। রাজস্থানে বিজেপি তথা এনডিএ পেতে চলেছে ১০টি আসন, কংগ্রেস ১৪টি এবং অন্যান্য ১টি।
মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে এনডিএ পেতে পারে ২৭টি এবং ইউপিএ ২১টি। গুজরাতের ২৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেতে পারে ২২টি এবং কংগ্রেস ৪টি। তামিলনাড়ুতে কিন্তু জয়ললিতার জয়যাত্রা অব্যাহত। রাজ্যের ৩৯টি আসনের মধ্যে তাঁর দল পেতে পারে ৩১টি আসন, ডিএমকে ৭টি এবং কংগ্রেস ১টি। কেরলের ২০টি আসনের মধ্যে ১৬টি-ই পেতে পারে কংগ্রেস। এখানেও বামেদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত।
অন্ধ্রপ্রদেশের সীমান্ধ্রে মুছে যেতে চলেছে কংগ্রেস। এখানকার ২৫টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের প্রাপ্তি হবে শূন্য। বিজেপি জোট পেতে চলেছে ১৭টি আসন আর ওয়াইএসআর কংগ্রেস পেতে চলেছে ৮টি আসন। তেলেঙ্গানার ১৭টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেতে পারে ৪টি আসন, বিজেপি ২টি, টিআরএস ৯টি এবং বামেরা ২টি আসন।
অন্যদিকে, আম আদমি পার্টির জন্য দুঃসংবাদ। তারা শক্ত ঘাঁটিতে দিল্লিতে খালি হাতে ফিরতে চলেছে। এখানকার ৭টি আসনের মধ্যে বিজেপি একাই পেতে চলেছে ৬টি আসন এবং কংগ্রেস ১টি আসন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের খামখেয়ালিপনা যে মানুষ পছন্দ করেনি, এটাই তার প্রমাণ।