জুলাইয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৌড়ে বিরোধীরা, সূচাগ্র মেদিনীও ছাড়বে না বিজেপি
রাজ্যসভা নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে। বিরোধীরা তৈরি হচ্ছেন বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে। তাই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসল বিজেপি। তারা সংখ্যাধিক্য বলে বসে নেই হাত গুটিয়ে।
রাজ্যসভা নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন মাত্র দু'মাসের ব্যবধানে। বিরোধীরা তৈরি হচ্ছেন বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে। তাই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসল বিজেপি। তারা সংখ্যাধিক্য বলে বসে নেই হাত গুটিয়ে। বিজেপি বুঝিয়ে দিল, তারা বিনা যুদ্ধে সূচাগ্র মেদিনী ছাড়বে না বিরোধীদের। এদিন চার ঘন্টার ম্যারাথন বৈঠক করে বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
বিজেপি-নেতৃত্বাধীন জোট এবং বিরোধীরা উভয় পক্ষই ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতির জন্য তাদের নিজস্ব প্রার্থী দাঁড় করানোর পরিকল্পনা করেছে। এই নির্বাচনটি প্রতিফলিত করবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ১০ জুন রাজ্যসভার ৫৭টি আসনের জন্য মনোনয়ন শুরু হবে। তার দুমাস পরেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এদিন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার বাড়িতে বিজেপি নেতারা মিলিত হন।
রাজ্যসভার নির্বাচনেরও প্রভাব পড়বে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ওপর। বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৫ জুলাই। বিরোধীরা এখনও রাষ্ট্রপতির জন্য একটি যৌথ প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি এবং ঐক্যমত্য গড়ে তোলার জন্য বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বা কেসিআর এবং মহারাষ্ট্রের নেতা শরদ পাওয়ার।
সমস্ত সাংসদ এবং বিধায়কের ভোটের মধ্যে ৪৮.৯ শতাংশ রয়েছে বিজেপি জোটের দখলে। বিরোধী দল ও অন্যান্য দলগুলোর ভোট ৫১.১ শতাংশ। তাদের প্রার্থীকে সমর্থন করার জন্য বিজেপির কেবলমাত্র ২ শতাংশ সমর্থম দরকার। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের বিজেডি (বিজু জনতা দল) বা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থন পেলেই তারা উতরে যাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে।
২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের জন্য একটি নন-কংগ্রেস ও অ-বিজেপি ফ্রন্টের হয়ে কাজ করছেন কেসিআর। তার দন্য মুখ্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে তিনি ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছেন। স্পষ্টতই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে তিনি বা তারা পরীক্ষামূলক প্লাটফর্ম হিসাবে ব্যবহার করবেন, তা বলাই যায়। কিন্তু বিজেপি বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে দিতে রাজি নয়।
কেসিআর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গহে দেখা করেছেন। তার আগে উদ্ধব ঠাকরে, শারদ পাওয়ার, অখিলেশ যাদবের সঙ্গে দেখা করেন তিনি এবং এম কে স্টালিন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি বাংলায় আসবেন এবং কর্নাটকে গিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন। এমনকী কেসিআর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং বিরোধী নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে দেখা করবেন।
নীতীশ কুমারের সরকারের বিজেপি। তবে এখন কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। ফলে তারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) প্রার্থীকে সমর্থন করবেন কি না, তা নিযে সংশয় থেকেই যায়। বর্ণ শুমারি নিয়ে তিনি তেজস্বী যাদবকে সমর্থন করেছে। বিজেপির বিরোধিতা করেছেন প্রকাশ্যে। রাজ্যসভার নির্বাচনের নিয়েও বিজেপির সঙ্গে তাণর মনোমালিন্য চলছে।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপিও নেমে পড়েছে আসরে। সবাইকে একত্রিত করার কাজ শুরু করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং জিভিএল নরসিমা রাও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহল রেড্ডির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এদিকে কংগ্রেস আর আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যেও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে৷ ফলে লড়াই জমে উঠেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে.