Tripura Elections 2023: ভরসা মোদীর ছবি! ত্রিপুরায় বিজেপির হাতিয়ার উপজাতি 'রিপোর্ট কার্ড'
ত্রিপুরায় উপজাতি এলাকায় ভোট এবার বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জের। তবে তারা ইতিমধ্যেই উপজাতি এলাকার উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছে। উপজাতি এলাকায় প্রচারে এটাই তাদের এবারের হাতিয়ার।
উত্তর-পূর্বে যে তিনটি রাজ্যে নির্বাচন হচ্ছে, তার মধ্যে ত্রিপুরায় কঠিন পরিস্থিতির মুখে শাসক বিজেপি। একদিকে বাম-কংগ্রেস জোট অন্যদিকে তিপ্রামোথা-আইপিএফটির জোট সম্ভাবনার মধ্যেই লড়াই চালাতে রাজ্যে উপজাতি কল্যাণের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসক দল। বিধানসভার ভোটের লড়াইয়ে উন্নয়নই যে হাতিয়ার সেই বার্তাও দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
উপজাতি উন্নয়নে বিজেপির রিপোর্ট কার্ড
ঠিক পাঁচ বছর আগে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপির অভিযোগ ছিল ২৫ বছর বাম শাসনে অনুন্নয়নের। সেই প্রচার প্রভাব ফেলেছিল। আর এবারের নির্বাচনে বিজেপির প্রচারে হাতিয়ার উপজাতি উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড। শাসকদলের দাবি, তারা উপজাতিদের কল্যাণ ছাড়াও পরিচয়, সংস্কৃতি এবং তাদের ভাষার সুরক্ষার জন্য প্রকল্প ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিজেপির প্রকাশিত রিপোর্ট কার্ডে বলা হয়েছে, আগরতলায় মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দরে একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল খোলা হয়েছে। রাজ্যের ২৩ টি উপজাতি প্রধান ব্লকে উন্নয়নের জন্য় ১৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সাব্রুমে বেশ কয়েকটি দেশের আর্থিক সহায়তায় একটি বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া বয়েছে। ককবরক ভাষাকে সিবিএসসির বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মাতৃভাষায় শিক্ষাকে উৎসাহিত করতে চাকমা, গারো, মণিপুরী এবং বিষ্ণুপ্রিয়ার মতো সেখানকার উপজাতি ভাষাকে বিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ত্রিপুরায় কঠিন লড়াইয়ের মুখে বিজেপি
পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেই ত্রিপুরায় কঠিন লড়াইয়ের মুখে বিজেপি। সেই পরিস্থিতিতে রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। যে সময় বিজেপি রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছে, তার আগে রাজ্যের বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রথমবারের জন্য জোট গঠন করে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। অন্যদিকে উপজাতিদের দুই রাজনৈতিক সংগঠন তিপ্রা মোথা এবং আইপিএফটির মধ্যে আলোচনায় এগিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে চূড়ান্ত কিছু ঘোষণা না হলেও, দুইদল একীভূত হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যা হলে বিজেপির কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জের হবে। শুধু তাই নয়, ২০১৮ তে থাকলেও এবার বিজেপির কোনও জোটসঙ্গী থাকবে না। এই দুই দলের অভিযোগ, ২০১৮-তে বিজেপির ক্ষমতায় আসার আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পালন না করে রাজ্যের উপজাতিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
বিজেপির ভরসা মোদী ম্যাজিক
অন্য রাজ্যের মতো ত্রিপুরায় এবারও বিজেপির ভরসা মোদী ম্যাজিক। ইতিমধ্যে সেখানে সভা করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নির্বাচনের আগে তাঁর ফের সেখানে যাবেন। মোদীর রাজ্য সফর এবং তাঁর সভা হলে তা দলের পক্ষে যাবে বলেই মনে করছেন রাজ্য বিজেপির নেতানেত্রীরা।
ছবি বিকৃতির অভিযোগ কমিশনের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে
ত্রিপুরায় নির্বাচনী লড়াই এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে শাসক বিজেপি নির্বাচনী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছে। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরে বিভিন্ন জায়গায় থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সরিয়ে নেওয়ার পরিবর্তে সেখানে কালো কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, ত্রিপুরায় আদর্শ আচরণ বিধি কার্যকর হয়েছে ২১ জানুয়ারি থেকে। তারপর বিভিন্ন সরকারি জায়গায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলির হোর্ডিং, পোস্টার এবং পতাকা সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ বেশ কিছু জায়গায় প্রধানমন্ত্রী ছবি সরিয়ে ফেলার পরিবর্তে কালো কালি লাগানো হয়েছে। এব্যাপারে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।