মধ্যপ্রদেশ উপনির্বাচনে লড়াই শিবলিঙ্গ বনাম তুলসীর! হিন্দুত্ব-লাদাখ ইস্যু আঁকড়ে বিজেপি-কংগ্রেস
এর আগে গুজরাত নির্বাচনেও বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিতে কংগ্রেস নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ খোলশ থেকে বেরিয়ে এসে হিন্দুত্বের আশ্রয় নিয়েছিল । এবং তাতে মোদী গড়ে প্রায় কিস্তিমাত দিয়েও ফেলেছিল হাত শিবির। এবার সেই ধারাকে বজায় রেখে মধ্যপ্রদেশেও হিন্দুত্ব ও লাদাখ ইস্যু নিয়ে সরব হতে চলেছে কংগ্রেস। আর বিজেপির অ্যাজেন্ডায় চিরকালই তাদের বিদেশনীতি ও ধর্মীয় মেরুকরণ উপস্থিত ছিল।
গুজরাত নির্বাচনেও কংগ্রেস হিন্দুত্বের আশ্রয় নিয়েছিল
এর আগে গুজরাত নির্বাচনেও কংগ্রেসকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে রাহুল গান্ধী একজন পৈতে ধারী ব্রাহ্মণ, মোদীর থেকে তিনি বেশিবার মন্দিরে যান, ইত্যাদি। তো কংগ্রেসের জন্য হিন্দুত্বের আশ্রয় নেওয়া এই প্রথমবার হবে না। আর গুজরাত নির্বাচনের মতো এবারও মধ্যপ্রদেশ পুনর্দখলের বিষয়ে মরিয়া কংগ্রেস। তাই রাজনৈতিক স্বার্থে নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বিসর্জনে খুব একটা অনুশোচনা হবে বলে মনে হয় না।
বারবার লাদাখ নিয়ে বিজেপিকে তোপ কংগ্রেসের
এদিকে ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাতের মাঝেই কংগ্রেস বারংবার লাদাখ নিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগার কাজ করে আসছে। রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তো বটেই বিজেপিকে আক্রমণ শানাতে ময়দানে নেমেছেন স্থানীয় নেতারাও। এরই মাঝে চুপিসারে বিজেপি মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনে নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিচ্ছে। আর তা দেখে এবার কংগ্রেসও লাদাখ ইস্যুকে নামিয়ে এনেছে রাজনীতির কাদাজলে।
লকডাউন জারির আগে মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক বদল
দেশজুড়ে করোনা লকডাউন জারি করার আগেই আমূল পরিবর্তন হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে। কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সৈনিক ও সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া হাত শিবির ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন পদ্ম শিবিরে। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর অনুগামী হিসাবে পরিচিত ২২ জন বিধায়ক। এর জেরে মধ্যপ্রদেশে কমলনাথকে সরিয়ে মসনদে বসেছিলেন শিবরাজ সিং চৌহান।
শিবরাজের মাথাব্যথার কারণ
তবে মধ্যপ্রদেশের ২৪টি আসনের উপনির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই শিবরাজের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় কোন্দল। তবে কংগ্রেস সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করলেও দিকভ্রষ্ট হওয়ায় শেষ পর্যন্ত খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি। এই অবস্থায় মন্ত্রিসভা সমপ্রসারণ করার বিষয়টিও সেরে ফেলেন শিবরাজ।
বিজেপির অ্যাজেন্ডা ধরেই টানাটানি শুরু করেছে কগ্রেস
তবে কংগ্রেস এখনও নিজেদের পথ ঠিক করে উঠতে পারেনি। ২৩০ আসনি বিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৬টি আসন। বিজেপির এই মুহূর্তে রয়েছে ১০৭, কংগ্রেসের ৯২। অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে গেলে কংগ্রেসের প্রয়োজন ২৪টির সবকটি আসন। এই অবস্থায় ময়দানে নেমে জোর প্রচার শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। আর তাই এবার মরিয়া হয়ে বিজেপির অ্যাজেন্ডা ধরেই টানাটানি শুরু করেছে কগ্রেস।
কংগ্রেসও হিন্দুত্ব কার্ড খেলতে প্রস্তুত
বিজেপির তরফে ঘোষণা করে জানিয়ে দেওয়া হল যে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিধায়কদেরই উপনির্বাচনের জন্য টিকিট দেওয়া হবে বিজেপির তরফে। এই ঘোষণা করেন স্বয়ং মধ্যপ্রদেশ বিজেপির রাজ্য সভাপতি ভিডি সিং। যারপর বিজেপির অন্দরের কোন্দল আরও বেশি করে সামনে এসি পড়ে। তবে সেই পরিস্থিতির রাজনৈতিক ফায়দা না তুলে কংগ্রেস কেন্দ্রকে আক্রমণের পথ গ্রহণ করে। প্রথম দিকে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের দলে নিলেও কংগ্রেস পরে সংগঠনের জন্য নতুন জেলা প্রধান নিয়োগ করে। এবং জাতীয় রাজনৈতিক নীতি থেকে সরে এসে স্থানীয় ভাবে বিজেপির মোকাবিলার পন্থা আপন করে নেওয়ার কথা ভেবেছে। আর এখানেই কংগ্রেসও হিন্দুত্ব কার্ড খেলতে প্রস্তুত।
লাদাখে চিনা আগ্রাসন আদতে ট্রাম্পের জন্য আশীর্বাদ! দাবার খেলায় ভারত এখন আমেরিকার ঘুঁটি?