বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা রিপোর্টে সিঁদুরে মেঘ! মুখ্যমন্ত্রী বদলের নেপথ্যে জল্পনা ত্রিপুরায়
বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা রিপোর্টে সিঁদুরে মেঘ! মুখ্যমন্ত্রী বদলের নেপথ্যে জল্পনা ত্রিপুরায়
রাতারাতি মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে ত্রিপুরায়। মেয়াদের আর বাকি ১০ মাস। তার মধ্যেই হবে ভোট। তাহলে হঠাৎ কী হল, যে কালক্ষেপ না করে আচমকা মুখ্যমন্ত্রী বদল করে দেওয়া হল? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেছ, এর নেপথ্যে রয়েছে একটি সমীক্ষা। বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা রিপোর্টের সিঁদুরে মেঘ দেখেছে নেতৃত্ব। তারপরই এই বদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিপ্লব দেবকে সরিয়ে কেন মানিক?
রাতারাতি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে। বিপ্লব দেবকে সরিয়ে কুর্সিতে বসেছেন ডা. মানিক সাহা। ভোটের আগে মাত্র ১০ মাস তাঁর হাতে সময়। কেন হঠাৎ করে প্রথম পরিবর্তনের সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে মেয়াদ পূরণ করাল না বিজেপি? শুধুই কি ভাবমূর্তি বদলের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, নাকি আরও বড় কোনও কারণও রয়েছে এর মধ্যে।
সমীক্ষায় সিঁদুরে মেঘ, তাই কি বদল?
সম্প্রতি একটি সমীক্ষা রিপোর্ট বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাতে আসে। সেই রিপোর্টেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে পায় তারা। তখনই রাতারাতি বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক যেভাবে উত্তরাখণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হয়েছিল, সেভাবেই ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবের পরিবর্তে এক দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় ডা. মানিক সাহাকে।
এখন ভোট হলে বিজেপি কত আসন পাবে
কিন্তু কী আছে ওই সমীক্ষা রিপোর্টে? বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতত্ব জানতে পেরেছে, এখন ভোট হলে ত্রিপুরায় মাত্র ১২টি আসনে জয়ী হবে বিজেপি। অর্থাৎ ৬০ আসনের ত্রিপুরায় হার অনিবার্য। যেখানে গতবার বিজেপি ৩৬টি আসনে জয়ী হয়েছিল। এবার সেখানে তিন ভাগের এক ভাগ আসন তাঁরা দখলে রাখতে পারবে, এই সমীক্ষা অনুযায়ী।
২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে কে কত
২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৬০টির মধ্যে ৩৬টি আসনে জয়ী হয়েছিল আর প্রধান বিরোধী বামফ্রন্ট পেয়েছিল ১৬টি আসন। আইপিএফটির দখলে গিয়েছিল ৮টি আসন। কংগ্রেস বা তৃণমূল একটি আসনও দখল করতে পারেনি। বিজেপি ২৫ বছর পর বামফ্রন্ট তথা সিপিএমকে হারিয়ে ত্রিপুরায় পরিবর্তনের সরকার গড়েছিল।
সমীক্ষা রিপোর্টে কে কত আসন পেতে পারে
এই সমীক্ষা রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বিজেপিকে ১২টি আসনেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে এখন ভোট হলে। আর সিপিএম বা বামেরা পাবে ১৮ থেকে ২০টি আসন। আর কংগ্রেস ও তৃণমূল মিলিয়ে পেতে পারে ১০ থেকে ১২টি আসন। বেশি আসন কংগ্রেসের দখলেই যাবে। তবে চমকপ্রদ ফল করতে পারে টিপ্রা। তারা পেতে পারে ২০টি আসন। কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল গড়েই প্রদ্যোৎ বিক্রম মাণিক্য দেববর্মা সাফল্য আনতে পারেন।
ত্রিপুরায় নতুন জোট সমীকরণ তৈরি হতে পারে
এই পরিস্থিতি ত্রিপুরায় নতুন জোট সমীকরণ তৈরি হতে পারে। কংগ্রেস, তৃণমূল ও টিপ্রার জোট হতেই পারে। কিংবা বামেদের সঙ্গেও জোট হতে পারে, সেক্ষেত্রে ম্যাজিক ফিগার পেয়ে যেতে পারে যে কেউ। বিজেপি বিরোধী দলের তকমাও পাবে না। এই পরিস্থিতিতেই ক্ষমতাধরে রাখতে বিজেপি এই মুখ্যমন্ত্রী বদলের রাস্তায় হাঁটল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
দলের অন্দরেও পরিবর্তন হতে পারে
এখন দেখার বিজেপি এই পরিবর্তন করে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে কি না। আর দেরি না করে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বদল করে শেষ রক্ষা করতে চাইছে বিজেপি। দলের অন্দরেও পরিবর্তন হতে পারে। বিজেপির যে বিপ্লব জমানায় পিছিয়ে পড়েছে, তার দজেরেই তাঁদের প্রতি সমর্থন তলানিতে ঠেকেছে, তা এই সমীক্ষা রিপোর্ট এবং মুখ্যমন্ত্রী বদলই প্রমাণ।
অনলাইনে পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল রবীন্দ্রভারতী! ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকলেন উপাচার্য