মোহভঙ্গ! বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ‘ঘর-ওয়াপসি’র সম্ভাবনা প্রবল, ত্রিপুরায় টলমল বিজেপি
সবে মাত্র বছর ঘুরছে। মাত্র ১৪ মাস বয়স ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল ২০১৮ সালে। এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে বিপ্লব দেবের সরকার।
সবে মাত্র বছর ঘুরছে। মাত্র ১৪ মাস বয়স ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল ২০১৮ সালে। এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে বিপ্লব দেবের সরকার। ঠিক যেভাবে ত্রিপুরায় বিজেপির জনপ্রিয়তা কমছে, একইভাবে জনপ্রিয়তা বাড়ছে কংগ্রেসের। লোকসভা ভোটের আগে নিয়মিত শক্তি বাড়িয়ে চলেছে।
ত্রিপুরায় হঠাৎ উত্থান হয়েছিল বিজেপির। প্রথম কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল, তারপর তৃণমূল ভেঙে রাতারাতি বিজেপি হয়ে গিয়েছিল সবাই। তাতেই ২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটে। পরিবর্তন হয় ত্রিপুরায়। কিন্তু তারপর এক বছর কাটতে না কাটতেই ত্রিপুরায় বিপাকে পড়েছে বিজেপি সরকার।
জোটসঙ্গী আইপিএফটি তো বেজায় চটেছে বিজেপির উপর। দুই দলের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র অসন্তোষ। সেই অসন্তোষের ফাঁক গলে দ্রুত উঠে আসছে কংগ্রেস। ত্রিপুরার রাজনীতিতে ফের বদলের হাওয়া প্রবেশে করেছে এরইমধ্যে। লোকসভায় বিজেপি ও তাদের জোটসঙ্গীর মধ্যে কোনও সমঝোতা হয়নি। উভয়েই লড়ছে উভয়ের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসও দুই কেন্দ্রে সুবল ভৌমিক ও প্রজ্ঞা দেববর্মনকে দাঁড় করিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
শরিকি কোন্দল, দলীয় অন্তর্কলহ তো আছেই, তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়ে বিজেপির সর্বনাশ ডেকে এনেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। তার সঙ্গে রয়েছে ত্রিপুরাল্যান্ড, আদিবাসীদের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়-সহ অনেক ইস্যু। যা নিয়ে নাজেহাল বিপ্লব কুমার দেব। এসবেরই জেরেই বিপ্লবের জনপ্রিয়তা তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে।
আর ত্রিপুরায় কামব্যাকের সুযোগ পেয়ে কংগ্রেস তুখোড় ব্যাটিং শুরু করেছে। প্রদ্যোৎ রায় বর্মনকে সভাপতি করার পর থেকেই কংগ্রেসের পালে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বিজেপিতেও ভাঙন ধরেছে। দলে দলে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। ভাঙছে আইপিএফটিও। আগামী ১০ এপ্রিল পাঁচ হাজারেরও বেশি কর্মীর যোগ দেওয়ার কথা কংগ্রেসে।
[আরও পড়ুন:লোকসভার আগে ব্রিগেড-যুদ্ধে জিতলেন কে, মোদী না মমতা! একনজরে পরিসংখ্যান]
বিশেষ সূত্রে খবর, বিজেপির প্রভাবশালী মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন ফের কংগ্রেসে ফিরতে পারেন। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সুদীর রায় বর্মন এর আগে কংগ্রেসেই ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখান। পরে সদলবদলে যোগ দেন বিজেপিতে। এত বছরের মধ্যেই মোহভঙ্গ হয়েছে তাঁর। ফলে তিনি সদলবদলেই ফের ঘরে ফিরতে পারেন।
[আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে বিদায় জানাবে কংগ্রেস, আশ্বাস রাহুলের]
সম্প্রতি ত্রিপুরায় সভা করে গিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তারপরই কংগ্রেসের প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করেছেন অনেকে। লোকসভা ভোটের আগে তাই কংগ্রেসের পালে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এমনই পরিস্থিতি এই লোকসভা ভোটেই বিজেপির ভরাডুবি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞমহল। আর এই লোকসভায় হারলে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার আরও প্রশ্নের মুখে পড়ে যাব। এবং টলমল হয়ে যাবে বিপ্লবের গদি।
[আরও পড়ুন: কট্টর বামপন্থী লক্ষ্মণ এবার অধিকারী গড়ে কংগ্রেসের প্রার্থী, লড়াই শেয়ানে শেয়ানে]