এনডিএ-কে সমর্থনে তৈরি নবীন-আম্মা, বেকায়দায় তৃণমূল কংগ্রেস
বুথফেরত সমীক্ষায় যেই দেখা গেল, বিজেপি-ই কেন্দ্রে পরবর্তী সরকার গড়তে চলেছে, অমনই ডিগবাজি খেলেন নবীন পট্টনায়ক এবং জয়ললিতা। প্রথমজন জানিয়ে দিলেন, তিনি শর্ত সাপেক্ষে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-কে সমর্থন দেবেন। দ্বিতীয়জন বললেন, নরেন্দ্র মোদী ভালো দোস্ত। তাই সমর্থন করা নিয়ে আপত্তি নেই।
অথচ কিছুদিন আগেও বিজেডি কর্ণধার পট্টনায়ক এবং এআইএডিএমকে সুপ্রিমো জয়ললিতা অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি জোট গঠনে উৎসাহী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, যদি কোনও ফেডারেল ফ্রন্ট গঠিত হয়, তা হলে তাতে তাঁরা শামিল হবেন। তৃণমূল কংগ্রেস এই ডাকে সাড়া দিয়েছিল এবং বলেছিল, জয়ললিতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন করতে তারা তৈরি। অন্যদিকে, বামেরা নিজেদের জোটে এই দুই দলকে পেতে আগ্রহী ছিল। শেষ পর্যন্ত বিজেডি এবং এআইএডিএমকে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে মনস্থির করল। জাতীয় রাজনীতিতে পাদপ্রদীপের আলোয় থাকতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজেডি নেতা প্রভাত ত্রিপাঠী বলেন, "সারা দেশের মানুষের ইচ্ছা এবং ওডিশার স্বার্থের কথা মাথায় রেখে আমরা এনডিএ-কে শর্ত সাপেক্ষে সমর্থন দিতে তৈরি। বিনিময়ে ওডিশাকে বিশেষ রাজ্যে মর্যাদা দিতে হবে।" তিনি জানান, এনডিএ-কে সমর্থন দেওয়া নিয়ে খুব শীঘ্র উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবে দল। প্রসঙ্গত, আগে এনডিএ-রই শরিক ছিল বিজেডি। মতভেদ হওয়ায় কিছুদিন আগে বেরিয়ে এসেছিল তারা। আবার সেই পুরনো সম্পর্ক জোড়া লাগতে চলেছে।
অন্যদিকে, সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও শর্ত উল্লেখ করেনি এআইএডিএমকে। দলের নেতা কে মলয়স্বামী জানান, "নরেন্দ্র মোদী এবং জয়ললিতার রাজনীতিক আদর্শ আলাদা। কিন্তু উনি ম্যাডামের ভালো বন্ধু। উনি প্রধানমন্ত্রী হলে ম্যাডাম উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।"
জয়ললিতার দলের এই ডিগবাজি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে ভালো খবর নয়। কারণ এর ফলে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে আরও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লেন। পাশাপাশি, এনডিএ নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা না পেলেও চিন্তা নেই নরেন্দ্র মোদীর। বিজেডি ও এআইএডিএমকে-র সমর্থন নিয়ে অনায়াসে সরকার গড়ে ফেলবেন তিনি। সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে তখন বিজেপি ঠেসে ধরবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। ফলে, তৃণমূল নেতারা যে বলছিলেন, কেন্দ্রে সরকার গঠনের চাবিকাঠি তাঁদের হাতে থাকবে, সেই দাবিও অসাড় হয়ে পড়ল।