পাসপোর্ট-আধার-ভোটার-এ নাগরিকত্ব প্রমাণ নয়, প্রয়োজন জন্ম নথি
নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে যখন গোটা দেশ জুড়ে বিভ্রান্তি দূর করতে ও বিক্ষোভ শান্ত করতে শুক্রবার একটি এই আইন সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জানিয়ে নথি প্রকাশ করেছিল পিআইবি। সেখানেই অনেকবার উল্লেখিত ছিল আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডের কথা। যার ফলে মনে করা হয়, তবে এই নথিগুলিকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসাবে গ্রহণ করবে সরকার। তবে সেই বিষয়টি নস্যাৎ করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা। তারা সাফ জানিয়ে দেন, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদির কোনওটাই কোনওভাবেই নাগরিক পরিচয়পত্র হিসাবে বিবেচিত হবে না। এই সবকটাই বসবাসের শংসাপত্র।

উঠেছে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন
এরপরেই প্রশ্ন ওঠে যে তবে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে কী লাগবে? কোন নথি বা গ্রাহ্য করবে সরকার। পাশাপাশি প্রশ্ন ওঠে অসম এনআরসি ও বাকি দেশের এনআরসি প্রক্রিয়া আলাদা হলে কাট-অফ বছর হিসাবে কোন সালকে বিবেচনা করা হবে?

আদালতও বলছে নাগরকিত্ব প্রমাণ হয় না আধার-ভাটার কার্ডে
কয়েকদিন আগেই এক অনুপ্রবেশকারী বিষয়ক মামলার প্রেক্ষিতে মুম্বইয়ের এক নিম্ন আদালত রায় দেয়, প্যান কার্ড, আধার কার্ড অথবা ডিডের মত নথি কখনই যথেষ্ট নয় নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য। আদালতের তরফে আরও জানানো হয়, নাগরিকত্ব প্রামান করতে অবশ্যই প্রমান স্বরূপ জন্মের প্রামণ পত্র, জন্মের স্থান, বাবা-মায়ের জন্ম স্থান এবং নাগরিকত্বের পরিচয় দরকার। এনেকটা একই সুরে নাগরিকত্ব বিষয়ক প্রমাণের নথির বিষয়ে বললেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তা।

নতুন রার্ড ইস্যু সবাইকে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব আইনের ১৪এ ধারায় নাগরিক পরিচয়পত্র তথা কার্ডের উল্লেখ রয়েছে। সেই কার্ডটি ইস্যু করা হবে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তথা ন্যাশনাল রেজিস্টার অব ইন্ডিয়ান সিটিজেনস চূড়ান্ত হওয়ার পর। এনআরসিতে যাঁদের নাম থাকবে তাঁরাই কেবল ওই নাগরিক পরিচয়পত্র পাবেন। এদিকে প্রশ্ন ওঠে তবে ভারতীয় নাগরিক কারা? সেই বিষয়টিও পরিস্কার করে দেন সেই কর্তারা।

এনআরসি হলে কাট-অফ সাল কোনটা?
১৯৮৭ সালের আগে জন্মগ্রহণ করলে বা কারও বাবা-মা ১৯৮৭-র আগে জন্মগ্রহণ করলে তারা আইন অনুসারে ভারতীয় নাগরিক। নাগরিকত্ব সংশোধন আইন ২০১৯-এর পর এনআরসি নিয়ে কারও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। দেশের শীর্ষ সরকারী আধিকারিক শুক্রবার এই ভাষাতেই আশ্বস্ত করলেন আপামর ভারতবাসীকে।

শুধুমাত্র অসমের ক্ষেত্রে কাট-অফ সাল ১৯৭১
নাগরিকত্ব আইন ২০০৪-এর সংশোধনী অনুসারে যাদের পিতা বা মাতার একজন ভারতীয় এবং অন্যজন অবৈধ অভিবাসী, তাদেরও ভারতীয় নাগরিক হিসাবে বিবেচিত করা হবে। সিএএর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এবং সম্প্রতি প্রচারিত আইন সম্পর্কে বিভিন্ন সংস্করণ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। তার মধ্যেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে এই স্পষ্ট ধারণা দিলেন তিনি। শুধুমাত্র অসমের ক্ষেত্রে ভারতীয় নাগরিকত্ব শনাক্তকরনের জন্য সময় মাপকাঠি ১৯৭১।