আসল নায়ক এঁরাই! স্বেচ্ছায় আগুন থেকে মানুষকে রক্ষা করে চলেছেন প্রৌঢ় বিপিন
খবর পেলেই স্বেচ্ছায় আগুন নেভাতে বেরিয়ে পড়েন কলকাতার বিপিন গণোত্রা। ১২ বছর বয়সে বিপিন গনোত্রা তাঁর দাদাকে দীপাবলীর দিন আগুনে পুড়ে যেতে দেখেছিলেন। কিশোর বিপিনের মনে এই ঘটনা গভীর ক্ষত তৈরি করে
১২ বছর বয়সে বিপিন গনোত্রা তাঁর দাদা নরেন্দ্রকে দীপাবলীর দিন আগুনে পুড়ে যেতে দেখেছিলেন। তারপর থেকে একমাস ধরে যমে-মানুষে টানাটানির পর মৃত্যু।
কিশোর বিপিনের মনে এই ঘটনা গভীর ক্ষত তৈরি করে। সেইবয়সেই সে ঠিক করে, আর কাউকে আগুনে পুড়ে মরতে দেবেন না। সেই থেকে নিজে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে লোকের প্রাণ বাঁচিয়ে চলেছেন বিপিন।
ছোট্ট বিপিন আজ ৬২ বছরের প্রৌঢ়। প্রায় চার দশক ধরে শুধুমাত্র মানুষকে সাহায্য করার টানে কাজ করে চলেছেন তিনি। দাদা মারা যাওয়ার পর, পড়াশোনার আর বেশি দূর করা হয়নি।
স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিপরীতে ২৭ দেবেন্দ্র মল্লিক স্ট্রিটের প্রথম তলে ছোট্ট একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকেন বিপিন গণোত্রা । দিনরাত সজাগ দৃষ্টি রাখেন টিভিতে, অথবা রেডিওর খববে। শহরের কোথাও কোনও আগুন লাগার খবর পেলেই, ছুটে যান সেখানে। মাঝে মধ্য়ে খবর জানতে সরাসরি ফোন করে নেন কলকাতার দমকলের সদর দফতরেও। কখনও কখনও নিজে খবর পেলে দমকলে খবর দিয়ে নিয়ে সরাসরি ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান দমকলবাহিনী পৌঁছনোর অনেক আগেই। বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার করে ট্যাক্সি করে পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে।
১৯৭৮
সালে
প্রথম
কোনও
আগুন
লাগার
ঘটনায়
হাত
লাগান
বিপিন
গণোত্রা।
তারপর
থেকে
প্রায়
চারদশক
ধরে,
এইকাজই
করে
চলেছেন
বিপিন
গণোত্রা।
১৯৯৩-এর
বউবাজার
বিস্ফোরণ
,
কলকাতার
স্ট্র্যান্ড
রোডের
আগুন,
নন্দরাম
মার্কেটে
আগুন
অথবা
আমরি
হাসপাতালে,
বিপিন
গণোত্রা
সব
জায়গাতেই
পৌঁছে
গিয়েছেন
এবং
বহু
লোকের
প্রাণ
বাঁচিয়েছেন।
সবই
স্বেচ্ছ্বায়
আর
মানবতার
খাতিরে।
তাঁর
গুজরাত
যোগ
থাকলেও,
জন্ম
এবং
বেড়ে
ওঠা
এই
কলকাতাতেই।
বিপিন
গণোত্রার
বাবা-মা
দাদাকে
নিয়ে
কলকাতার
এই
ফ্ল্যাটে
এসেই
উঠেছিলেন।
৫৬
সালের
১৫
ডিসেম্বর
কলকাতাতেই
জন্ম
তাঁর।
ব্যক্তিগত জীবনে স্কুল ছুট বিপিন গণোত্রা পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। মিটার লাগানোর কাজও করেন তিনি। এই মুহুর্তে বড়বাজার এলাকায় পুরনো বাড়িতে সিইএসসি নতুন মিটার লাগানে বন্ধ করে দেওয়ায় এই বয়সেও পেশা নিয়ে একটু চিন্তিত বিপিন গণোত্রা।
দমকল বিভাগ একলক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু দমকল বিভাগ থেকে ঘোষণা মতো মেলেনি সেই টাকা।
সম্প্রতি গুজরাতি পদ্মশ্রী প্রাপক হিসেবে সুরাটে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। সেখানে পুরস্কার নিয়েও ফিরে এসেছেন ভাল লাগার শহর কলকাতায়।