প্রাজ্ঞ আইনজীবী থেকে বিজেপির ক্রাইসিস ম্যান, অরুণ জেটলির জীবনী একনজরে
দিল্লির সেন্ট জেভিয়ার্সে স্কুল জীবন শুরু। ছাত্র অবস্থাতেই এবিভিপির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় অরুণ জেটলির।
দিল্লির সেন্ট জেভিয়ার্সে স্কুল জীবন শুরু। ছাত্র অবস্থাতেই এবিভিপির সঙ্গে চিরনিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয় অরুণ জেটলির। পরে সারা দেশে জরুরি অবস্থার সময় কারান্তরালে থাকতে হয়েছে। আইনজীবী হিসেবে বহু মামলার সওয়াল করেছেন। মন্ত্রী ছিলেন বাজপেয়ী এবং প্রথম মোদী সরকারে। এছাড়াও কোনও কোনও সময় সরকারে প্রধান সমস্যা সমাধানকারী হয়ে উঠতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
অরুণ জেটলির জীবনের নানা মুহূর্ত একনজরে
ছাত্রজীবন
স্কুল জীবন শুরু করেছিলেন দিল্লির সেন্ট জেভিয়ার্সে( ১৯৫৭ থেকে ৬৯)। ১৯৭৩ সালে দিল্লির শ্রীরাম কলেজ থেকে বিকমে স্নাতক হন। ১৯৭৭ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময়েই অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সংস্পর্শে আসেন তিনি। ১৯৭৪ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। দেশে জরুরি অবস্থায় সময় ১৯ মাস তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছিল। ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি জয়প্রকাশ নারায়ণের সংস্পর্শে আসেন। তবে জরুরি অবস্থার পরেই তিনি জনসংঘে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে বিজেপি যুব মোর্চার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়। ১৯৮০ সালে দিল্লি বিজেপির সেক্রেটারি করা হয় তাঁকে।
আইনজীবী জেটলি
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে জেটলি দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯০ সালে দিল্লি হাইকোর্টে সিনিয়র অ্যাডভোকেটের মর্যাদা পান। ১৯৮৯ সালে দেশে ভিপি সিং-এর নেতৃত্বাধীন জনতা দল সরকারের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকে আইনি সাহায্য পেয়েছেন বহু মানুষ, দলমত নির্বিশেষে। সেই তালিকায় যেমন রয়েছেন, শারদ যাদব, তেমনি তালিকায় রয়েছেন কংগ্রেসি মাধবরাও সিন্ধিয়া কিংবা এলকে আডবাণী। বোফর্স মামলার কাগজপত্র তিনিই তৈরি করেছিলেন বলেও জানা যায়। বহুজাতিক সংস্থা পেপসিকোর হয়েও মামলা লড়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক জীবন
অরুণ জেটলি বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতিতে ১৯৯১ সাল থেকে। বিজেপির মুখপত্র হয়েছিলেন ১৯৯৯ সালে। অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ১৯৯৯-এর ১৩ অক্টোবর। এছাড়াও বিলগ্নিকরণ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রীও করা হয়েছিল তাঁকে। একটা সময় বাজপেয়ী সরকারের আইনমন্ত্রী এবং বাণিজ্যমন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। ২০০৪-এর ভোটে বিজেপি হেরে যাওয়ার পর ২০০৯-এর ৩ জুন রাজ্যসভায় বিরোধী নেতা করা হয়েছিল। একব্যক্তি এক পদের নীতিতে তিনি বিজেপির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
তবে যতদিন তিনি সাংসদ কিংবা মন্ত্রী ছিলেন ততদিন তিনি রাজ্যসভার সদস্য হিসেবেই কাটিয়ে গিয়েছেন। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে অমৃতসর আসন থেকে তিনি হেরে যান কংগ্রেস প্রার্থী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-এর কাছে। পরবর্তী সময়ে তাঁকে গুজরাত থেকে রাজ্যসভায় নিয়ে আসা হয়।
প্রথম
নরেন্দ্র
মোদী
সরকারের
শুরু
থেকেই
তিনি
অর্থমন্ত্রী
ছিলেন।
এছাড়াও
তিনি
বাণিজ্য
এবং
প্রতিরক্ষা
মন্ত্রকের
দায়িত্বও
সামলেছেন।
এছাড়াও
কোনও
কোনও
সময়
সরকারে
প্রধান
সমস্যা
সমাধানকারী
হয়ে
উঠেছিলেন।
তাঁর
অর্থমন্ত্রী
থাকার
সময়েই
৫০০
ও
১০০০
টাকার
নোট
বাতিলের
সিদ্ধান্ত
নেওয়া
হয়।
ভগ্ন
স্বাস্থ্যের
কারণে
২০১৯-এর
লোকসভা
নির্বাচনে
তিনি
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করেননি।
ব্যক্তিগত জীবন
ব্যক্তিগত জীবনে অরুণ জেটলি বিয়ে করেছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী গিরধারীলাল ডোগরার কন্যা সঙ্গীতাকে। এক ছেলে এক মেয়ে রোহন এবং সোনালী, দুজনেই আইনজীবী। গতবছরের ১৪ মে তাঁর কিডনি পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই সময় পীষূষ গোয়েল অর্থমন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন। গতবছরের এপ্রিল থেকে অফিস যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। পরে ২৪ অগাস্ট ফের অফিসে যোগ দেন। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে ওজন কমাতে তাঁর বেরিয়াট্রিক সার্জারি হয়েছিল।