বিনোদ থেকে কফিন ডান্স, করোনা বছরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব ট্রেন্ড মন জয় করেছে নেটিজেনদের
বিনোদ থেকে কফিন ডান্স, করোনা বছরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব ট্রেন্ড মন জয় করেছে নেটিজেনদের
২০২০ সাল এমন একটি বিপর্যয়ের বছর, যা মনে থাকবে সারা জীবন। কারণ এই বছরেই করোনা ভাইরাস মহামারিতে পরিণত হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সবকিছু ধুয়ে মুছে দিয়েছে, পঙ্গপালের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ট মানুষের জীবন, দাবানল হেক্টর হেক্টর জমি পুড়িয়ে দিয়েছে, ঘন ঘন ভূমিকম্প মানব জীবনকে বিব্রত করেছে, বিনোদন জগত হারিয়ে ফেলেছে কিছু অসাধারণ অভিনেতাকে, বহু ব্যবসা তাদের ঝাঁপি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এ বছর বহু চড়াই–উৎরাইয়ের মধ্যেও কিছু দারুণ মজাদার পোস্ট ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীকে হাসিয়েছে।
করোনা ভাইরাস
করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে যখন বিশ্ববাসী চিন্তিত তখন এই মারণ ভাইরাস নিয়ে মজাদার পোস্ট মানুষকে উদ্বেগের মধ্যেও হাসতে বাধ্য করেছে। ২০২০ সালকে বর্ণনা করতে হলে আমাদের শব্দভাণ্ডারে ইতিমধ্যেই ঢুকে গিয়েছে মাস্ক, স্যানিটাইজার, সামাজিক দুরত্ব, লকডাউন, কার্ফু, মহামারির মতো শব্দ। আর অবশ্যই কিছু হাস্যকর মিমও। শুধুমাত্র নেটিজেনরাই নয়, কোভিড সতর্কতা ও সামাজিক দুরত্ব নিয়ে সচেতনতা গড়তে পুলিশও মজার মজার মেম সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে শুরু করে। এখানেই শেষ নয়, কোভিড ভ্যাকসিন যখন কেউ শোনেননি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস আটওয়ালে করোনা ভাইরাস নিয়ে স্লোগান তৈরি করে ফেললেন, ‘গো করোনা গো' আজও সকলের মনের মধ্যে গেঁথে আছে।
বিনোদ
কিছুদিন
আগেই
ইন্টারনেটে
ভাইরাল
হয়
‘বিনোদ'।
কিন্তু
কে
এই
বিনোদ?
রাতারাতি
কেনই
বা
সে
এত
বিখ্যাত
হল
এই
নাম?
সোশ্যাল
মিডিয়ায়
বিনোদ
এল
কোথা
থেকে?
আসলে
ইউটিউবের
জনপ্রিয়
চ্যানেল
স্লেভি
পয়েন্ট।
সেই
চ্যানেলের
একটি
এপিসোডে
ভিডিওর
নীচে
আসা
কমেন্ট
নিয়ে
আলোচনা
করেছিলেন
দুই
সঞ্চালক।
সেই
ভিডিওটি
ভাইরাল
হয়।
সেখানেই
বিনোদ
থারু
নামের
এক
ব্যক্তি
কমেন্টে
লেখেন
বিনোদ।
আশ্চর্যের
বিষয়,
কমেন্টটিতে
সাতটি
লাইকও
পান
ওই
ব্যক্তি।
সেই
শুরু।
তারপর
থেকেই
শুরু
হয়
বিনোদের
জনপ্রিয়তা।
তখন
ফেসবুক,
টুইটারে
বিনোদের
নামের
ছড়াছড়ি।
সঞ্চালকদের
ব্যাখ্যা
ছিল,
প্রত্যেকের
মধ্যেই
এই
বিনোদ
থাকে।
আর
তাঁদের
এই
মন্তব্য
ভাইরাল
হতে
সময়
নেয়নি।
আর
তারপরেই
তা
মিম
হতে
শুরু
করে।
নিমেষে
ছড়িয়ে
পড়ে
সোশ্যাল
মিডিয়ায়।
উন্মাদনা
এমন
জায়গায়
পৌঁছে
যায়
যে
পেটিএম
তার
নামও
বদলে
‘বিনোদ'
করে
ফেলে।
ট্রেন্ডে
গা
ভাসিয়ে
পেটিএমের-এর
অফিশিয়াল
টুইটার
অ্যাকাউন্টের
নাম
বদলে
হয়ে
যায়
বিনোদ।
এক্স এই এ–১২
মে মাসে টেসলা প্রধান এলন মাস্ক ও তাঁর সঙ্গী তাঁদের ছেলের নাম রাখেন ‘এক্স এই এ-১২ মাস্ক'। যা নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া আইনের কাছে কঠিনতার মুখোমুখি হতে হয় তাঁদের। কারণ এই নামে না রয়েছে কোনও সংখ্যা বা বিশেষ চিহ্ন, তাই আদালত জানায় যে কোনও নাম ইংরেজি বর্ণমালার মধ্যে সীমাবদ্ধ করা উচিত। আর এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গিয়েছে মিম আর অনলাইন জোকে। বেআইনি না হলেও এই নাম সিদ্ধ নয়, জানিয়েছেন তাঁদের পরিবারের আইনজীবী ডেভিড গ্লাস। ক্যালিফোর্নিয়ায় ইংরেজি ভাষার ২৬টি অক্ষরের মধ্যে থেকেই শিশুর নাম বাছতে হবে। তাই নামে সংখ্যা, রোমান হরফ, ইমোজি বা অন্য কোনও প্রতীক ব্যবহার করা সম্ভব নয়। যদিও অ্যাপোস্ট্রফি চলে যেমন ও'কোনোর। তাই এমন উদ্ভট নাম নিয়ে জোরাজুরি করতে গেলে শিশুটির জন্মের শংসাপত্র নাও মিলতে পারে। তাই বাধ্য হয়ে শিশুটির নাম বদলাতে বাধ্য হন মা-বাবা।
রসোরে মে কউন থা
ভাইরাল ভিডিওর তালিকা তৈরি হচ্ছে আর সেখানে রসোরে মে কৌন থা থাকবে না সেটা কি হয়? সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার যশরাজ মুখাটে ‘সাথ নিভানা সাথিয়া' ধারাবাহিকের কয়েকটি সাধারণ সংলাপ দিয়েই এই দুর্দান্ত ভিডিওটি তৈরি করেছিলেন। আর তারপরই এই ভিডিওটি অসম্ভব ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিনোদন থেকে সাধারণ নেটিজেন এই ভিডিও নিয়ে নানান ধরনের পোস্ট করতে থাকেন। এই র্যাপ এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে বিজেপির সম্বিত পাত্র কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করতে টেলিভিশন বিতর্কে এটি ব্যবহার করেন।
টিকটক–পাবজি
করোনা মহামারির পাশাপাশি পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন মুখোমুখি সংঘর্ষের জেরে ভারতে চিন-বিরোধী মনোভাবের সৃষ্টি হয়। যার জেরে চিনা পণ্য একরকমভাবে বয়কট করে দেশবাসী। তবে তাদের মোবাইলে তখনও টিকটক ও পাবজি অ্যাপ ছিল। কেন্দ্রের নির্দেশে জনপ্রিয় এই দু'টি চিনা অ্যাপ ভারতে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। যার ফলে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী এতে প্রভাবিত হয়। অনেক টিকটক তারকা ও পাবজি খেলোয়াড় হতাশ হয়ে পড়েন।
কফিন ডান্স
কফিন কাঁধে করে রীতিমতো নাচছেন ঘানার বেশ কিছু যুবক। এটি ঘানার কফিন ডান্স বলে পরিচিত, যা খুব শীঘ্রই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ট্রেন্ডিং তালিকায় এই ডান্স সবার ওপরে রয়েছে। তামিলনাড়ুর কুড্ডালোর জেলার পুলিশ কফিন ডান্সের মাধ্যমে নাগরিকদের সামাজিক দুরত্ব ও বাড়িতে থাকার গুরুত্ব বুঝিয়েছিলেন।
হাসপাতালে নাচের ভিডিও
এইরকম ভিডিও করোনা কালে অনেক এসেছে। মোটামুটি সব ভিডিওই নেটিজেনরা পছন্দ করেছেন। আমরা যখন সুস্থ শরীরে নিজেদের বাড়িতে আরাম করছি, তখন অনেকেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। সব চেয়ে বেশি মানসিক চাপে ছিলেন ডাক্তার আর স্বাস্থ্য কর্মীরা। তাই এই ভিডিও ছিল অনেকটা স্ট্রেস বাস্টারের মতো।
সবকিছুই যখন কেক
করোনা ভাইরাস ও লকডাউন মানুষকে ঘরে আটকে রেখে সকলের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা বের করে এনেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হল এখন সকলেই ঘরে ঘরে কেক তৈরি করছেন। আর এমন সব কেক তৈরি হচ্ছে যা চমকে যাওয়ার মতো। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেইরকম কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে নরম পানীর ক্যান, মানুষের হাত, ইঁদুর,জুতো, জলের গ্লাস সবই আসলে কেক।
গ্যারেজ যখন ক্লাসরুম
লকডাউন শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। অনলাইন এডুকেশনের মাধ্যমে একটা বিকল্প ব্যবস্থা হয়েছে বটে। তবে ক্লাসে গিয়ে যে মজা পাওয়া যায়, সেটা কী আর অনলাইনে হয়। তাই একজন আমেরিকান বাবা তাঁর মেয়ের জন্য নিজের গ্যারেজকে ক্লাসরুমে পরিণত করেন। কাট আউটে লাগিয়ে দিলেন আইপ্যাড। যেখানে রয়েছে শিক্ষিকার মুখ। অনেকেই তাঁর এই অভিনব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। আর তার সঙ্গে ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিওটি।
সাডা কুত্তা টমি
‘সাডা কুত্তা কুত্তা', এখন এই লাইনেই মজে গোটা নেট দুনিয়া। শুধু দোকানপাটেই নয়,সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করতে থাকলে কেবল এই দু'টি গানের ভিডিয়ো দেখতে পেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই র্যাপ গানের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলতে হলে বিগ বস-এর কথা উল্লেখ করা দরকার। বিগ বস-এর ১৩ নম্বর সিজনে প্রতিযোগী শেহনাজ গিল ঝগড়া করতে করতে বলেছিলেন, ‘কী করব আমি? মরে যাব? তোমার অনুভূতিই অনুভূতি। আমার কোনও আবেগ নেই? তোমার কুকুর টমি। আর আমার কুকুর কেবল কুকুর?' যেমন ভাবে তিনি কথাগুলো বলেছিলেন, তা মানুষের কানে লেগে ছিল বহু দিন পর্যন্ত। সেই জনপ্রিয় সংলাপের উপর ঢোল, কি-বোর্ড চাপিয়ে তৈরি হয়ে গেল নতুন র্যাপ। সঙ্গীতশিল্পী যশরাজ মুখাটের মস্তিষ্কপ্রসূত র্যাপে মেতেছে গোটা সোশ্যাল মিডিয়া।
কৃষি বিল বিরোধী প্রস্তাবে সম্মতি, ঘরে-বাইরে বিতর্কের মুখে কেরলের বিজেপি বিধায়ক