৫০০ টাকা নিয়ে ছেলেকে অজ্ঞাতবাসে হিরে ব্যবসায়ীর ছেলে, এই গল্প সিনেমাকে হার মানায়
বাবার ৬ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা ও বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে সাধারণ মানুষের মত কীভাবে বাঁচতে হয়, সেই শিক্ষাই দিতে চেয়ে ছেলেকে অজ্ঞাতবাসে পাঠিয়েছিলেন বাবা ।
হাতে মাত্র ৫০০ টাকা দিয়ে হায়দরাবাদে কাজের জন্য় ছেলেকে পাঠিয়েছিলেন হিরে ব্যবসায়ী ধনশ্যাম ঢোলাকিয়া। বাবার ৬ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা ও বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে সাধারণ মানুষের মত কীভাবে বাঁচতে হয়, সেই শিক্ষাই দিতে চেয়েছিলেন ছেলে হিতার্থকে। শেষ পর্যন্ত সফল হলেন ছেলে হিতার্থও।
না, কোনও হিন্দি ছবির গল্প নয়। এই ঘটনা একেবারেই সত্য। ৫০০ টাকা হাতে পেয়ে হিতার্থের জন্য প্রথম শর্ত ছিল, এই টাকা দিয়ে কোনও সংস্থায় কমপক্ষে ১ সপ্তাহ কাজ করা। সম্প্রতি বাবা ঘণশ্যাম ঢোলাকিয়ার দেওয়া চ্যালেঞ্জ জিতে ফিরে এসেছেন হিতার্থ। ৫০০ টাকা হাতে নিয়ে বেরিয়ে এখন তিনি ৫ হাজার টাকা ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। কেমন ছিল সেই কঠিন সফর।
হিতার্থ জানিয়েছেন, একদিন হঠাৎ তাঁর হাতে একটি খাম তুলে দেন ঘণশ্যাম। খাম খুলে তিনি দেখেন তাতে ৫০০ টাকার একটি নোট ও হায়দরাবাদের টিকিট। ছিল না কোনও পরিচয়পত্র, এটিএম কার্ড বা মোবাইল ফোন। এমনকী বাবার পরিচয়ও তিনি দিতে পারবেন না বলে শর্ত দেওয়া হয়েছিল। হায়দরাবাদে পৌঁছে হিতার্থের প্রথম প্রশ্ন ছিল কোথায় থাকবেন। সারাদিন চাকরি খোঁজার পর আরকে লজের মালিকের বদান্যতায় পরিচয়পত্র ছাড়াই তাঁকে থাকতে দেওয়া হয়। ফুটপাথের একটি হোটেলে ২০ টাকা দিয়ে ভাত খেতেন তিনি। হিতার্থ জানাচ্ছেন, জীবনে এই ধরনের খাবার খাননি তিনি।
পরের শর্ত ছিল একসপ্তাহের জন্য চাকরি। দুদিন ঘুরে বেড়ানোর পর শেষ পর্যন্ত ম্য়াকডোনাল্ডসে একটি চাকরি জুটিয়েও ফেলেন তিনি। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে ওই কদিনের টাকা পেতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত জীবনের প্রথম দেড় হাজার উপার্জন করেন তিনি। এরপর আরও একটি সংস্থায় মার্কেটিংয়ের চাকরি পান তিনি। সারাদিন ধরে একটি বাইক নিয়ে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি ঘোরা ও ডেলিভারি দেওয়া এবং দিনের শেষে বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে ফিরতে হত তাঁকে। এভাবেই তিনটি সংস্থায় চাকরি করে তিনি বুঝেছিলেন, জীবন কতটা কঠিন। সহকর্মীদের কাছ থেকে অনেক কিছুই তিনি শিখেছেন বলে জানিয়েছেন হিতার্থ।
হিতার্থের বাবা ঘনশ্যাম ঢোলাকিয়া জানিয়েছেন, এই সংগ্রাম তাঁদের পরিবারের একটা পরম্পরা। বাড়ির প্রত্যেক সদস্যকেই কিছুদিনে জন্য অজ্ঞাতবাসে পাঠানো হয় যাতে তাঁরা জীবনের কঠিন বাস্তবটা বুঝতে পারেন।