পুলিশ সুপার থেকে সিবিআই কর্তা! উচ্ছ্বাস দেখিয়ে যেভাবে পদোন্নতি হারালেন এই বিহারী পুলিশ কর্তা
পদোন্নতিতে দারুন খুশি ছিলেন তিনি। সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইন্ডিয়া বা সিবিআইয়ের অফিসার হওয়ার স্বপ্ন সব আইপিএস অফিসারেরই থাকে। বেশিরভাগেরই সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না।
পদোন্নতিতে দারুন খুশি ছিলেন তিনি। সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইন্ডিয়া বা সিবিআইয়ের অফিসার হওয়ার স্বপ্ন সব আইপিএস অফিসারেরই থাকে। বেশিরভাগেরই সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না। কিন্তু বিহারের কাটিহারের পুলিশ সুপারের পদ থেকে তিনি এক ধাক্কায় পৌঁছে গিয়েছিলেন সেই অভিষ্ঠ লক্ষ্যেই। তাতেই বোধহয় উচ্ছাসের মাত্রাটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল। উচ্ছাস প্রকাশের ধরণে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে তাঁর দায়িত্ববোধ নিয়ে। যার জেরে বাতিল হয়ে গেল তাঁর পদোন্নতি।
তিনি সিদ্ধার্থ মোহন জৈন। তাঁর সঙ্গে একই সঙ্গে বদলির নির্দেশ এসেছিল মিথিলেশ মিশ্রর। এই দুই অফিসারকে বিদায় জানাতে একটি পার্টি দেওয়া হয়েছিল। এক গলভ কোর্সে বহুরাত পর্যন্ত চলা সেই পার্টির একটি ভিডিও সামনে এসেই বিপাকে পড়েছেন সিদ্ধার্থ। কি রয়েছে ভিডিওতে? দেখা যাচ্ছে পার্টিতে গান গাইছেন মিথিলেশ। শোলা সিনেমার সেই বিখ্যাত গান, 'ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোরেঙ্গে...'। আর সেই গানের তালে তালে নাচছেন অনেক পুলিশই। এ অবধি ঠিকই ছিল।
হঠাৎই আবেগাপ্লুত সিদ্ধার্থকে দেখা যায় বাজনার তালে তালে নিজের সার্ভিস রিভলভার বের করে শূন্যে গুলি ছুরতে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন ওই রাতে মোট ন'রাউন্ড গুলি ছোরেন ওই অফিসার। ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও সিদ্ধার্থর মতো একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার এই দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ দেখে বিস্মিত হয়ে গিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। এরপর আর তাঁকে সিবিআই-এর মতো বড় জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ভরসা পাননি তারা।
উল্টে সারভিস রিভালবার থেকে গুলি ছোরা নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তদন্ত। তাই কাটিহার পুলিশ বিভাগের সঙ্গেও আপাতত 'দোস্তি' ভাঙছে না তাঁর। এক পদস্থ পুলিশ কর্তা এস কে সিঙ্ঘল বলেন, 'সিবিআই-তে যোগ দিতে চেয়ে জৈন যে ডেপুটেশন দিয়েছিলেন, তা খারিজ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।'
উত্তর ভারতে বিবাহ কিংবা কোনও অনুষ্ঠানে শূন্যে গুলি ছোরার প্রথা রয়েছে। কিন্তু অনেকসময়ই তা থেকে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। জৈন-এর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলেও সরকারি বন্দুকের অপব্যবহার নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
তবে সিদ্ধার্থ একাই নন। বিহারে পুলিশের বড়কর্তাদের দায়িত্বহীন আচরণের আরও নানা নজির রয়েছে। তাঁদের কারণে বিভিন্ন সময়ে মুখ পুড়েছে পুলিশ বিভাগের। এদিনই বিহারের আরেক বদলি হওয়া পুলিশ সুপারের ভিডিও নিয়েও হইচই পড়ে গিয়েছে।
তবে তিনি সিবিআইতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন না, মুঙ্গের থেকে বদলি হয়েছেন ভাগলপুরে। সেই খুশিতেই তঁাকে মাঝরাস্তায় দলবল নিয়ে গলায় গাঁদার মালা পড়ে উদ্দাম নৃত্য করতে দেখা গিয়েছে। এই ঘটনারও তদন্ত শুরু হয়েছে।