‘বন্ধু’ মোদী নাকি ‘দাদা’ লালু- কার তীরে ভিড়বে নীতীশের তরী, স্পষ্ট করল জেডিইউ
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা পরম্পরা চিড় ধরিয়ে দিয়েছিল মোদী-নীতীশের পুরনো সম্পর্কে। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে জনতা দল ইউনাইটেড তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল।
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা পরম্পরা চিড় ধরিয়ে দিয়েছিল মোদী-নীতীশের পুরনো সম্পর্কে। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে জনতা দল ইউনাইটেড সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল তাঁরা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর পাশেই থাকবেন। রবিবার নয়াদিল্লিতে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক হয়। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
তবে জনতা দল ইউনাইটেড তথা জেডিইউয়ের আর এক গোষ্ঠী অর্থাৎ শরদ যাদবের গোষ্ঠী আদৌ নীতীশ কুমারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত হবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়। নীতীশ কুমার এদিন জানিয়েছেন, ২০১৯-এ মহাজোটের বিরুদ্ধে মোদীর হাতই তাঁরা ধরবেন, এই সিদ্ধান্ত হয়েছে সর্বসম্মতভাবেই।
এদিন জেডিইউ-এর জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে ২০১৯ লোকসভা ও ২০২০ বিধানসভা ভোট নিয়ে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয় বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধেই তাঁরা লোকসভা ও বিধানসভায় লড়াই করবে। আসন্ন লোকসভায় বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতায় তাঁরা কটি আসন দাবি করবেন, তা নিয়েও একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে এদিন।
৪০ আসনবিশিষ্ট বিহারে গতবার ২২টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। সেখানে মাত্র দু'টি আসন জুটেছিল নীতীশের দলের। তবে বিজেপি বিরোধী মহাজোট করে বিধানসভা নির্বাচনে বাজিমাত করে নীতীশ। নীতীশের জেডিইউ পায় ৭১টি আসন। আর বিজেপি পায় ৫৩টি। এখন এই বিধানসভার নিরিখেই নীতীশের দাবি ২০১৯-এ অন্তত ১৭টি আসন তাঁদের ছাড়তে হবে। তা হলে অন্যান্য শরিকদের বিজেপি কতগুলি আসন ছাড়বে, তা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যায়।
Delhi: Bihar CM Nitish Kumar leaves from JD(U) office after the party's national executive meet. pic.twitter.com/cdCpGOnfKX
— ANI (@ANI) July 8, 2018
জেডিইউ ২০১৯-এ বিজেপির সঙ্গে লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও, আসন বণ্টন নিয়ে যে দু-পক্ষের বিবাদ চরমে উঠবে, তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। কেননা বিজেপি তাঁদের জেতা ২২টি আসন ছাড়বে বলে মনে হয় না। তারপর বিজেপি যদি জেডিইউকে ১৭টি আসন ছেড়ে দেয় হাতে থাকবে মাত্র ১টি আসন।
তাহলে এলজেপি, আরএলএসপি-র মতো দলগুলিকে কটি আসন ছাড়বে তারা? রাজনৈতিক মহল মনে করছে জোটধর্ম পালন করতে গিয়ে বিজেপির কালঘাম ছুটবে বিহারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শরিক ছাড়া লড়াইয়ের জায়গাও নেই, তার উপর বিজেপিকে শরিক ধরে রাখতে মূল্য চোকাতে হতে পারে।
২০১৫ সালে কংগ্রেস ও আরজেডির সঙ্গে মহাজোট গঠন করে বিহারে ক্ষমতায় আসেন নীতীশ। তারপর ২০১৭-তে মহাজোট ছেড়ে ফের বিজেপির হাত ধরেন তিনি। সম্প্রতি ফের লালুর আরজেডির সঙ্গে নীতীশ কাছাকাছি আসতে শুরু করেন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছিল, লোকসভার আগে ফের মহাজোটে ফিরতে পারেন নীতীশ। তবে সেই সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছে মোদীর হাত ধরার কথা ফলাও করে ঘোষণা করেছেন তিনি। এখন দেখরা কোনও অঙ্কে বিহারে বিজেপি-জেডিইউ ও অন্যান্য এনডিএ সহযোগীরা সমঝোতা করে।
[আরও পড়ুন: 'ঘরে'ই বাধার সম্মুখীন মুকুল, সভা করতে না পেরে ধরনায় তোপের মুখে শাসক ]
[আরও পড়ুন: মোদীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়তে পরিকল্পনা মমতার, একুশের আগে জোর টক্কর দুই যুযুধানের]