বিদ্রোহের চোটে হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি, বিহারে গদি বাঁচাতে 'আল্টিমেটাম' পেশ পদ্ম শিবিরের
এনডিএ ভেঙে বেরিয়ে যাবে এলজেপি? এই প্রশ্নের সঠিক জবাব এখনও মেলেনি। তবে বিজেপি যে বর্তমানে এলজেপি বা চিরাগ পাসোয়ানের সঙ্গে কোনও যোগ রাখতে ইচ্ছুক নয়, তা একপ্রকার স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে চিরাগ পাসোয়ান বিজেপি-জেডিইউর অস্বস্তি বাড়িয়ে বিদ্রোহীদের আশ্রয় দিতে শুরু করেছেন। আর এতেই হিমশিম খাচ্ছে বিহার বিজেপি।
হাথরাস কাণ্ডে মুখোশ খুলল যোগীর পুলিশের, ইডির বক্তব্যে আদিত্যনাথের মাথায় হাত
৪২টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেন চিরাগ পাসোয়ান
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই বিহারের ৪২টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেন চিরাগ পাসোয়ান। তাতে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকটি আশনেই বিজেপি এবং জেডিইউর বিক্ষুব্ধদের আসন দিয়েছেন চিরাগ পাসোয়ান। এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, বিজেপি থেকে অন্তত পাঁচজন বিদ্রোহী চিরাগের শরণাপন্ন হয়েছেন। এই বিদ্রোহীদেরই দলে ফেরার আল্টিমেটাম পেশ করলেন বিজেপির বিহার প্রদেশের প্রধান সঞ্জয় জয়সওয়াল।
বিহারে এনডিএতে কোনও ভাঙন নেই
সঞ্জয়ের কথায়, বিহারে এনডিএতে কোনওই ভাঙন নেই। বিহারে এনডিএর প্রধান মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার। এবং নীতীশ কুমারকে যাঁরা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেনে নেবেন, তাঁরাই এনডিএর অংশ হয়ে থাকবে। যাঁরা নীতীশ কুমারের বিরোধিতা করবেন, তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই এনডিএর অংশ নয়।
চিরাগের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে বিজেপি
কিন্তু এলজেপি কেন্দ্রে এনডিএর অংশ কিন্তু, রাজ্যে নয়। এবিষয়ে সঞ্জয় জয়সওয়ালকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর বক্তব্য, এতে কিছু যায় আসে না। শেষ সময়ে রামবিলাস পাসোয়ান নিজে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তিনি যদি কাজ করতে পারতন তাহলে পরিস্থিতি অন্য হত। বর্তমানে সেই দলের হয়ে যাঁরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন, তাঁরা ভুল পথে যাচ্ছেন। আমরা বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। তবে তাঁরা সেটা চায়নি।
নীতীশকে চাপে রাখতেই এলজেপিকে সাহায্য করছে বিজেপি?
এদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন যে আসলে নীতীশকে চাপে রাখতেই পিছন থেকে এলজেপিকে সাহায্য করছে বিজেপি। এবং বিদ্রোহীদের এলজেপির শিবিরে পাঠানোও আসলে বিজেপির চাল। তবে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিজেপি নেতা সঞ্জয় এর বিরোধিতা করেন। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, বিজেপি এই জাতীয় রাজনীতি করে না।
বিদ্রোহী নেতাদের উদ্দেশে আল্টিমেটাম
এরপরই সঞ্জয় জয়সওাল বিদ্রোহী নেতাদের উদ্দেশে আল্টিমেটাম ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ১২ অক্টোবর বিকেল ৫টার মধ্যে যদি বিদ্রোহীরা ফের দলে ফিরে না আসেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে দলের তরফে। তাঁরা দীর্ঘ দিন আমাদের দলের অংশ হিসাবে কাজ করেছেন। আমরা চাই না যে তাঁরা কোনও ভুল পথে যাক।
বিজেপি-জেডিইউ দ্বন্দ্ব
এদিকে মুখে যাই বলা হোক, বিজেপি-জেডিইউর মধ্যেও যে সব ঠইক নেই, তা এখন ওপেন সিক্রেট। বিজেপি জেডিইউ দুই জন নেতাকে তাদের টিকিটে ভোটে দাঁড় করাচ্ছে। প্রমোদ সিনহা এবং ক্রিষ কুমারকে বিজেপি নিজেদের দলে নিয়েছে। এদিকে এর পাল্টা হিসাবে জেডিইউ-ও বিজেপি থেকে অমর কুমার সিং এবং সাবা জাফরতে নিজেদের দলে নিয়ে টিকিট দিয়েছে।
জটিল সমীকরণ
এদিকে এলজেপি যে শুধু মাত্র জেডিইউ বা জিতান রাম মাঁঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার বিরুদ্ধেই প্রার্থী দিয়েছে এমনটা নয়। চিরাগের দল বিজেপরও রণে ভঙ্গ দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। কাইমুর জেলার জেডিইউ-র প্রধান এলজেপিতে যোগ দিয়ে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে বিজেপি এখনও দাবি করছে যে জোটের চারটি দলের মধ্যেই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এবং তাঁরা একসঙ্গে লড়াই করবেন নির্বাচনে।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নয়া সমীকরণ, রামবিলাসের বিদায়ে পরবর্তী কিংমেকারের কে?