বিহার নির্বাচনের প্রথম দফার ১০টি 'সেরা লড়াই', একনজরে হেভিওয়েট প্রার্থীদের তালিকা
সোমবারই শেষ হয় বিহারের প্রথম দফার নির্বাচনী প্রচার। ২৮ অক্টোবর বিহারে প্রথম দফার ভোট। ৭১টি বিধানসভা আসনে প্রার্থীদের ভাগ্যপরীক্ষা হবে আগামীকালই। একদিকে এনডিএ শিবির, যার প্রধান মুখ নীতীশ কুমার। অন্যদিকে রয়েছে আরজেডি, কংগ্রেস ও বাম দলগুলির মিলিত জোট। যাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদব। এই পরিস্থিতিতে একনজরে দেখে নিন আগামীকালকের ভোটে কোন কোন হেভিওয়েটরা নামছেন ময়দানে।
জামুই থেকে বিজেপির প্রার্থী কমনওয়েল্থে সোনা জয়ী শুটার
জামুই থেকে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন কমনওয়েল্থ গেমসে সোনা জয়ী শুটার তথা প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দিগ্বিজয় সিংয়ের মেয়ে শ্রেয়সী সিং। জামুই মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত। শ্রেয়সীকে এই আসন জেতার লক্ষ্যে লড়তে হবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিদায়ী বিধায়ক বিজয় প্রকাশের বিরুদ্ধে।
ইমামগঞ্জ থেকে এনডিএ-র প্রার্থী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
ইমামগঞ্জ থেকে এনডিএ-র হয়ে লড়বেন হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার প্রধান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতেন রাম মাঁঝি। মাঁঝির বিরুদ্ধে আরজেডির তরফে প্রার্থী হয়েছেন উদয় নারায়ণ চৌধুরী। উদয় নারায়ণ বিহার বিধানসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ ছিলেন। তাছাড়া এলাকার বর্ষীয়ান দলিত নেতা হিসাবে পরিচিত তিনি। উদয় নারায়ণ সম্প্রতি নীতীশের জেডিইউ ছেড়ে যোগ দেন আরজেডিতে। এর আগে জেডিইউর হয়ে লড়ে মাঁঝির কাছেই হারতে হয়েছিল উদয় নারায়ণকে।
বিজেপির দুর্গ গয়া
বিগত প্রায় তিন দশক ধরে গয়া বিধানসভা কেন্দ্রটি দখলে রেখেছে বিজেপি। ১৯৯০ সাল থেকে লাগাতার ৭ বার বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন প্রেম কুমার। প্রেম কুমারকে এবার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন কংগ্রেসের আখউরি ওঙ্কার নাথ ওরফে মোহন শ্রীবাস্তব। এর আগে ২০০৫ এবং ২০১০ সালেও প্রেম কুমারের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন মোহন, তবে দুই বারই হারের সম্মুখীন হন তিনি। যদিও ২০০৭ সাল থেকে গয়া শহরের ডেপুটি মেয়র পদে রয়েছেন মোহন।
মাওবাদী অধ্যুষিত জেহানাবাদের লড়াই
বিবহারের জেহানাবাদ থেকে জেডিউর হয়ে লড়ছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী কৃষ্ণ নন্দন ভর্মা। দক্ষিণ বিহারের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা হিসাবে পরিচিত জেহানাবাদ। কৃষ্ণ ভর্মাকে বিরোধীদের তরফে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন প্রয়াত আরজেডি নেতা মুন্দ্রিকা যাদবের ছেলে সুদয় যাদব। প্রসঙ্গত, জেহানাবাদ জেলার বাকি দুই আসন, ধোসি এবং মাখদুমপুর থেকেও কোনও না কোনও সময় নির্বাচিত হয়েছেন কৃষ্ণ ভর্মা। পুরো জেলার উপরই তাঁর আধিপত্য রয়েছে।
জেডিউর দুর্গ দুমরাওঁ
বিহারের দুমরাওঁ আসনটি জেডিউর দুর্গ হিসাবেই পরিচিত। তবে গত দুই বারের বিজয়ী প্রার্থীকে এই আসন থেকে সরিয়ে এবার নয়া প্রার্থী দাঁর করানো হয়েছে। জেডিইউর তরফে অঞ্জুম আরা এই নির্বাচনে দুমরাওঁ আসনের বাজি। এদিকে বিরোধী জোটের তরফে তরুণ অজিত কুমার কুশওয়াহাকে প্রার্থী করেছে সিপিআই-এমএল। এদিকে এই আসনে অন্য এক তরুণ শিবাঙ্গ বিজয় সিং নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন। প্রাক্তন সাংসদ মহারাজা কমল সিংয়ের নাতি তিনি। এদিকে দাদন সিং যাদব গত দুই নির্বাচনে এই আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন জেডিইউর টিকিটে। তবে এবার টিকিট না পেয়ে তিনি নির্দল হিসাবে লড়ছেন।
তারাপুর আসনে আরজেডির চমক
তারাপুর আসনে চমক দিয়েছে আরজেডি। ২৮ বছরের দিব্যা প্রকাশকে প্রার্থী করা হয়েছে এই আসনে। উল্লেখ্য, দিব্যা প্রাক্তন সাংসদ জয়প্রকাশ নারায়ণ যাদবের মেয়ে। এছাড়া দিব্যা এই নির্বাচনের সব থেকে কম বয়সী প্রার্থী। এদিকে এই আসনে জেডিইউর প্রার্থী মেওয়া লাল চৌধুরী। তিনি এই আসন থেকে এর আগে লাগাতার দুইবার বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
দিনারা আসনে এনডিএ বনাম এনডিএ
দিনারা আসনে জেডিইউর তরফে প্রার্থী হয়েছেন জয় প্রকাশ সিং। তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন বিজেপি ছেড়ে সদ্য এলজেপিতে যোগ দেওয়া রাজেন্দ্র সিং। ২০১৫ সালে বিজেপির দুর্গ হিসাবে পরিচিত দিনারা আসন থেকে দাঁড়িয়েছিলেন রাজেন্দ্র। ৩৭ বছর ধরে আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা রাজেন্দ্র সিং পরিচিত ছিলেন তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতার জন্য। তবে রাজেন্দ্র সেবার হেরে গিয়েছিলেন জেডিইউ-র প্রার্থীর কাছে। এহেন রাজেন্দ্র সিংকেই এবার টিকিট দিয়েছে চিরাগ পাসোয়ান।
মোকামা আসনে আরজেডির বাহুবলী প্রার্থী
মোকামা আসনে আরজেডির তরফে প্রার্থী হয়েছেন বহুল আলোচিত বাহুবলী নেতা অনন্ত সিং। বর্তমানে হাজতে থাকা এই নেতা বিহারে ৩৮ জন প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম, যাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। অনন্ত এর আগে নির্দল প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন। এবার তিনি আরজেডির টিকিটে লড়বেন। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে জেডিইউর তরফে প্রার্থী হয়েছেন সমাজ সেবক হিসাবে পরিচিত রাজীব লোচন। এলজেপিও এই আসনে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে।
রাগমগড়ে ত্রমুখী লড়াই বিজেপি-আরজেডি-বিএসপির
১৯৮৫ এবং ২০০৫ সালের মাঝে রামগড় আসন থেকে ৬ বার নির্বাচিত হয়েছিলেন আরজেডির রাজ্য সভাপতি জগতনন্দন সিং। এবার তাঁরই ছেলে সুধাকর সিংকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছে এই আসনে। এদিকে বিজেপির তরফে এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী বিধায়ক অশোক কুমার সিং। এদিকে বিএসপি এই আসনে প্রাক্তন আরজেডি নেতা অম্বিকা সিংকে টিকিট দিয়েছে।
বিজেপি দুর্গ লক্ষ্মীসরাই
লক্ষ্মীসরাই আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা সেই আসনেরই বিদায়ী বিধায়ক বিজয় কুমার সিনহাকে। চিরকালই লক্ষ্মীসরাই আসটি বিজেপির দুর্গ হিসাবে পরিচিত। এদিকে এই আসনে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছে অমরেশ কুমারকে।
বিহারে নীতীশের থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছে বিজেপি? অণুবীক্ষণযন্ত্রের তলায় এনডিএর জোট সমীকরণ