বিহার ভোটের মাঝেই এনডিএর অন্তর্কলহ শুরু! সিএএ নিয়ে ভাবমূর্তির লড়াইয়ে নীতীশ-যোগী
নীতীশ ক্যাম্পকে চাপে রেখে বরাবরই ২০২০ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি সচেতন পদক্ষেপ নিয়েছে বিহারে। নীতীশ কুমারকে পাশে বসিয়ে মোদী সোচ্চার কণ্ঠে 'অব কি বার নীতীশ সরকার' র বদলে 'অব কি বার এনডিএ সরকার' এর বার্তা দিয়েছেন পর পর জনসভায়। এদিকে, গোবলয়ের রাজ্যে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রচার করতে যাওয়ার পরই এনডিএর অন্দরে মতের ফাটল খানিকটা স্পষ্ট হয়।

'ফালতু কথা' কে বলেছেন? কী নিয়ে প্রশ্ন নীতীশের
নীতীশ কুমার কয়েকদিন আগে কিষাণগঞ্জে সভা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ' কিছু মানুষ প্রপাগান্ডা করছে। কে কাকে বের করবে দেশ থেকে? কারোর কোনও ক্ষমতাই নেই কাউকে ভারত থেকে বের করার। আমরা একটা ঐক্যের পরিবেশ তৈরি করেছি সবার জন্য।' এরপরই নীতীশের প্রশ্ন এমন 'ফালতু কথা' কে বলেন?

যোগী বার্তা!
এর আগে বিহারে প্রচারে গিয়ে যোগী আদিত্য়নাথ বলেন , 'অনুপ্রবেশকারীদের ছুঁড়ে ফেলা হবে।' এই প্রসঙ্গে তিনি সিএএ নিয়েও বার্তা দিয়েছেন । আদিত্যনাথ বলেন, 'কোনও অনুপ্রবেশকারী যদি ভারতের সীমার মধ্যে ঢোকার কুৎসিৎ প্রয়াস করে, তাহলে তাকে ভারতের সীমার বাইরে করার প্রয়াস করা হবে।' এরপর তিনি বলেন, "বিহারে কিছু জায়গা যেমন কাটিহারে এমন সমস্যা রয়েছে আমি জানি।' আর যোগীর এই বক্তব্যকে মূলধন করে বিরোধীরা বিজেপির বিরুদ্ধে পারদ চড়িয়েছে। যা নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে নীতীশ ক্যাম্পে।

এনডিএ-তে ফাটল!
এদিকে, এনডিএর অন্দরে ক্রমাগত ফাটল স্পষ্ট হচ্ছে। বিহারে নির্বাচন নিয়ে ক্রমাগত বিজেপি ও জেডিইউএর মধ্যে চাপের পারস্পরিক চোরা স্রোত বইছে। তবে মুখে নীতীশ কুমার মোদীর জয়গান গাইতে ছাড়ছেন না! পাল্টা মোদীও নীতীশের প্রচারে পিছপা হননি। তবে মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে একমাত্র এনডিএ সরকার কেন্দ্রে থাকার সময়ই নীতীশ কুমার কাজ করতে পেরেছেন।

সিএএ ও নীতীশ বনাম যোগী
কাটিহারের সভায় যোগী আদিত্যনাথের সিএএ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যের পর কার্যত সেই বক্তব্যকে 'ফালতু কথা'বলে আখ্যা দিয়েছেন নীতীশ। প্রসঙ্গত, বিহারের নির্বাচেন বিজেপির হাতিয়ার কট্টর হিন্দুত্ব, যার ভাবমূর্তি ধরে রাখতে তারা সচেষ্ট। অন্যদিকে, নিরপেক্ষতা নীতীশের হাতিয়ার। যা ধরে রাখাও পার্টির ভাবমূর্তির কাছে প্রয়োজনীয়। আর ভোটের মাঝে নীতীশের এই বক্তব্যই বিজেপির প্রতি অনীহা স্পষ্ট করেছে। মূলত বিহারের ভোট অঙ্কে যাদব আর মুসলিম ভোট সবসময়ই বেরিয়ে গিয়েছে এনডিএর হাতের বাইরে। এবার জেডিইউ সেই ভোটব্যাঙ্ক দখলের চেষ্টায় রয়েছে। যাতে কার্যত যোগী জল ঢেলেছেন বলে বার্তা বিশেষজ্ঞদের।

এনআরসি থেকে সিএএ নিয়ে জেডিইউ দ্বন্দ্ব
একটা সময় গুজরাত দাঙ্গার পর পর মোদীর কট্টর বিরোধী ছিলেন নীতীশ। এরপর রাজনীতির স্রোতে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। অন্যদিকে, এনআরসি নিয়ে নীতীশের দল জেডিইউয়ের মধ্যেও সমস্য়া জাগে। নীতীশ প্রশান্ত কিশোর দ্বন্দ্ব তুঙ্গে ওঠে। নীতীশ নিজেও জানান এনআরসি লাগু হবে না বিহারে। এমম এক পরিস্থিতিতেল যোগীর সিএএ বার্তা রীতিমতো ক্ষুব্ধ করেছে নীতীশকে।