(ছবি) বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের ফল : রাজনৈতিক মহলে কে কী বলছেন
বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলের নজর ছিল বিহারেই। তার অন্যতম কারণ, মোদী ঝড় থামাতে একদা একে অপরের কট্টর বিরোধী লালু প্রসাদ যাদব ও নীতিশ কুমার যেভাবে হাত মিলিয়ে মহাজোট গড়েছিলেন তা মানুষ ভাল চোখে নেবে কি না তা নিয়ে কৌতুহলের শেষ ছিল না।[বিহার বিধানসভা নির্বাচন ফল : মহাজোটে বাজিমাত নীতিশের, এনডিএর-এর স্বপ্ন বাক্সবন্দিই রয়ে গেল!]
মানুষ যে ভালভাবেই এই মহাজোটকে নিয়েছে তার প্রতিচ্ছবি পাওয়া গিয়েছে এদিনের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলেই। ১৭৬ টি আসনে এগিয়ে (বিকেল পৌনে চারটে পর্যন্ত) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিহারে মহাজোট এসেছে। এনডিএ সেখানে মাত্র ৬০টি আসনে এগিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। দলের নিরিখেও আরজেডি ও জেডিইউর পরে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি। এটা দলের পক্ষে একটা বিশাল বড় ধাক্কা। [এই ফ্যাক্টরগুলি কাজ করেছে মহাজোটের পক্ষে আর বিজেপির বিপক্ষে!]
কেউ বলছেন এই জয়ের পিছনে নীতিশ নয়, আসল নায়ক লালু, কেউ বলছেন নরেন্দ্র মোদীর অহঙ্কারের ফলেই হার হয়েছে বিজেপির, কেউ বলছেন নীতিশকুমারের উন্নয়নমূলক কাজই এই ভোটে মহাজোটকে অক্সিজেন জুগিয়েছে। কেউ বলছেন, বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার জন্যই বিজেপির ভরাডুবি। আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক কোন নেতা কী বলছেন। [বিহারে মহাজোটের জয়ে স্বস্তিতে মমতা, 'অসহিষ্ণুতার হার' বলে খোঁচা বিজেপিকে]
অমিত শাহ (বিজেপি সভাপতি)
শ্রী নীতিশ কুমার এবং শ্রী লালুপ্রসাদ যাদবকে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য অনেক অভিনন্দন। আমরা বিহারের মানুষের রায়কে সম্মান জানাচ্ছি। নয়া সরকারকে আমরা তরফে শুভেচ্ছা রইল। আশা করব তারা বিহারকে উন্নয়নের পথে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
রাহুল গান্ধী (কংগ্রেস সহ সভাপতি)
মহাজোটের কর্মী ও নেতাদের অভিনন্দন জানাই। নিজের অহঙ্কারকে এবার কমান মোদীজি, এটা তাঁর নিজের পক্ষেও ভাল এবং দেশের পক্ষেও। প্রচার বন্ধ করুন, ভাষণ বন্ধ করুন ও কাজ শুরু করুন।কারণ আপনার জন্য হিন্দুস্তান ১ বছর পিছিয়ে গিয়েছে, আপনার গাড়ি চলছে না, এক্সালারেটর টিপে গাড়ি চালাতে শুরু করুন। যদি তা না করেন তাহলে শুধু বিহার নয়, দেশের জনতা গাড়ির দরজা খুলবে আর আপনাকে বাইরে ফেলে দেবে।
এই জয় বিভেদের বিরুদ্ধে ঐক্যের জয়, অহঙ্কারের বিরুদ্ধে অবমাননার জয়
রাজনাথ সিং (কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী)
বিহার বিধানসভা নির্বাচনে দলের জয়ের জন্য নীতিশ কুমারকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছি। বিহারের মানুষ যে রায় দিয়েছেন তা মাথা পেতে নিচ্ছি। বিহারের জন্য যে প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী তা যে কোনও উপায়ে পূর্ণ করবে কেন্দ্র
রবিশঙ্কর প্রসাদ (বিজেপি)
আমরা জনতার রায় গ্রহণ করছি ও তাকে সম্মান জানাচ্ছি। অভিনন্দন জানাচ্ছি নীতিশজি ও লালু জিকে। আমরা আশা করব বিহারে ওরা উন্নয়নমূলক কাজ করবে :
অখিলেশ যাদব (উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী)
নীতিশজি ও লালুজিকে ঐতিহাসিক জয়েক জন্য অভিনন্দন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী)
অভিনন্দন নীতিশকুমারজি, লালুজি ও আপনাদের গোটা দলকে, এবং বিহারে আমার ভাই ও বোনেদের। সহিষ্ণুতার জয় হয়েছে, অসহিষ্ণুতার হার :
অরবিন্দ কেজরিওয়াল (দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী)
নরেন্দ্র মোদীর অহঙ্কারের হার হয়েছে বিহারে। নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে আর সহ্য করতে পারছে না সাধারণ মানুষ, এই রায়ে সে বার্তা স্পষ্ট
হরিশ রাওয়াত (উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী)
লালুজির লক্ষ্য ও নীতিশজির পরিশ্রমকে অভিনন্দন জানাই
আনন্দ শর্মা (কংগ্রেস)
নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর অহঙ্কারকে তিরস্কার হয়েছে, দারুণ জয় বিহারবাসীর
ডেরেক ওব্রায়েন (তৃণমূল কংগ্রেস)
বিজেপি হেরেছে তাই ভারত জিতেছে, বিজেপির হারে দেশ রক্ষা পেয়েছে
সিদ্দারামাইয়া (কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী)
এই নির্বাচনকে নীতিশ কুমার ও নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক লড়াই হিসাবে দেখানো হয়েছিল, নীতিশ কুমার যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। আমি অভিনন্দন জানাই
এম এ নাকভি (বিজেপি)
প্রত্যেক নির্বাচন একটা শিক্ষা দেয় প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে। যা চূড়ান্ত ফলাফল হবে আমরা তা গ্রহণ করব
চিরাগ পাসওয়ান (এলজেপি)
আমরা কখনও ভাবিনি মহাগাঁটবন্ধন এত ভাল ফল করবে। নীতিশজি ও লালুজিকে অনেক অভিনন্দন
পি চিদম্বরম (কংগ্রেস)
হ্যাঁ অসহিষ্ণুতা এই নির্বাচনের একটা ইস্যু, অসভ্য, অভদ্র মন্ত্রী ও নেতাদের বিরুদ্ধে আগেই প্রধানমন্ত্রীর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। এই হারের দায় নরেন্দ্র মোদীকেই নিতে হবে
সীতারাম ইয়েচুরি (সিপিআইএম)
অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে মানুষ। এটা মোদী-অমিত শাহের ব্য৪থতা। এই জয় ভারতে ইতিহাসে এক মাইলস্টোন
সঞ্জয় রাউত (শিবসেনা)
যখন কংগ্রেস হারে তখন তার দায় বর্তায় সোনিয়াজির উপর, একইভাবে বিজেপির এটা স্বীকার করা উচিত বিহারের ফল মোদীজির দায়