ব্র্যান্ড মোদীর পরীক্ষা নীতীশ গড়ে, সমগ্র দেশেই প্রভাব ফেলবে বিহার বিধানসভা নির্বাচন
বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে বিহারের গদিতে জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার। মাঝে জিতন রাম মাঝি কয়েকদিন গদিতে থাকলেও মোটের উপর গত ১৫ বছরে বিহারকে নিজের হাতে তৈরি করেছেন নীতীশ কুমার। লালু প্রসাদ যাদবের ১৫ বছরের 'জঙ্গলরাজ'-কে শেষ করার ডাক দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন নীতীশ। এরপর ১৫ বছর গদিতে থেকেছেন তিনিও।
বিহার বিধানসভা নির্বাচন বিজেপির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহে কয়েকদিন আগেই দাবি করেছিলেন, বিধানসভা নির্বাচনে ২২০টি আসনে জয়লাভ করে সরকার গড়বে বিজেপি। বাকি ২০টি আসনে বিরোধী দলগুলি নিজেদের মধ্য়ে ভাগাভাগি করে নেবে বলে দাবি বিজেপির। করোনা আবহের মধ্যে বিহার বিধানসভা নির্বাচন বিজেপির কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা, তারপরের বছরই বাংলায় রয়েছে বিধানসভা ভোট। যা আগে থেকেই পাখির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির।
এই নির্বাচনে অনেক কিছুর জবাব মিলবে
এই নির্বাচনে অনেক কিছুরই জবাব মিলবে। কেন্দ্র এবং নীতীশের করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় কী সাধারণ মানুষ সন্তুষ্ট। পরিযায়ী ইস্যুতে বিজেপি-জেডিইউ নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট লোকজন। কৃষিবল নিয়ে সাধারণ মানুষ কী ভাবছে? করোনার আবহে বিহারই প্রথম রাজ্যে হবে, যেখানে বিধানসভা নির্বাচন আয়োজিত হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে বিহারে বহু আগেই ডিজিটাল প্রচার চালু করে দেয় বিজেপি। সেই জুন মাসেই বিহারের ৭০টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভার্চুয়াল ব়্যালি ও জনসংবাদ করে ফেলে বিজেপি।
সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারে এগিয়ে বিজেপি
সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে বিজেপি ক্যাডার ও সাধারণ জনগণের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি। করোনার সংক্রমণের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি ও চলতে থাকা লকডাউনের জেরে গত কয়েক মাস যাবত বন্ধ রয়েছে রাজনৈতিক সমাবেশ। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা সেভাবে প্রচার শুরু করতে পারেনি বিহারে। তবে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রচারের ময়দানে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি।
ডিজিটাল মিডিয়া নির্বাচনী লড়াই
নিজেদের দলীয় প্রচারের কাজে ডিজিটাল মিডিয়াকে কোন দল কতটা ব্যবহার করতে পারছে তা নিয়েও চলছে জোর লড়াই। আগামী দিনে ভারতের রাজনীতি এই পথেই চলবে। বিজেপি শুরু করেছে। ভার্চুয়াল প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে। দিল্লি থেকে ভাষণ হচ্ছে। ফেসবুক লাইভ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়িতে বসে মানুষ তা দেখছে। কোথাও পয়সা খরচ হচ্ছে না। এতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বিজেপি।
কাজ থমকে থাকেনি বিজেপির
করোনা আবহেও দলের সাংগঠনিক বৈঠক বা সভার কাজ থমকে থাকেনি বিজেপির। রাজনৈতিক নেতারা এখন একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ভরসা রাখছেন ডিজিটাল মাধ্যমেই। শুধু তাই নয়, ডিজিটাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে দলীয় নেতৃত্বের তরফে লাগাতার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে নিচুতলার কর্মীদের।
নরেন্দ্র মোদীর পরীক্ষা
এদিকে এছাড়া নরেন্দ্র মোদীর পরীক্ষাও হতে চলেছে এই নির্বাচনে। বিহারের নির্বাচনের আগে বহু প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন নরেন্দ্র মোদী। কোশি রেল মহাসেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাছাড়াও ১২টি রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। প্রকল্পগুলি ভোটের নিরিখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এবং বিজেপি এই রাজ্যে জুনিয়র শরিক হলেও মোদী আছেন প্রচারের মুখ্য মুখ হয়ে।
নির্বাচন জিততে মরিয়া বিজেপি
তাছাড়া চলতি মাসেই দুর্গাপুর বাঁকা বিভাগের পাইপলাইন প্রকল্প, বিহারের বাঁকা এলপিজি বোটলিং প্ল্যান্ট, বিহারের চম্পারণ এলপিজি প্ল্যান্ট প্রকল্পগুলিও উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। আর এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে বিজেপি বিহারে নিজেদের ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য কতটা মরিয়া।
বাংলায় প্রভাব বাড়ছে এআইএমআইএম-এর, ২১-এর আগে বিহার ভোটে সেমিফাইনাল খেলবেন ওয়েইসি