গুমনামি বাবা আসলে কে! নেতাজিকে ঘিরে সহায় কমিটির তোলপাড় করা রিপোর্ট পেশ
শোনা যায়, তাঁর শেষকৃত্যের সময় উত্তর প্রদেশের সরযূ নদীর তীরে ছিলেন তাঁর ১৩ জন শিষ্য। বহু রিপোর্ট বলছে, উত্তর প্রদেশের তাবড় মন্ত্রী থেকে দেশের নামী দামী ভিভিআইপিরা উত্তরপ্রদেশের 'ভগবানজি' বা 'গুমনামী বাবা'র আশ্রমে যেতেন। কেউ বলতেন তাঁর সঙ্গে নেতাজি সুভাষ বসুর হুবহু মিল রয়েছে, কারোর মতে তিনিই স্বয়ং নেতাজি আবার কেউ বলতেন গুমনামী একজন ঠগ! গুমনামী বাবাই কি দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু? এমন প্রশ্নের উত্তর ঘিরে একাধিক রহস্যের জাল বিছানো রয়েছে। এবার সেই সন্দেহের জাল ঘিরে তথ্য় পেশ করল বিষ্ণু সহায় কমিশনের রিপোর্ট।

গুমনামী বাবা কে? উত্তরে কমিটির রিপোর্ট যা বলছে
সাহায় কমিটির সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, উত্তরপ্রদেশের গুমনামী বাবা আসলে নেতজি নন। তিনি ছিলেন নেতাজির 'শিষ্য'। শুধুমাত্র দু'জনের কণ্ঠস্বর একই রকম ছিল। রিপোর্ট বলছে, 'ফৈজাবাদের (অযোধ্যা) রামভবনে যেখানে গুমনামী বাবা থাকতেন,সেখান থেকে পাওয়া জিনিসপত্র থেকে কিছুতেই এই উপসংহার টানা যায় না যে গুমনামী বাবাই নেতাজি ছিলেন।' প্রসঙ্গত, এর আগে গুমনামী বাবার আশ্রম থেকে পাওয়া বহুবিধ জিনিসের সঙ্গে নেতাজির পছন্দ অপছন্দের মিল পাওয়া গিয়েছে। অসমর্থিত সূত্র বলে , নেতাজির লেখা বহু নথির সঙ্গে গুমনামী বাবার লেখা বহু চিঠিতে হাতের লেখার মিল পাওয়া যায়।

গুমনামী বাঙালি ছিলেন!
কমিশনের রিপোর্ট বলছে, গুমনামী বাবা বাঙালি ছিলেন। তিনি বাংলা ছাড়াও হিন্দি ও ইংরেজিতে দারুন পারদর্শী ছিলেন। কমিশনের মনে হয়েছে, নেতাদির মতো কথাবলার ধরন গুমনামী বাবার থাকলেও তিনি নেতাজি নন। রিপোর্ট বলছে, নেতাজির মতো গুমনামী বাবারও বিশ্বরাজনীতি ও যুদ্ধ সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান ছিল। ভারতের সরকার পরিচালনা নিয়ে তাঁর অগাধ আগ্রহ ছিল বলেও দাবি করছে সাহায় কমিশনের রিপোর্ট।

কেন গুমনামী বাবা নেতাজি নন?
সাহায় কমিটির রিপোর্ট বলছে, ১৯৮০ সালের ১৬ অক্টোবর একটি চিঠি পাঠানো হয় গুমনামীবাবাকে। সেই চিঠি কলকাতা থেকে বুলবুল নামের জনৈক কেউ পাঠিয়েছিলেন। আর সেখানে লেখা ছিল যে ' আমার বাড়ি আপনি কবে আসবেন?নেতাজির জন্মদিনের দিন আপনি আসলে খুবই খুশি হব।' আর এই চিঠিই বলে দিচ্ছে যে গুমনামী বাবা নেতাজি নন। এমনই দাবি করেছে সাহায় কমিশন।

রবীন্দ্রসঙ্গীত ও এক বাঙালি যুবকের আনাগোনা ফৈজাবাদের আশ্রমে
গুমনামী বাবার শিষ্যদের দাবি ছিল , উত্তর প্রদেশের আশ্রমে যখন তাঁদের 'ভগবানজি' ছিলেন তখন সেখানে আশ্রমে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতেন। তাঁকে পোশাক, ফলমূল কিনে দেওয়ার জন্য আসতেন তখৎকালীন এক তরুণ বাঙালি কংগ্রেস নেতা। যিনি পরবর্তী কালে দেশের তাবড় 'নাম' হয়ে ওঠেন। পরবর্তীকালে দেশের সম্মানীয় এক পদে ওই বাঙালি রাজনীতিবিদকে দেখা যায়। শোনা যায়, যখন ভিয়েৎনাম যুদ্ধ চলছে তখন হোচিমিনের চিঠি আসত গুমনামীর কাছে। চিঠি আসত দেশবিদেশের আরও জায়গা থেকে। প্রশ্ন উঠতে থাকে গুমনামী আসলে কে? কেনইবা তাঁর কাছে এমন তাবড় আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক নেতাদের চিঠি আসে?

সাহায় কমিশনের রিপোর্ট কী বলছে?
সাহায় কমিশনের রিপোর্ট অবশ্য শেষে বলছে, 'এ
লজ্জাজনক যে তাঁর শেষকৃত্যে মাত্র ১৩ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তাঁর শেষযাত্রায় আরও সম্নান প্রাপ্য ছিল। '