ট্রায়ালের ফলফলে বড়সড় গলদ! দীর্ঘ আশা জুগিয়েও অক্সফোর্ডের করোনা টিকাকে ঘিরে বাড়ছে আশঙ্কা
মোডার্না হোক বা ফাইজার, সঙ্গে দোসর রাশিয়ার স্পুটনিক ভি, ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষেধক প্রতিযোগীর ভিড়ে সঠিক ভ্যাকসিনকে বেছে নেওয়া সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা প্রায় প্রতিটা দেশর কাছেই। অন্যদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন প্রস্তুতির খবর পাওয়ার পরপরই তাতে সামিল হয় পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট। তাদের হাত ধরেই ভারতীয় বাজারে আসছে অক্সফোর্ডের তৈরি করোনা টিকা 'কোভিশিল্ড'। কিন্তু অম্তিম পর্যায়ের ট্রায়াল থেকেই এই ভ্যাকসিনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক অনিশ্চয়তা।

ট্রায়ালে মারাত্মক ভুল, স্বীকার অক্সফোর্ডের
সম্প্রতি অক্সফোর্ডের গবেষণা ও উৎপাদন সহকারী অ্যাস্ট্রোজেনেকা স্বীকার করে নিয়েছে যে ট্রায়ালে ব্যবহৃত ডোজে একাধিক ভুল হয়েছে। এই বিষয়ে লিখিত আকারে একটি স্বীকারোক্তি প্রকাশ করা হলেও ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ডের উপর থেকে বিশ্বাস হারাচ্ছেন অনেক ভারতীয় গবেষকই। এদিকে প্রায় শেষ পর্যায়ের দোরগোড়ায় থাকা 'কোভিশিল্ড'-এর ট্রায়ালে এমন মারাত্মক ভুলের কথা জানতে পেরে বিরক্ত আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষজ্ঞরাও।

সফলতার হার কষা হয়েছিল গড়ের ভিত্তিতে
ভ্যাকসিন গবেষণার সাথে জড়িত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার ট্রায়ালে প্রথমে অর্ধেক ডোজ ও পরে সম্পূর্ণ একটি ডোজ দেওয়ায় সাফল্য মেলে ৯০%। পরে অন্যান্য ক্ষেত্রে দুটি ডোজ দেওয়ায় সফলতার হার হয় ৬২%। অভিযোগ, গবেষকরা এই দুই হারের গড় কষে বিবৃতিতে জানান, সাফল্যের হার ৭০%! ভিন্ন ডোজের ভিন্ন দুইটি ট্রায়ালের ফলাফল নিয়ে ছেলেখেলা করেছে অক্সফোর্ড, বর্তমানে এমনই মারাত্মক অভিযোগ আনছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।

১৩৫ কোটি জনসংখ্যার জন্য বড় বিপদ ডেকে আনছে অক্সফোর্ড ?
অক্সফোর্ডের ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, ব্রাজিল ও ব্রিটেনে একটি ট্রায়ালে ৩০ জনের মধ্যে ২৭ জনকে সম্পূর্ণ ও তিনজনকে 'ভুল' করে অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়। যার ভিত্তিতে অক্সফোর্ড 'কোভিশিল্ড'-এর সাফল্য ৯০% বিবেচনা করে। গবেষকদের মতে, ট্রায়ালের নিয়মাবলী ভেঙেছে অক্সফোর্ডের গবেষণা। ট্রায়ালে যে তিনজনের উপর নির্ভর করে সফলতার হার ৯০% বলেছে অক্সফোর্ড, তাঁদের বয়স ৫৫ বছরের কম। ফলে ভুলে ভরা এই ট্রায়ালের পর ভারতের মত বিপুল জনসংখ্যার উপর কোভিশিল্ড প্রয়োগ করলে কি ফল হত, তা ভেবেই শিউরে উঠছে চিকিৎসকমহল।

ট্রায়ালের স্বেচ্ছাসেবক বাছাই পদ্ধতি ঘিরেও বাড়ছে আশঙ্কা
সূত্রে খবর, ট্রায়ালে ঠিক কী গলদ হয়েছে সে বিষয়ে এখনও ধন্ধে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রোজেনেকা। গবেষকদের দাবি, প্রথম ক্ষেত্রে বয়স্কদের উপর কোভিশিল্ড প্রয়োগে তার ফল খুব একটা ভালো হয়নি। যদিও পরবর্তীতে কিভাবে কোন ডোজ দেওয়া হয় এবং কিভাবে অসংলগ্ন পদ্ধতিতে স্বেচ্ছাসেবকদের বেছে নেওয়া হয়, কোনো বিষয়ই স্পষ্ট নয় চিকিৎসকদের কাছে। বাস্তবে অক্সফোর্ডে ভ্যাকসিনের সফলতার হার কতটা, সে বিষয়ে বোঝা যাচ্ছে না কিছুই। কোনো ট্রায়ালে ৫টির মধ্যে ২টি ক্ষেত্রে কোভিশিল্ড সফল হলেও অন্য ক্ষেত্রে ২০বারের মধ্যে ১৯ বার সফল হচ্ছে এই ভ্যাকসিন। স্বভাবতই চিন্তার ভাঁজ চওড়া হয়েছে ভারতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কপালেও।

দিলীপ নিজেকে বাংলার রাজা মনে করছেন! অঙ্ক দিয়ে বাস্তব বোঝালেন সৌগত রায়