বেঙ্গালুরু হিংসা পূর্ব পরিকল্পিত! দিল্লির স্মৃতি ফিরিয়ে আনতেই আগুন জ্বালিয়েছে এসডিপিআই
বেঙ্গালুরুর হিংসার ঘটনায় এবার গ্রেফতার করা হল দুজন এসডিপিআই সদস্যকে। তাদের মধ্যে একজন এসডিপিআই-এর উচ্চ পর্যায়ের নেতা মুজ্জামিল পাশা। জানা গিয়েছে এই পাশার ডাকেই বেঙ্গালুরুর রাস্তায় নেমেছিল বিক্ষোভকারীরা। এবং যে বিতর্কিত পোস্টে এই হিংসার সূত্রপাত, সেই পোস্টটি হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই শহরের ২০০ থেকে ৩০০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
মঙ্গলবার রাতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে বেঙ্গালুরুতে
কর্ণাটকের রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে মঙ্গলবার রাতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে। ওই পোস্টে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিকে অসম্মান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করা হয়। ওই ধর্মের অনুসারী বহু মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নামে এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গুলি চালাতে হয় পুলিশকে
ফেসবুকের পোস্ট ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তেই পরিস্থিতি সামাল দিতে গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। সেই গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এই সহিংসতার ঘটনায় ৬০ পুলিশকর্মীও জখম হন বলে জানা গিয়েছে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১১০ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তবে কেন তৈরি হল এই পরিস্থিতি? নেপথ্যে রয়েছে কোন কারণ?
তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ
কর্ণাটকের মন্ত্রী সিটি রবি এই বিষয়ে বলেছেন, এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পাও। জানা গিয়েছে, পুলিশ সন্দেহ করছে যে এসডিপিআই আগের থেকেই এই হামলার ছক কষে রেখেছিল। ইচ্ছাকৃতভাবে দাঙ্গা করার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কী এই এসডিপিআই?
প্রসঙ্গত, এই এসডিপিআই হল ইসলামিক কট্টরপন্থী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গ। সিএএ সংক্রান্ত বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময়ও এরা প্রচুর হিংসা ছড়িয়েছে দেশে। তাছাড়া দেশের জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার ক্ষেত্রেও এরা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিষ। এর আগে সিএএর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন এই সংগঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি উঠেছিল।
থানায় বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়
এদিকে ফেসবুক পোস্টের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীন শহরের পুলকেশিনগরের ডিজে হাল্লি থানায় বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। থানার সামনে থাকা পুলিশের একাধিক গাড়ি, প্রিজন ভ্যান এবং অন্যান্য বহু গাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ৬০ পুলিশ সদস্য জখম হন।
শান্তির বার্তা দেয় বেঙ্গালুরুর পুলিশ
এ বিষয়ে বেঙ্গালুরু পুলিশের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়, ডিজি হাল্লি ও কেজি হাল্লি এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে ও গুলি চালিয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার কমল পান্ত জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত ডিজে হাল্লি এবং কেজি হাল্লি থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তবে শহরের বাকি অংশে বিশাল সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার ১১০ ৬
এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ১১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত পি নবীন নামক এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত যুবক ওই রাজ্যের কংগ্রেস বিধায়ক শ্রীনিবাস মূর্তির ভাইয়ের ছেলে বলে জানা গেছে। তার ফেসবুক পোস্টের কারণেই শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা শ্রীনিবাসের বাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে জানা গেছে।
গিলগিটে বেআইনিভাবে চিনকে খনন সত্ত্ব বিক্রি পাকিস্তানের! লাদাখ সংঘাতের নেপথ্যেও কি খনিজ পদার্থ?