বেঙ্গালুরুর দীর্ঘতম কালীপ্রতিমা এবার হট্টোগোলের পুজোয়! উচ্ছ্বসিত উদ্যোক্তারা
রাত পোহালেই কালীপুজোর আনন্দে মাতোয়ারা হতে চলেছে গোটা বাংলা। মাতৃশক্তির আরাধনায় আজ থেকেই বাংলার দিকে দিকে সাজো সাজো রব।
রাত পোহালেই কালীপুজোর আনন্দে মাতোয়ারা হতে চলেছে গোটা বাংলা। মাতৃশক্তির আরাধনায় আজ থেকেই বাংলার দিকে দিকে সাজো সাজো রব। তবে সুদূর প্রবাসের গালিচা শহর বেঙ্গালুরুও মাতৃবন্দনায় কোনও অংশে পিছিয়ে নেই। কালীপুজো ঘিরে নৈহাটি বা বারাসাতের মতো উত্তেজনা এই প্রযুক্তি নগরীতে না থাকলেও, এখানের বাঙালিরা কিন্তু নিজেদের মতো করে সেই আনন্দ-উত্তেজনায় গা ভাসিয়েছেন। বেঙ্গালুরুর 'হট্টোগোল' এর ষষ্ঠ বর্ষের পুজোয় এবার সেরা চমক ১৮ ফুটোরে প্রতিমা, যা বেঙ্গালুরুর দীর্ঘতম প্রতিমা বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। এই পুজোর অফিশিয়াল মিডিয়া পার্টনার 'ওানইন্ডিয়া বাংলা'। পুজো ঘিরে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তাঁরা।
অনুপমের কথায়...
হট্টোগোলের অন্যতম ফাউন্ডার মেম্বর অনুপম কুণ্ডু। সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে শুধুমাত্র হট্টোগোলের কালীপুজোয় অংশ নিতে তিনি ইতিমধ্যেই পা রেখেছেন বেঙ্গালুরুতে। অনুপম বলছেন, 'আমরা ৫ জন মিলে এই কালীপুজো শুরু করি,.. তারপর এবার ষষ্ঠ বর্ষ তো বুঝতেই পারছেন টান কতটা!বিদেশের পুজোয় একটা আন্তরিকতার অভাব বোঝ করি, কিন্তু আমাদের হট্টোগোলের পুজো মানে পরিবারের পুজো!' তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অনুপম কাজের সূত্রে বেঙ্গালুরুতে আসে, আর তারপর হট্টোগোলের সঙ্গে যোগ। অনুপম বলছেন, নিজের ভেবেই এখানে সকলে মিলে পুজোর আয়োজন করেন। পুজোর বাইরেও এখানের সদস্যরা বিভিন্নভাবে বহু সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকেন।
বিনয় চৌধুরী বলছেন...
হট্টোগোলের পুজো শুরুর অন্যতম উদ্যোক্তা বিনয় চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা চৌধুরী। পুজোর অন্যতম ফাউন্ডার মেম্বর বিনয় চৌধুরী জানাচ্ছেন, 'মাদুর পেতে আমাদের প্রথম কালচারাল প্রোগ্রাম হয়েছিল, সেখান থেকে আজ আমরা ষষ্ঠ বর্ষে পা রাখছি। সেই সময়ে সাতদিনের মধ্যে ঠিক হয়েছিল পুজো হবে। ছোট্ট কালীপ্রতিমাকে সেই বছর পুজো করা হয়। আর আজ সেখান থেকে আজ ১৮ ফুটের কালীপ্রতিমা আসছে আমাদের মণ্ডপে। এটা সম্ভব হয়েছে সকলের ভালোবাসায়। আর কমিটি মেম্বররা যেভাবে একে অপরের পাশে রয়েছেন তার জন্যই এতটা এগোনো গিয়েছে। আমরা একটা ফ্যামিলি আউটসাইড ব্লাড লাইন!'
শুভজিতের স্মৃতিচারণা
'বেঙ্গালুরুর বুকে একটা পরিবার বানিয়ে নিয়েছে হট্টোগোল' , এমনই দাবি কমিটির অন্যতম সদস্য তথা উদ্যোক্তা শুভজিতের। তিনি বলছেন, 'আমরা এটা ফিল করিনা যে দুর্গাপুজো বা কালীপুজোয় আমাদের বাড়ি যেতে হবে।' পেশাগতভাবে তথ্য প্রযুক্তিকর্মী শুভজিৎ বলছেন, এক পাড়া ফুটবল প্রতিযোগীতার মাধ্যমে 'হট্টগোল'-এর সদস্যদের সঙ্গে তাঁর পরিচিতি হয়। আর তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বাঙালির ফুটবল প্রেম, কালীপুজো আন্তরিকতা, আর ভালোবাসার মিশেলে বেঙ্গালুরুর হট্টোগোলের একজন হয়ে উঠেছেন শুভজিৎ।
সোমনাথ বলছেন..
হট্টোগোল-এর পুজোর অন্যতম সদস্য সোমনাথ পাঁজা। পড়াশোনার সূত্রে বেঙ্গালুরুতে এসে পরবর্তীকালে পেশাগতজীবনও এই শহরেই শুরু করেন সোমনাথ। আর গানের সূত্রের হট্টোগোলের সঙ্গে যোগাযোগ। সোমনাথদের ব্যান্ড 'আলপিন' বেঙ্গালুরুর অন্যতম নামী ব্যান্ড। সোমনাথ বলছেন, 'আলপিনের পারফরম্যান্সের সূত্রেই হট্টোগোল-এ আসা।তারপর পথা চলা, আর এই বছর তো কর্ণাটকের দীর্ঘতম কালীপ্রতিমা মণ্ডপে আনছে হট্টোগোল, তো স্বভাবতই খুব উচ্ছ্বসিত আমরা।'
উচ্ছসিত স্বর্ণাদিত্যও
'ওয়ানউন্ডিয়া বাংলাকে মিডিয়া পার্টনার হিসাবে পাশে পেয়ে আমার সত্যিই খুব আনন্দিত..একটু একটু করে এই গ্রুপটা যেভাবে ছোট্ট জায়গা থেকে শুরু করে আজ এত বড় আকারে পুজো করছে, সেই সফরের সদস্য ছিলাম আমিও। এই সফরে বহু মানুষকে পাশে পেয়েছি আমরা।' হট্টোগোলের পুজো ঘিরে এভাবেই নিজের মনের কথা তুলে ধরেন পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা স্বর্ণাদিত্য রায়। তিনি বলছেন, 'মা কালীর আরাধনা বেঙ্গালুরুতে এভাবে যে আমরা করতে পারছি , তা আমাদের কাছে তো গর্বেরই আমার মনে হয় বেঙ্গালুরুর বাঙালিদের কাছেও তা গর্বের! '