ভারতের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত শহর বেঙ্গালুরু, বলছে ওয়েবসাইট
দুর্নীতির সূচকে কলকাতা ষষ্ঠ স্থানে
বেঙ্গালুরুর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'জনাগ্রহ' পরিচালিত ওই ওয়েবসাইটটি হল www.ipaidabribe.com। আপনি যদি নিজে দুর্নীতির শিকার হন, তা হলে সেই অভিজ্ঞতা সরাসরি 'পোস্ট' করতে পারেন ওয়েবসাইটটিতে। দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতির অভিজ্ঞতা সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় 'পোস্ট' করেছেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দারা। ২০১১ সালে, যখন থেকে এই ওয়েবসাইটটি চালু হয়েছে, তখন থেকে এখনও পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে কাজ আদায়ের জন্য ৫২৩৮টি ঘটনায় ঘুষ দিতে হয়েছে ১৬,৩৯,৩৪,২১১ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ভারতের আর এক শহর চেন্নাই। সেখানে ১২১৫টি ঘটনায় ঘুষ দিতে হয়েছে ৭,২৪,৩৪,৬৪৬ টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মুম্বই। ১৩৭৮টি ঘটনায় সেখানে ঘুষ দিতে হয়েছে ৬,৯৭,৭৬,৫৭১ টাকা। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে দিল্লি ও হায়দরাবাদ।
দুর্নীতির এই সূচকে কলকাতা রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। কলকাতায় ৩৪০টি ঘটনায় ঘুষ দিতে হয়েছে ১,৬৩,২৬,৭২৫ টাকা। কলকাতার পিছনে আছে যথাক্রমে লখনউ, পুণে, নয়ডা ও আমেদাবাদ। ভারতবর্ষের ৫৮৪টি শহর থেকে ২২৪৮৩টি ঘটনা উল্লিখিত হয়েছে। ঘুষের পরিমাণ ৫৭ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা।
রাজ্যওয়ারি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা তুলনায় ভালো। এখানে ৩৬৪টি ঘটনায় ঘুষ দিতে হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। তুলনামূলক হিসাব কষলে দেখা যাচ্ছে, কলকাতার তুলনায় জেলাগুলির অবস্থা ভালো। ওয়েবসাইটটির হিসাব অনুসারে, দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্য হল কর্নাটক। অন্যান্য রাজ্য যারা ব্যাপকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত, তারা হল তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ। এদের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ নেহাতই শিশু!
যে সরকারি বিভাগে কাজ আদায়ের জন্য সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হয়, সেটি হল পুলিশ। সব রাজ্য বা শহরের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। তারপর রয়েছে যথাক্রমে স্ট্যাম্প রেভিনিউ, পৌরসভা এবং পরিবহণ। পাসপোর্টের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন, জমি-বাড়ির মিউটেশন, জন্ম-মৃত্যুর সার্টিফিকেট বের করা ইত্যাদি ঘটনায় ঘুষ দিতে হয় সবচেয়ে বেশি। ঘুষের পরিমাণ ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
'জনাগ্রহ'-বক্তব্য, যত ঘুষ নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তার সবটা জানা গেলে ঘুষের পরিমাণ আরও বেশি হত। অল্প সংখ্যক মানুষই তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। তবে, শুধু ঘুষ দেওয়াই নয়, ঘুষের বিরুদ্ধে যারা আওয়াজ তুলেছে, যে সরকারি আধিকারিকরা ঘুষ নিতে চাননি, সেই সব পরিসংখ্যানও উল্লিখিত হয়েছে ওয়েবসাইটে।