ব্যবসার হিসাবে অমিল, রাগে ছেলেকে পুড়িয়ে মারলেন বাবা
বাবার ব্যবসা মানে ছেলেরও ব্যবসা! বাবার পর সেই ব্যবসাতে বসবে তার ছেলে। আর সেই কারণেই ব্যবসার কাজে সড়গড় করছিলেন ছেলেকে। টাকা নিয়েই বাঁধে বিপত্তি। ব্যবসার হিসাবে দেখা দেয় গড়মিল। দেড় কোটি টাকার হিসাব কিছুতেই মিলছে না। তাই রাগে বাবা ছেলের গায়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারে। ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুর চামরাজপেটের বাল্মিকি নগরে। অভিযুক্তের নাম সুরেন্দ্র কুমার (৫৫)। এই ভয়াবহ ঘটনায় গা শিউরে উঠছে দেশবাসীর।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে পয়লা এপ্রিল। বাবা ও ছেলে মিলে ভালোই ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। বাবা ছেলের কাছে মার্চ মাসের হিসাব দেখতে চায়। তখনই দেড় কোটি টাকার হিসাব দেখাতে পারে না ছেলে। টাকার কি কারণে কোথায় খরচ হয়েছে, তার সঠিক উত্তর বাবাকে দিতে পারেননি। যা নিয়ে দু'জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তারপরই ঘটে এমন ঘটনা।
জানা গিয়েছে, অর্পিত মাইসুরু রোডের কাছে একটি বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে ব্যবসা চালাতেন সুরেন্দ্রবাবু। ঘটনার সময় গোডাউনের ভিতর থেকে ৩০ মিনিট ধরে দু'জনের মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি চলচ্ছিল। অর্পিত (২৫) নামক যুবকটি গোডাউন থেকে বেরিয়ে আসেন। তার গায়ের জামা কাপড় কোনও একটি তরল পদার্থে ভিজে ছিল। আর পিছনে আসছেন তার বাবা। তার হাতে ছিল দেশলাই। যা জ্বালিয়ে তিনি ছেলের দিকে ছুড়ে দিলেন। বারবার তার ছেলে বারণ করা সত্ত্বেও তিনি তার পুত্রের কথা শোনেননি। ছেলের গায়ে তাঁর গায়ে পেইন্ট থিনার ঢালা হয়েছিল। যদিও পুরো ঘটনাটি সিসিটিভিতে ধরা পরেছিল। এই পেইন্ট থিনার আসলে স্পিরিট জাতীয় এক দ্রব্য।
প্রথমবার তার বাবা ছেলের গায়ে যে কাঠিটা ছুঁড়েছিল, সেটা নিভে যায়, তারপরের কাঠি তার ছেলের দিকে ছুড়লে তার পোশাকে আগুন ধরে যায়। পেইন্ট থিনার থাকার কারণে তা হুহু করে জ্বলতে শুরু করে। যদিও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে অর্পিতকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তারপর তাঁকে স্থানীয় ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যান কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, তার দেহ ৬০% পুড়ে গেছে। মৃত্যুর সঙ্গে আপ্রাণ লড়াই করেও শেষমেষ তিনি হেরে যান। ৭ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। স্থানীয়দের অভিযোগেরই ভিত্তিতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ সঞ্জীব এম পাতিল জানান, ছেলেকে খুনের অভিযোগে সুরেন্দ্রবাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করে হয়েছে।