বাঙালি–অসমিয়া বিয়ে, আর্থিক সহায়তা করবে অসমের ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের রেশের মাঝেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল যে অসমে বাঙালি ও অসমিয়াদের মধ্যে বিয়ে হলে সরকার সেই দম্পতিকে আর্থিক সহায়তা করবে, কারণ তাঁরা আন্ত–সম্প্রদায় বিবাহের মধ্যে প্রবেশ

আর্থিক সাহায্য দম্পতিকে
করবে। যদিও অসমিয়া-বাঙালি বিয়ের প্রথা অনেক পুরনো, কিন্তু সেই প্রথাকে বজায় রেখেই আর্থিক সাহায্য করা হবে। রবিবার যোরহাটে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মলনে এই কথা স্পষ্ট করেছে অসম ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে যে পরিবারের কল্যাণের কথা ভেবেই এই আর্থিক সাহায্য করা হবে। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান অলোক কুমার ঘোষ বলেন, ‘আন্তঃ-সম্প্রদায়ের বিয়েতে অনেকসময়ই দেখা যায় কিছু দম্পতি পরিবারের সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। অনেকেই আবার সামাজিকভাবে একঘরে হয়ে যান। এর ফল হিসাবে ওই দম্পতিদের জীবন অতিবাহিত করতে অনেক সমস্যা হয়। আমরা এইসব পরিবারের জন্য কিছু করতে চাই। তাঁরা এই অর্থ দিয়ে পানের দোকান বা অন্য কোনও কাজ বা ব্যবসা করতে পারবে।'

বাঙালি–অসমিয়ার মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন
তিনি জানিয়েছেন আর্থিক সাহায্যে কত টাকা দেওয়া হবে তা এখনও ঠিক হয়নি তবে তা ২০ থেকে ৫০ হাজারের মধ্যেই হবে। প্রসঙ্গত, অসমে বাঙালি ও অসমীয়াদের মধ্যে বিয়ে খুবই সাধারণ ব্যাপার। অন্যান্য ক্ষেত্রেও এই দুই সম্প্রদায় একে-অপরের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করেন। সংখ্যালঘু বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে অসম বাঙালি যুব ছাত্র সংগঠন কিন্তু আপত্তি জানিয়েছে অসম সংখ্যালঘু ছাত্র পরিষদ। তারা জানিয়েছে এতে বিভেদ সৃষ্টি হবে। যদিও অলোক ঘোষের বিশ্বাস এই পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদি হবে। তিনি বলেন, ‘বাঙালি ও অসমিয়া লোকেরা মৈত্রের একটি বন্ধন ভাগ করে নেয়। আমরা এটিকে আরও সুসংহত করতে চাই। অসমের বাঙালিরা নিজেকে বঙ্গোভাষী অসমিয়া হিসাবে চিহ্নিত করতে গর্ব বোধ করে। তাদের মাতৃভাষা বাঙালি হতে পারে তবে তারা নিজেকে অসমিয়া হিসাবে বিবেচনা করে।' অলকবাবু এদিন অসমের সমাজের উদ্দেশ্যে সরাসরি এবং মিষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বাঙালিরা কোনোদিনও সংশোধনী নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন করে না। সেটা অসমিয়ারা ভালোভাবে না জানার জন্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হচ্ছে এই ইস্যুটি নিয়ে।'

ভূপেন হাজারিকার মূর্তি স্থাপন
তিনি ডঃ ভূপেন হাজারিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘বাঙ্গালি-অসমিয়ার সমন্বয়ের সাঁকো হিসেবে যে গান তিনি পশ্চিমবঙ্গে গেয়েছিলেন, সে গানই অসমে অসমিয়া ভাষায় গেয়েছেন তিনি।' দুই জাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধের সাঁকো নির্মাণ করতে ডঃ হাজরিকার প্রতিমূর্তি বসানো হবে শিলিগুড়িতে ও পশ্চিমবঙ্গেও।