মুকুল এখন সাইড লাইনে! রাজ্যে উপনির্বাচনের পর কি মোহভঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের
যে ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেস মুকুল রায়কে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিল, সেই রাজ্যের ভোটে মুকুল রায়কে ব্যবহারই করছে না বিজেপি।
মুকুল রায়কে কি পাকাপাকি সাইড লাইনে পাঠাল কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব? উত্তর-পূর্ব ভারতের তিন রাজ্যে ভোটের আগে হঠাৎ করে সেই প্রশ্নটাই উঠে পড়েছে। বিশেষ করে ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের আগে চর্চায় উঠে এসেছেন মুকুল রায়। যে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস মুকুল রায়কে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিল, সেই রাজ্যের ভোটে মুকুল রায়কে ব্যবহারই করছে না বিজেপি।
[আরও পড়ুন:কর্তৃপক্ষের নিয়মের প্যাঁচ! আরও বিপাকে 'আধার']
মুকুল রায়কে ত্রিপুরার ভোটে ব্যবহার না করায় রাজনৈতিক মহলে অবধারিত এই প্রশ্ন উঠে পড়েছে। ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারের উদ্দেশ্যে ৪০ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে বিজেপি। সেই তা্লিকায় উল্লেখযোগ্যভাবে নাম নেই মুকুল রায়ের। এই তালিকায় বাংলা থেকে রয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গাপাধ্যায়। কিন্তু নাম নেই মুকুল রায়ের!
সম্প্রতি রাজ্যে দুটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন হল। তার মধ্যে নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র মুকুল রায়ের খাসতালুক বলেই পরিচিত। সেই জায়গায় বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেও তৃণমূলকে লড়াই দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই কেন্দ্রে বিজেপি নির্ভর করেছিল মুকুল রায়ের উপর। কিন্তু মুকুল রায় প্রার্থী নির্বাচন থেকে শুরু করে নির্বাচনী ফলাফল- সব কিছুতেই চূড়ান্ত ব্যর্থ। এবং মুকুল রায়ের জন্য মুখ পুড়েছে বিজেপির।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তারই জেরে ত্রিপুরার নির্বাচনে মুকুল রায়কে সাইড করে দেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরায় মুকুল রায়ের দখল থাকা সত্ত্বেও বিজেপি তাঁকে রাখেনি প্রচারক হিসেবে। বিজেপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। রয়েছেন রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে নীতীন গড়করি, স্মৃতি ইরানি, যোগী আদিত্যনাথ, সর্বানন্দ সোনোয়াল বসুন্ধরা রাজে, শাহনওয়াজ হোসেন প্রমুখ।
ত্রিপুরায় যেহেতু বাংলা ভাষাভাষির মানুষের আধিক্য, সেহেতু বাংলা থেকে বাবুল সুপ্রিয়, রুপা গঙ্গোপাধ্যায়র ছাড়াও অনেকের নাম রয়েছে। কিন্তু মুকুল রায়ের নাম না থাকাতেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলছে। কিন্তু কেন মুকুল রায়কে নিয়ে এই অবস্থান নিল বিজেপি? সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলিতে মুকুল রায়ের ব্যর্থতাই এর জন্য দায়ী, নাকি মুকুল রায়কে যে উদ্দেশ্যে দলে নেওয়া হয়েছিল, সেই লক্ষ্যপূরণে সামগ্রিকভাবে মুকুল রায় ব্যর্থ বলেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই অবস্থান।
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। যেদিন হোক নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবে। এই সময়ে মুকুল রায়ের রাজ্যে সময় দেওয়া বেশি দরকার। বিজেপির ব্যাখ্যা, উপনির্বাচনের ফলে তাঁরা সন্তুষ্ট। এবার তাঁরা চাইছেন পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে থাবা বসাতে। তাই রাজ্যে মুকুল রায়কে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁকে বাংলার বাইরে ব্যবহার করা হচ্ছে না সেই কারণেই। উল্লেখ্য, গুজরাটেও প্রচারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তৃণমূল ত্যাগী মুকুল রায়কে। এবার প্রতিবেশীরাজ্য বাংলাভাষী ত্রিপুরায় তিনি ব্রাত্যই রয়ে গেলেন।
[আরও পড়ুন:ডিএ মামলায় প্যাঁচে রাজ্য! একাধিক প্রশ্ন হাইকোর্টের]