শুরু হচ্ছে গণটিকারণ, কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের মধ্যে কে এগিয়ে কতটা ? জেনে নিন একনজরে
দেশের প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধাদের টিকাকরণ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। এরমধ্যেই কেন্দ্রের উদ্যোগে টিকা পেতে চলেছেন কোমরবিডিটি যুক্ত এবং ষাটোর্ধ্ব নাগরিকরা। তবে প্রতিষেধক নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে যে সংশয় বাড়ছে, তা স্পষ্ঠ সাম্প্রতিক তথ্যে। এখনও পর্যন্ত ভারতে ডিসিজিআই অনুমোদিত কোভিড ড্রাগ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার 'কোভিশিল্ড' ও ভারত বায়োটেকের 'কোভ্যাক্সিন'। স্বাভাবিকভাবেই এই দুই টিকার মধ্যে কোনটি নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে রীতিমত ধন্ধের মুখে ভারতীয় নাগরিকদের বড় অংশ।
ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন নিয়ে সংশয়
ব্রিটেনের পর ভারতে খুব সহজে ছাড়পত্র পেয়েছে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড, যদিও সর্বশেষ ট্রায়াল চলার কারণে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন এখনও প্রশ্নের মুখে। এদিকে আগামী একসপ্তাহের মধ্যেই গোটা দেশজুড়ে পুরো মাত্রায় গণটিকাকরণ চালু হতে চলেছে। এমতাবস্থায় শীঘ্রই কোভ্যাক্সিনের শেষ ট্রায়াল সম্পর্কিত সমস্ত তথ্যাদি প্রকাশের কথা জানান আইসিএমআর প্রধান ডঃ বলরাম ভার্গব। অন্যদিকে টিকাকরণের লক্ষ্যে জোরকদমে চলছে কোভিশিল্ড উৎপাদন, জানিয়েছে পুনের এসআইআই।
কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের গঠন কিরূপ?
অক্সফোর্ডের তরফে খবর, শিম্পাঞ্জির শরীরে থাকা অ্যাডিনোভাইরাসের একটি দুর্বলতর প্রকারভেদকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছে কোভিশিল্ড। অন্যদিকে মৃত করোনা ভাইরাসকে হাতিয়ার করেই তৈরি হয়েছে কোভ্যাক্সিন, জানিয়েছে আইসিএমআর। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সূত্রে খবর, ফাইজার বা মডার্নার ভ্যাকসিনের থেকে কোভিশিল্ড-এর সফলতার হার অনেকটাই কম, অন্যদিকে ট্রায়ালের আওতাধীন থাকায় কোভ্যাক্সিনের সাফল্যের হারও অজানা। সবমিলিয়ে দুই ভ্যাকসিনকে নিয়েই যে বেশ চিন্তায় করোনাবিদরা, তা বলাই বাহুল্য।
প্রতিষেধকের ডোজ নিয়ে সংশয়
কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন দুটিই দুইডোজের প্রতিষেধক। যদিও এখনও পর্যন্ত ডিসিজিআই কোভ্যাক্সিনের দুই ডোজের মধ্যে দিনপার্থক্য নির্ধারণ করে দেয়নি। ভারত বায়োটেকের মতে, প্রথম ডোজের ১৪দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। অন্যদিকে কোভিশিল্ডের দিন পার্থক্য সর্বাধিক প্রায় ৬সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। ইতিপূর্বে কোভিশিল্ড-এর ট্রায়ালে ডোজ সংক্রান্ত গলদের জেরে রিপোর্ট-এ বিস্তর ভুল চোখে পড়ে। পরবর্তীতে ট্রায়ালে সেই ভুল সংশোধন করে পুনের এসআইআই। অন্যদিকে দুই ভ্যাকসিনকেই ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণের কথা জানিয়েছেন করোনাবিদরা।
দুই ভ্যাকসিনই নিরাপদ, দাবি সরকারের
কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন, দুই প্রতিষেধককেই সম্পূর্ন নিরাপদ আখ্যা দিয়েছেন ভারতের ডিসিজিআই ভিজি সোমানি। অন্যদিকে সূত্রের খবর, সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ নিখরচায় টিকা দিলেও বেসরকারি হাসপাতালে ডোজ পিছু সর্বাধিক খরচ হতে পারে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে প্রায় ৩০কোটি ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকের টিকাকরণ করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে কেন্দ্র। এক্ষেত্রে কো-উইন পোর্টাল ও 'আরোগ্য সেতু'-কে কাজে লাগছে কেন্দ্র।