চিরাগ নাকি তেজস্বী? রাজ্যজোড়া বেকারত্বের মাঝে কোন যুবনেতার উপরে বেশি ভরসা পরিযায়ীদের?
সদ্য প্রকাশিত ভারতীয় রেলের তথ্যেই দেখা যাচ্ছে বিগত কয়েক মাসে যে সমস্ত রাজ্যগুলি থেকে সব থেকে বেশি সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক পুনরায় ভিন রাজ্য পাড়ি দিয়েছে তাদের মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে বিহার। এদিকে লকডাউনের ঠেলায় নিজ গ্রামে ফিরেও কর্মহীন হয়ে পড়েন লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। অগ্যতা পেটার জ্বালায় সেপ্টেম্বর থেকেই ফের তারা ভিন রাজ্য পাড়ি দিতে শুরু করে। এদিকে পরিযায়ী সঙ্কট নিয়ে শুরু থেকেই বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধীরা। কিম্তু ভোট আসন্ন ভোট প্রসঙ্গে কী ভাবছে এই পরিযায়ী শ্রমিকের দল ?
চিরাগের পক্ষে সমর্থনের ইঙ্গিত
বর্তমানে দিল্লির একটি ইলেকট্রিক-সুইচ ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন আদতে বিহারের পরিযায়ী শ্রমিক বিপিন পাসোয়ান। করোনা সঙ্কটের এই কঠিন পরিস্থিতিতেও সাকূল্য সারামাসে যা আয় হয় তার থেকে মাত্র হাজার খানেক টাকাই এখন বেগুসরাইয়ের বাছোয়ারা গ্রামে পাঠাতে পারছেন বিপিন। আসন্ন ভোট প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে বিপিনের স্পষ্ট বক্তব্য, " অন্যদের কথা শুনে গতবার মোদীর দলকে(পড়ুন বিজেপি) ভোট দিয়েছিলাম। এবারে সুযোগ হলে চিরাগ পাসোয়ানকে দিতাম। জাতের কারণে নয় আমি চাই একজন যুব নেতা রাজ্যে ক্ষমতায় আসুক।"
পরিযায়ীদের সমর্থন কতটা পেতে পারেন লালুপুত্র তেজস্বী ?
অন্যদিকে চিরাগ পাসোয়ানেরই গ্রামের বাসিন্দা ২২ বছরের মুকেশ কুমারের গলায় শোনা গেল অন্য সুর। দিল্লিতে থাকাকালীন সে মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা উপার্জন করতো বলেও জানায়। লকডাউন চলাকালীন সময় এপ্রিল মাসে ২৫০০ টাকা খরচ করেই নিজের গ্রামে ফেরে মুকেশ। ভোট প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলেই প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় তাকে। তবে লালু শিবিরের প্রতি খানিক সুর নরম করে মুকেশ বলে, ""গ্রামে কোন চাকরি নেই। এখানে এখন কল আছে, কিন্তু জল নেই। তবে নির্বাচনী তালিকায় তেজস্বী যাদবের নাম দেখতে পেলে আমি তাকেই সমর্থন করব। আমি তাদের সমস্ত প্রচার, মিটিং, মিছিল সবই মোবাইলে দেখি।"
লকডাউনেই জাতীয় গড়ের প্রায় দ্বিগুণ বেকারত্ব দেখা যায় বিহারে
এদিকে সেন্টার ফর মনিটারিং ইণ্ডিয়ান ইকোনমির সমীক্ষা বলছে মে মাসেই দিল্লি এবং বিরারের বেকারত্বের গড় জাতীয় গড়কেও ছাপিয়ে য়ায়। সেই সময় জাতীয় গড় যেখানে ছিল ২১.৭ শতাংশ সেই সময় বিহার ও দিল্লির ক্ষেত্রে তা ছিল প্রায় দ্বিগুণ। সিএমআইই-র সমীক্ষাই জানাচ্ছে ওই সময় নীতীশের রাজ্যে বেকারত্বের গড় দাঁড়িয়েছিল ৪৬ শতাংশে। দিল্লির ক্ষেত্রে তা দাঁড়ায় ৪২.৩ শতাংশ।
বিহারের ভাগ্য নির্ধারণে কতটা ছাপ ফেলতে পারে পরিযায়ীরা ?
অন্যদিকে নির্বাচনের প্রাক্কালে বিহারের পরিযায়ী সঙ্কট নিয়ে একের পর এক সরকারি তথ্য ঘুম উড়েছে নীতীশ প্রশাসনের। দিল্লির বিহার ভবনের যৌথ শ্রম কমিশনার কার্যালয়ের একাউন্টেন্ট কৌশলেন্দ্র কুমার সিংহ জানাচ্ছেন এপ্রিল-মে মাসে প্রায় ১০ থেকে ১১ টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে ২৫ লক্ষের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক বিহারে ফিরেছেন। যাদের বেশিরভাগই বর্তমানে কর্মহীন হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। এদিকে তাদের সমবেত ক্ষোভ যে ২৮ তারিখ থেকে শুরু হওয়া বিহার বিধানসভা ভোটের ব্যালট বক্সে পড়বে তা বলাই বাহুল্য।
বিজয়ায় শস্ত্র পুজো করে বিজেপি কর্মীদের খোলা চিঠি দিলীপের! ২১ কে পাখির চোখ করে বড় বার্তা