শয্যাশায়ী স্ত্রী–কন্যার গলার নলি কেটে খুন, পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ প্রাক্তন সেনা কর্মীর
শয্যাশায়ী স্ত্রী–কন্যার গলার নলি কেটে খুন, পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ প্রাক্তন সেনা কর্মীর
নৃশংশ খুনের ঘটনা ঘটল মুম্বইয়ের অন্ধেরিতে। ৮৯ বছরের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মী তার ৮১ বছরের স্ত্রী ও ৫৫ বছরের মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ের গলার নলি কেটে দেয়। উভয়ই শয্যাশায়ী ছিলেন। রবিবার সন্ধ্যায় অন্ধেরির (পূর্ব) ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটার পর অভিযুক্ত সেনা কর্মী সোমবার নিজে আত্মসমর্পণ করে মেঘওয়াড়ি পুলিশের কাছে।
অভিযুক্ত পুরুষোত্তম সিং গন্ধক পুলিশকে জানিয়েছেন যে মেয়ে ও স্ত্রীয়ের প্রতি যত্ন নিতে নিতে তিনি অসহ্যকর ১০ বছর কাটিয়েছে। এঁরা উভয়ই শয্যাশায়ী এবং তাঁদের আর কোনওভাবেই তিনি ভুক্তভোগী করতে চায়নি। পুলিশ অন্ধেরির শের–ই–পাঞ্জাব কলোনির প্রেম সন্দেশ সোসাইটিতে গন্ধকের বাড়িতে যায়, ফ্ল্যাটে পুরো শান্ত, ধীরভাবে বসে ছিল অভিযুক্ত সেনা কর্মী। সোমবার সকালে পুলিশ সেখানে গিয়ে শোওয়ার ঘরের রক্তাক্ত বিছানা থেকে গন্ধকের মেয়ে ও স্ত্রীয়ের নিথর দেহ উদ্ধার করে। রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ গন্ধক তার স্ত্রী জসবীর খুর ও কন্যা কমলজিৎ কউরকে হত্যা করার কিছুক্ষণ পর সে তার বড় মেয়ে গুরবিন্দর কউরকে ফোন করে নিজের অপরাধ স্বীকার করে। এরপর ১২ ঘণ্টা পরে উদ্ধার হয় এই দুই দেহ।
ডিসিপি (জোন ১০) মহেশ্বর রেড্ডি এ প্রসঙ্গে বলেন, 'গন্ধক একজন প্রাক্তন সেনা কর্মী। সে রান্নাঘরের ছুরি নিয়ে এসে স্ত্রী ও কন্যার গলার নলি কেটে দেয়। এই ঘটনার পর সে খুব স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করে জানিয়েছে যে সে তাঁর স্ত্রী–কন্যার দৈনিক প্রয়োজনীয়তা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়েছিল।’ শের–ই–পাঞ্জাব কলোনির বাসিন্দা গুরবিন্দর সিং জানিয়েছেন যে তিনি তাঁর বাবার ফোন পেয়েই স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে দ্রুত ওই ফ্ল্যাটে যান, যেখানে তাঁর মা ও বোন রয়েছেন। গুরবিন্দর বলেন, 'কিন্তু আমার বাবা দরজা খুলতে রাজি ছিলেন না, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। আমি চিৎকার করি কিন্তু কেউ সাড়া দেননি। এরপর আমার বাবা আমায় পুলিশকে ডাকতে বলেন এবং জানান যে একমাত্র পুলিশ আসলে তিনি দরজা খুলবেন।’
এরপর গুরবিন্দর ও তাঁর স্বামী মেঘওয়াড়ি পুলিশ থানায় যান এবং পুলিশকে নিয়ে ফিরে আসেন। পুলিশ ঘরে ঢুকতেই দেখেন গন্ধকের মেয়ের দেহ কাঠের বিছানায় রক্তাক্ত চাদরের ওপর রয়েছে এবং স্ত্রী জসবির কউরও একই অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। গন্ধক খুব শান্তভাবে ঘরে বসে ছিল। পুলিশ জানায়, 'গুরবিন্দর তাঁর বাবাকে জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি এই কাজ করলেন। গন্ধক জানায় সে তার স্ত্রী–কন্যার প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে পারছিল না এবং তাদের এই যন্ত্রণার মধ্যেও দেখতে পারছিল না তাই রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তাদের খুন করে গন্ধক।’ গন্ধকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির খুনের ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।